অসহনীয় মাত্রায় পৌঁছেছে মূল্যস্ফীতির হার। ৯ শতাংশের বেশি উঠেছে এই সূচক। তবে চলতি বছরে এটি ৮ শতাংশে নামিয়ে আনতে চায় সরকার। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, গেল জুন মাসের তুলনায় জুলাই মাসে কিছুটা হলেও কমেছে মূল্যস্ফীতির পারদ। বিশ্লেষকদের ধারণা, বাজার ভিত্তিক করতে হবে সুদের হার। একই সঙ্গে সরবরাহ ব্যবস্থা নিরবচ্ছিন্ন করাও জরুরি।
পণ্যমূল্যের অসহনীয় দামে হিমশিম খাচ্ছে নিদিষ্ট আয়ের বড় সংখ্যক মানুষ। গেলো অর্থবছর জুড়েই ছিল মূল্যস্ফীতির উত্তাপ। গড় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯.২ শতাংশ। আর শুধু জুলাই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯.৭৯ শতাংশ। অর্থাৎ, প্রকৃত দামের চেয়ে ৯ ভাগের বেশি দামে ক্রেতাকে পণ্য কিনতে হচ্ছে। আয় না বাড়লেও ব্যয়ের চাপে নাস্তানাবুদ ভোক্তা। তারা বলেন, মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত সবার জন্যই এ অবস্থা বেশ কঠিন। যে বেতন এখন তারা পাচ্ছেন, তাতে দিনযাপন করা সম্ভব হচ্ছে না।
দামের আগুন থেকে নিস্তার পেতে নানামুখী উদ্যোগ আছে। স্মার্ট সুদ হার ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু কোনো কিছুই কাজে আসছে না। সুদের হার বাজারভিত্তিক করার দাবী উঠলেও তা বাস্তবায়নে নজরদারি নেই।
অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, মূল্যস্ফীতির হার কমানোর জন্য সুদের হার যতটুকু বাড়ানো দরকার ততটুকুই বাড়াতে হবে। এটাই হচ্ছে প্রিন্সিপল। ভিয়েতনামের মূল্যস্ফীতির হার দেখলাম, ৩.৩ শতাংশ। ভারতের মূল্যস্ফীতি কমে এখন চারে চলে এসেছে। চীনে যে ২/৩ শতাংশ ছিল তা ওখানেই আছে। আমরা তবু কেন ১০ শতাংশ, তাও আবার সরকারি হিসাবে? হয়তো বেসরকারি হিসাবে আরও বেশি। এই অবস্থায় আমরা থাকলে তো টাকার অবমূল্যায়ন তো অবশ্যই হবে।
ভারত, শ্রীলংকাসহ আশপাশের অন্যান্য দেশে সহনীয় মাত্রায় পৌঁছেছে মূল্যস্ফীতির হার। কিন্তু বাংলাদেশে কমার হার সামান্য। তবে, পরিকল্পনামন্ত্রীর দাবি, ধীরে হলেও সামনের দিনে কমতে থাকবে মূল্যস্ফীতি। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, সয়াবিন তেলের দাম কমেছিল। চালের দাম বাড়ে নাই। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কমেছে। এইসব বিবেচনায় আমি মনে করি, গত মাসে যেমন ০.২০ শতাংশ কমেছিল, এ মাসে ০.২০/০.৩০ শতাংশ মূল্যস্ফীতি কমলে আমি অবাক হবো না। খুশিই হবো।
তবে, রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হলে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে পরিস্থিতি। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, হিংসা-বিদ্বেষের রাজনীতি ফিরে আসলে মূল্যস্ফীতি ৮/৯ কেন, ১৫/১৬ শতাংশে চলে যেতে পারে।