৫ মে ২০১৮ তারিখে ঢাকা জেলা ছাত্রলীগ দক্ষিন জরুরি সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বিলুপ্ত ঘোষনা করে ২০১৩-১৪ সেশনে গঠিত দোহার উপজেলা ও দোহার পৌরসভা ছাত্রলীগের কমিটি। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আজ জয়পাড়াতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে দোহার উপজেলা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির নেতৃবৃন্দ। ২০১৩-১৪ সেশনের একই সময়ে জয়পাড়া কলেজ কমিটি গঠিত হলেও তা বাতিল করেনি ঢাকা জেলা দক্ষিণ ছাত্রলীগ।
বিলুপ্তি ঘোষিত কমিটি সহ ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিয়ন কমিটির নেতা-কর্মি ও সদস্যরা সকাল ১১টায় জয়পাড়া কলেজ থেকে বের হয়ে এই বিক্ষোভ মিছিল জয়পাড়া বাজার ঘুরে রতন চত্ত্বর ও থানার মোড় হয়ে দোহার উপজেলা প্রাঙ্গনে এসে শেষ হয়। এই সময় বিভিন্ন বিক্ষোভের স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে মিছিল।
এ সময় তারা শ্লোগান দেন –
“ ছাত্রলীগের মুলনীতি – শিক্ষা শান্তি, প্রগতি / আমরা সবাই ছাত্রলীগ/ নেতা মোদের শেখ মুজিব।“
“আলমগীরের গালে গালে, জুতা মারো তালে তালে।” ,
“চাকরের দালালী, মানি না, মানবো না।“
“দিয়েছি রক্ত, আরো দিব রক্ত, রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়। “
“ছাত্রলীগের মাইর, দুনিয়ার বাইর।“
“মান্নান – মাহবুব/ভাই ভাই/ভয় নাই/ ছাত্রলীগ-রাজপথ ছাড়ে নাই।“
“দালালের রাজনীতি মানি না/মানবো না/ জয় বাংলা/ জয় বংগবন্ধু।“
দোহার উপজেলা আওয়ামীলীগ অফিসের সামনে এক সমাবেশে এ সময় নেতা কর্মিরা বক্তব্য দেন।
এ সময় নারিশা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিব খালাসী বলেন, সালমান এফ রহমান দোহার থানায় শিয়াল কুকুর দিয়ে রাজনীতি শুরু করেছেন। যারা ছাত্রলীগ করে না, যারা আওয়ামীলীগ করে না, তারা আজ রাজনীতি করছে। আজ সালমান এফ রহমান জাতীয় পার্টি দিয়ে দোহারের রাজনীতি শুরু করেছেন, তিনি নাজমুল হুদাকে দিয়ে নির্বাচনে জয়ী হতে চান। হয়তো সামনে দেখা যাবে গোলামের আযমের ছেলেকে দোহারে বসিয়ে দিবেন। আমরা এই ধরনের দালালের কাছ থেকে রাজনীতি চাই না।
জয়পাড়া কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন রিয়াদ বলেন, নতুন কমিটি তৃনমুল থেকে হতে হবে। ফেসবুক দিয়ে কোন কমিটি হবে না। জেলা ছাত্রলীগকে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহবান জানাচ্ছি। অন্যথায় রাজপথ থেকে তাদেরকে প্রতিরোধ করা হবে। আমরা জীবন-যৌবন বিষর্জন দিয়ে ছাত্রলীগ করেছি। আমরা কোন দালালের দেয়া ছাত্রলীগ মেনে নেবো না।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ও সদ্য বিলুপ্ত দোহার উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক রাজীব শরীফ বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কাউন্সিল না দিয়ে কোন কমিটি ভাঙ্গা যায় না। নিজের রক্ত বিষর্জন দিয়ে যে ছাত্রলীগ করেছি তা বৃথা যেতে দিবো না। যতক্ষন শরীরের ধমনীতে রক্ত প্রবাহীত হবে ততক্ষন কোন কুকুর-বিড়াল ছাত্রলীগে প্রবেশ করতে পারবে না। নিজের জীবন দিয়ে হলেও তা প্রতিরোধ করবো। ষড়যন্ত্রকারীদের মনে রাখতে হবে ছাত্রলীগের মাইর, দুনিয়ার বাইর।
তিনি আরো বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ঢাকা জেলা ছাত্রলীগ দক্ষিনের কাছে দোহার উপজেলার জন্য কাউন্সিলের সময় চেয়েছি। চেয়েছি সম্মান জনক বিদায়ের। কিন্তু ঢাকা জেলা ছাত্রলীগ দক্ষিন কখনই আমাদেরকে কাউন্সিলের জন্য কোন সময় দেয় নি।
সদ্য বিলুপ্ত দোহার উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা ছাত্রলীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ। আমরা ছাত্রলীগ থেকে এখন বিদায় নিতে আই। কিন্তু বিদায়টা হতে হবে অবশ্যই গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ও সম্মানজঙ্ক ভাবে। ফেসবুকের মাধ্যমে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চলে না। ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিচ্ছি ঢাকা জেলা ছাত্রলীগ দক্ষিনকে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য। পরবর্তী কার্যক্রম আমরা সিনিয়র নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে জানাবো, আপনারা ১ ঘন্টার নোটিশে আন্দোলন সফল করতে প্রস্তুত থাকবেন। কাউন্সিল দিন, কমিটি গঠন করুন।
এই ব্যাপারে ঢাকা জেলা ছাত্রলীগ দক্ষিনের সভাপতি গিয়াসউদ্দিন সোহাগ নিউজ৩৯কে বলেন, বিবাহিত ও মেয়াদঊত্তীর্ন হওয়ায় কমিটি বাতিল করা হয়েছে। অতি শীঘ্রই নতুন কমিটি ঘোষনা করা হবে।
দোহার উপজেলা ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি হাবিবুর রহমান, সাধারন সম্পাদক রাজীব শরীফ, জয়পাড়া কলেজ ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক আওলাদ হোসেন রিয়াদসহ দোহার উপজেলা, দোহার পৌরসভা ছাত্রলীগ ও জয়পাড়া কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।