আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৪০ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। বাকি আসন মহাজোটের শরিকদের মাঝে বণ্টন করা হয়েছে। এদিকে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ পর্যায়ে শরিকদের মধ্যে দু-একটি আসনে পরিবর্তন হতে পারে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার সকালে ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে মহাজোটের শরিক দলের নেতাদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ওবায়দুল কাদের।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের যারা শরিক তারা ইচ্ছে করলে তাদের দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে পারবেন। তবে শরিকদের যেসব আসনে নৌকা প্রতীক দিয়েছি সেসব আসনের প্রার্থীদের চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিলাম।
এর মধ্যে মহাজোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির ৫ আসন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ৩ আসনে, বিকল্পধারা ৩ আসনে, বাংলাদেশ জাসদ ১ আসনে, তরিকত ফেডারেশন ২ আসনে এবং জাতীয় পার্টি-জেপি (মঞ্জু) ২টি আসনের চিঠি দেওয়া হয়েছে। ফলে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টি বাদে অন্য দলের জন্য ১৬টি আসনের চিঠি দেওয়া হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের বড় শরিক জাতীয় পার্টির জন্য ৪২-৪৪টি আসন বরাদ্দ করা হয়েছে।
কাদের বলেন, আমাদের শরিকরা ইচ্ছে করলে নিজেদের প্রতীকে আরও বেশি আসনে নির্বাচন করতে পারবেন। শরিক দলের নিজেদের শক্তিমত্তার পরিচয় জানান দিতে তাদেরও সুযোগ দিয়েছি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আকতার, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রমুখ।
বিকল্পধারার মহাসচিব নিচু স্বরে আরও আসনের বিষয়ে বলতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, মান্নান ভাই আপনি চাইলে কুলা মার্কায় আরও প্রার্থী দিতে পারেন। আমরা তিনটার বেশি দিতে পারব না।
তিনি বলেন, শ্রদ্ধেয় বি চৌধুরী সাহেবের সঙ্গে আমাদের নেত্রী আলাপ করবেন। আমি জানি আপনাদের আরও প্রার্থীর প্রত্যাশা আছে। তবে আমরা নৌকা প্রতীকে এর বেশি দিতে পারব না। আমাদের অন্য শরিকরা সবাই একমত হয়েছেন, আশা করি আপনিও একমত হবেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, আমরা উন্মুক্ত করে দিয়েছি বিকল্পধারা চাইলে কুলা মার্কায় নির্বাচন করবে, জাসদ মশাল মার্কা, তরিকত ফুলের মালা মার্কায় তাদের প্রার্থী দিয়ে নির্বাচন করতে পারবে। তবে আমরা যাদের নৌকা প্রতীক দিয়েছি তাদের চূড়ান্ত তালিকা এটাই।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা দফায় দফায় আলাপ-আলোচনা করে দলের এবং জোটের মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছি। শনিবার আমাদের সভানেত্রীর স্বাক্ষর সম্বলিত তালিকা নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়ে দেব। সেখান থেকে আওয়ামী লীগের কে কোথায় ভোট করছেন তার তালিকা পাওয়া যাবে।
দশম সংসদে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির এমপি ছিল ৩৪ জন, জাতীয় পার্টি (জেপি) দু’জন, ওয়কার্স পার্টির ৬ জন, জাসদের ৫ জন, তরিকত ফেডারেশনের ২ জন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে জাপার প্রার্থী বেড়েছে, কমেছে ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদের।
এদিকে শুক্রবার সকালে ধানমণ্ডিতে দলের সভানেত্রীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ১৭টি আসনে চূড়ান্ত মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের তালিকা দেওয়া হয়।
জানা গেছে ওইসব আসনে একজন করে প্রার্থী রেখে বাকিদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকমান্ড।
চূড়ান্ত মনোনয়ন পেলেন যারা-
১. সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম কিশোরগঞ্জ-১
২. শিরীন শারমিন চৌধুরী রংপুর-৬
৩. মহীউদ্দীন খান আলমগীর চাঁদপুর-১
৪. শফিকুর রহমান চাঁদপুর-৪
৫. আ স ম ফিরোজ পটুয়াখালী-২
৬. একেএম শাহজাহান লক্ষ্মীপুর-৩
৭. নওগাঁ-৫ আসনে নিজাম উদ্দিন জলিল
৮. নড়াইল-১ বিএম কবিরুল হক
৯. বরগুনা-১ আসনে ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু
১০. জামালপুর-১ আবুল কালাম আজাদ
১১. নাটোর-১ শহিদুল ইসলাম বকুল
১২. জামালপুর-৫ মো. মোজাফ্ফর হোসেন
১৩. ঢাকা-৫ আসনে হাবিবুর রহমান মোল্লা
১৪. ঢাকা-৭ হাজী সেলিম
১৫. ঢাকা-১৭ আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক)
১৬. চাঁদপুর-২ নুরুল আমিন
১৭. টাঙ্গাইল-২ ছোট মনির।