ছোটবেলা দাদার পড়ার টেবিলে কালো একটি ফ্রেমে যার ছবি অতি যত্ন সহকারে থাকত, আবেগ ও গভীর ভালবাসা দিয়ে যে ছবিটির দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতেন, তিনি হলেন বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ_মুজিবুর_রহমান। দাদা যখন নবম শ্রেণির ছাত্র তখন তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে নয়াবাড়ি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হন।
নয়াবাড়ি ইউনিয়নের একটি অভিজাত হিন্দু জমিদার পরিবারে বাবু নির্মল রঞ্জন গুহ জন্মগ্রহণ করেন। সেকালে তাদের জমিদারি ছিল এবং রাজনৈতিকভাবে দাদার পরিবার ছিল প্রতিষ্ঠিত। সমাজের একজন রাজনৈতিক ও অভিজাত পরিবারের সন্তান হিসেবে মানুষের সেবা করা, মানুষের সুখে -দুখে পাশে থাকার ইচ্ছাটা দাদার ছোটবেলা থেকেই ছিল।
উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে দাদা ভর্তি হন মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজে। দাদার শৈশব ও কৈশোরের আবেগ ছিল বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। কলেজ জীবনে দাদা ছাত্র রাজনীতিতে আরও সক্রিয় হয়ে ওঠেন। সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের যে কোন সমস্যায় পাশে এসে দাঁড়াতেন, তাদেরকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত করতেন। দাদা দেবেন্দ্র কলেজের ছাত্র থাকা অবস্থায় কলেজের সাধারণ_সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন অত্যান্ত নিষ্ঠার সাথে। পরবর্তী সময়ে দাদা মানিকগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
এরপর দাদা প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ছাত্র রাজনীতির আঁতুড় ঘর মধুর ক্যাণ্টিন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ চত্বর থেকে দাদার ছাত্র রাজনীতির নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মোচিত হয়। দাদা ‘৯০ এর দশকে স্বৈরাচারী এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের নিয়ে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তৎকালীন এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে দাদার ভূমিকা ছিল অনন্য।
ঐ সংকটময় সময়ে দাদা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যকরী সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। পরের কমিটিতে জননেত্রী শেখ হাসিনা দাদাকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যকরী সংসদের সহ সভাপতির দায়িত্ব দেন। নেত্রীর দেওয়া সেই দায়িত্ব দাদা অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে পালন করেন এবং সারা বাংলাদেশে ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করেন। দলের প্রতি আনুগত্য ও নেত্রীর সিদ্ধান্তে সবসময় অবিচল থাকা এই ত্যাগী নেতা দেশরত্ন শেখ হাসিনার রাষ্ট্রদর্শন বাস্তবায়ন করার জন্য যৌবনের সোনাঝরা দিন গুলি ব্যয় করেছেন মিটিং-মিছিলে, রাজপথে।
পরীক্ষিত এই ত্যাগী নেতা ঢাকা জেলা আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন আহবায়ক ছিলেন। পরবর্তীতে জনবান্ধন প্রিয় নেতা সেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি নির্বাচিত হন এবং পরের বার জাতীয় সম্মেলনে সিনিয়র সহ সভাপতির দায়িত্ব পান।
খালেদা-নিজামী জোট সরকারের সময় প্রিয় দাদাকে মিথ্যা মামলায় কারাবরণ করতে হয় এবং অনেক অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করতে হয়। ওয়ান-এলিভেনের সময় যখন আমাদের প্রিয় নেত্রীকে অন্যায়ভাবে আটকে রাখা হয় তখন বাংলাদেশ সেচ্ছাসেবক লীগ নেত্রীর মুক্তির আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। তখন কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাসিম ভাইয়ের নির্দেশে ও নেতৃত্বে প্রিয় নেতা বাবু নির্মল রঞ্জন গুহ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নেত্রীর মুক্তি চেয়ে পোস্টার করেন এবং গভীর রাতে সেই পোস্টার ঢাকা শহরে লাগিয়ে দেন।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক, পরিচ্ছন্ন, সৎ, ত্যাগী ও কর্মীবান্ধব নেতা বাবু নির্মল রঞ্জন গুহকে ১৬ নভেম্বর ২০১৯ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগের তৃতীয় জাতীয় সম্মেলনে আমাদের প্রাণ প্রিয় নেত্রী, দেশরত্ন শেখ হাসিনা সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছেন। দাদাকে সভাপতি নির্বাচিত করার মাধ্যমে দলে ত্যাগ ও আদর্শের প্রতিফলন ঘটেছে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
একজন নিরহংকার, সদা হাস্যোজ্জল ও কর্মীবান্ধব নেতাকে সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে প্রাণপ্রিয় নেত্রী আপনাকে অভিনন্দন।