অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে.এম.আল-আমীন

1050

দোহার উপজেলার রাইপাড়া গ্রামের মাছ বিক্রেতা সুকুমার দাস। একার আয়ে সংসারের দৈনন্দিন চাহিদার খরচ মিটিয়ে সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ যোগাতে হিমশিম খেতে হয় তাকে। গত তিনমাস আগে মেয়ে সুস্মিতা দাসের এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের টাকা যোগাড় না করতে পেরে শরণাপন্ন হয়েছিলেন দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে.এম. আল-আমীনের নিকট। তখন ইউএনও সুস্মিতার স্কুলের প্রধান শিক্ষককে অনুরোধ করে কিছু টাকা কমিয়ে দিয়েছিলেন এবং কিছু টাকা সুকুমারের হাতে তুলে দিয়েছিলেন মেয়ের ফরম পূরণ সম্পন্ন করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য। আর সুকুমারের সাথে যোগাযোগের জন্য একটি মোবাইল নম্বর রেখে দিয়েছিলেন নিজের মানিব্যাগে।

আকস্মিকভাবে গত ২৮ জানুয়ারি শনিবার রাতে স্থানীয় এক শিক্ষক নজরুল ইসলামের সাথে এসএসসি পরীক্ষার বিষয়ে কথা উঠলে মেয়েটির কথা মনে পড়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার। ঘড়ির কাঁটায় তখন রাত ১০টা। নিজের পকেটের মানিব্যাগের পকেটে সংরক্ষিত করে রাখা মোবাইল নম্বরটি বের করে মেয়েটির বাবা সুকুমারকে ফোন দেন এবং বাড়ির লোকেশন জেনে তাৎক্ষণিকভাবে ওই শিক্ষককে সাথে নিয়ে ছুটে যান সুস্মিতাদের বাড়িতে। বাড়িতে গিয়ে সুস্মিতার পড়ালেখার খোঁজ-খবর ও পরীক্ষার প্রস্তুতি সম্পর্কে জানেন। আসার সময় সুস্মিতার হাতে একটি খাম দিয়ে ইউএনও বলেন, “এটা রাখ মা, এটা তোমার জন্য উপহার। ”

অন্য খবর  নবাবগঞ্জে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে পাঁচ ডাকাত আটক

এসময় অবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন সুস্মিতার পুরো পরিবার। কান্নাজড়িত কণ্ঠে সুকুমার দাস বলেন,  মানুষের কাছে শুনেছিলাম ইউএনও স্যার ভাল মানুষ। তাই উনার কাছে মেয়েকে নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু স্যার যে এত ভাল মানুষ জানা ছিলনা। আজ আমার বাড়িতে না আসলে তাকে পুরোটা চিনতে পারতামনা”।

সুস্মিতা দাস বলেন,  ইউএনও স্যারের কারণে আমি এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারছি। এটা আমি সারাজীবন মনে রাখব। পরীক্ষার চারদিন আগে আমার বাড়িতে এসে স্যার আমার খোঁজ নিলেন আমাকে টাকা উপহার দিলেন এটা আমার ভাল ফলাফলে প্রেরণা যোগাবে। দেশের সব সরকারি কর্মকর্তারা যদি আমাদের স্যারের মতো হতো।

এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জয়পাড়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমার জীবনে আমি কয়েকজন উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে একেবারে কাছ থেকে দেখেছি। কিন্তু নিজের বেতনের টাকা সাধারণ মানুষের পাশে খরচ করেন এমন মানুষ কম দেখেছি। আমার দেখা মতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম, আল-আমীন একজন প্রকৃত জনবান্ধব কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম, আল-আমীন নিউজ ৩৯ কে বলেন, “ প্রশাসনকে জনবান্ধব করতে কাজ করে যাচ্ছি যে কারণে কিছু কাজ বিবেকের তাড়নায় করি। এখানে কিছু পাওয়ার আশা করে বরং আত্মতৃপ্তির জন্যই করি’’।

আপনার মতামত দিন