ভারী বর্ষণে দোহার-নবাবগঞ্জের ২০ হাজার হেক্টর কৃষি জমি প্লাবিত

288

মহাসেনের পরবর্তী বৈরি আবহাওয়ায় কারণে আগেভাগেই কেটে আনা ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। অন্যদিকে ধানকাটার লোকের অভাবে উৎপাদিত ধান ঘরে তুলে আনা নিয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছেন তারা। ভারী বর্ষণে পানির নীচে তলিয়ে গেছে আড়িয়াল বিলের সব ধান।
গত সাতদিনের টানা বর্ষণে ঢাকার দোহার-নবাবগঞ্জের কৃষি জমি প্লাবিত হয়ে প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমির ইরি ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত সহস্রাধিক দরিদ্র কৃষকদের মধ্যে আহাজারি শুরু হয়েছে।

শুক্রবার ও শনিবার সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, গত ৭ দিনের টানা বর্ষণে নবাবগঞ্জ উপজেলার আড়িয়ল বিলসহ চুড়াইন ইউনিয়নের কালাইমারা মদনখালী, গোবিন্দপুর বক্সনগর ইউনিয়নের বর্ধনপাড়া, দিঘীরপাড় এলাকাকৈলাইল, মাইলাইল, শোল্লা, গালিমপুর, কিরিঞ্চি, হরিশ্কুল, নলগোড়া, শৈল্লা এবং দোহার উপজেলার কাটাখালী,পল্লীবাজার, জালালচর। আরীয়াল বিলসহ নারীশা চর বিলাশপুর, রাণীপুর, চর মাহমুদপুর, চর পুরুলিয়া, পুরুলিয়াসহ, বিস্তীর্ণ এলাকার প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমির পাকা ইরি ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় সহস্রাধিক কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কৃষকরা জানায়, দমকা হাওয়ায় ধানের শীষ নুয়ে পড়েছে। নুয়ে পড়া ধান ঘরে তোলার জন্য তিন বেলা খাওয়ার সঙ্গে ৫শ টাকা দিয়েও মিলছে না ধান কাটার শ্রমিক। কৃষক পরিবারগুলো আত্মীয়-পরিজন নিয়ে খড়কুটু তুলে আনার চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে, জমি থেকে কেঁটে আনা ধান বৃষ্টিতে ভিজে অঙ্কুরিত হয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

অন্য খবর  নবাবগঞ্জে ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত

পদ্মা কলেজের পিয়ন শামসু মিয়া নিউজ৩৯কে জানান, আমি ৮ মণ ধান তাড়াতাড়ি তুইলা আনছিলাম। কিন্তু তাও শুকাইতে দিলে বৃষ্টিতে ভিজে গেছে আর বাকি সব পানির তলে। তিনি আরও জানান, এবার চাষাবাদের ৬৪ হাজার টাকার পুরাটাই তার শেষ হয়ে গেছে।

গালিমপুর এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ইউনুস, দু:খ বলেন, “এ বিষয়ে সরকার কি ক্ষতিপূরণ দিব। সারা বছর এখন কি খামু?”

আড়িয়াল বিলে নিয়মিত এক দিনমজুর বলেন, “৫ দিন ধরে কাম নাই। নিজের তো জান বলতে কিছু আছে। পানির নীচে ৫শ’ কেন ১ হাজার টাকা দিলেও ধান কাটুম না।”

নবাবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. সিদ্দীকি জানান, এ বছর ১০ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে ধান রোপন করেছে কৃষকরা। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি চিহ্নিত করতে মাঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া আছে। ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদন পেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

আপনার মতামত দিন