১১তম তারাবিতে পঠিতব্য আয়াতের বিষয়বস্তু

    364

    আজ ১১তম তারাবিতে সূরা হিজর এর শুরু থেকে সূরা নাহল এর শেষ পর্যন্ত পড়া হবে। পারা হিসেবে আজ পড়া হবে ১৪তম পারা।

    পাঠকদের জন্য আজকের তারাবিতে পঠিত অংশের মূলবিষয়বস্তু তুলে ধরা হল।

    ১৫. সূরা হিজর : (১-৯৯)

    সূরা হিজর। অবতীর্ণ হয়েছে মক্কায়। আয়াত সংখ্যা ৯৯ এবং রুকু সংখ্যা ছয়। আজ পঠিত হবে পুরো সূরা-ই।

    প্রথম রুকু, ১ থেকে ১৫ নম্বর আয়াত। সত্য অস্বীকারকারীদের হাশর কেমন হবে সেই বর্ণনা দিয়ে সূরা শুরু হয়েছে। মক্কার কাফেররা নবীজী (সা.) এর সঙ্গে যে ধরণের আচরণ করছে পূর্ববর্তী নবীদের সঙ্গেও ঠিক এ ধরণের আচরণই করা হয়েছে। তাই হতাশ না হয়ে ধৈর্যের সঙ্গে দাওয়াতি কাজ চালিয়ে যেতে হবে।

    দ্বিতীয় ও তৃতীয় রুকু। ১৬ থেকে ৪৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বান্দাকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন এই বিশ্ব চরাচর ও তার নিজের মাঝে কত নেয়াতমরাজি ছড়িয়ে আছে। অন্তত এর শোকরিয়া আদায় করার জন্য হলেও আল্লাহর পাঠানো সত্য গ্রহণ করা উচিত। আমাদের আদি পিতা হজরত আদম (আ.) এর প্রসঙ্গ আলোচনা করা হয়েছে। আদম (আ.)কে কীভাবে সৃষ্টি করেছেন এবং তার মর্যাদা কত ওপরে তুলে ধরেছেন সে কথাও বলা হয়েছে। ইবলিস কীভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে তাও বলা হয়েছে। উদ্দেশ্য, মানুষ যেন নিজের মর্যাদা বোঝে এবং আল্লাহর দিকে ফিরে আসে।

    চতুর্থ ও পঞ্চম রুকু। ৪৫ থেকে ৭৯ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বান্দার প্রতি ক্ষমাশীল- এ কথা বলে রুকু শুরু করা হয়েছে। পরে হজরত ইবরাহিম (আ.) এর কাছে মেহমান বেশে দুইজন ফেরেশতা এসেছিল- সে ঘটনা বলা হয়েছে। ফেরেশতারা ইবরাহিম নবীকে পুত্র সন্তানের সুসংবাদ দেয়ার পর বলেছে, আমরা লূত (আ.) এর কওমের কাছে যাচ্ছি। তাদেরকে আজাব দিয়ে ধ্বংস করে দিব। তারপর হজরত শোয়াইব (আ.) এর সম্প্রদায়ের ধ্বংসের ঘটনা বলে রুকু শেষ করা হয়েছে।

    অন্য খবর  ভালো মানুষ ও ভালো জাতি গড়তে ছোট থেকেই ধর্মীয় শিক্ষা দিতে হবে: সালমান এফ রহমান এমপি

    ষষ্ঠ তথা শেষ রুকু। ৮০ থেকে ৯৯ নম্বর আয়াত। সামুদ সম্প্রদায়কে ধ্বংসের ঘটনা দিয়ে রুকু শুরু হয়েছে। আমাদের নবীকে উপদেশ দেয়া হয়েছে মক্কার কাফেরদের বিরোধীতা দেখে হতাশ হয়ো না। ‘আমৃত্যু আল্লাহর দাসত্ব করতে থাকো’-বলে সূরা শেষ করা হয়েছে।

    ১৬. সূরা আন-নাহল : (১-১২৮)

    সূরা নাহল। মক্কায় অবতীর্ণ হওয়া এ সূরার আয়াত ১২৮ টি এবং রুকু ১৬টি। পূর্ণ সূরা তেলাওয়াতের মাধ্যমেই শেষ হবে আজকের তারাবি।

    প্রথম রুকু থেকে তৃতীয় রুকু। ১ থেকে ২৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা তার বিভিন্ন নেয়ামতের বর্ণনা দিয়েছেন। মানুষকে বলেছেন, আমার অনুগ্রহ তোমরা যদি গণনা কর তারপরও শেষ হবে না। তাই আল্লাহ ছাড়া আর কারো ইবাদত করো না। তোমাদের উপাস্য মাত্র একজন। তারই দাসত্ব করো।

    চতুর্থ ও পঞ্চম রুকু। ২৬ থেকে ৪০ নম্বর আয়াতে পূর্ববর্তী কাফেরদের দৃষ্টান্ত দিয়ে বলা হয়েছে, তাদের জন্য কঠিন আজাবের ব্যবস্থা রয়েছে। যারা আল্লাহভিরুতার জীবনযাপন করেছে তাদেরকে তাদের আমল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে হবে। তারা সঠিক জবাব দিতে পারবে। ওই জবাবের ভিত্তিতেই তাদেরকে সুখময় জান্নাত দান করা হবে। আর যারা আল্লাহরভিরুতার জীবনযাপন করেনি, তাদের যতই বলা হোক না কেন তারা আল্লাহর রঙে জীবন রাঙাবে না। তাদের জন্য আছে যন্ত্রণাদায়ক আজাব।

    অন্য খবর  ৭ মার্চের ভাষণ দীর্ঘ ২৩ বছরের লাঞ্ছনা-বঞ্চনা ও প্রতিবাদের কণ্ঠস্বর: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

    ষষ্ঠ রুকু, ৪১ থেকে ৪২ নম্বর আয়াত। মোহাজিরদের মর্যাদা বলে রুকু শুরু করা হয়েছে। আর যারা সত্য অস্বীকার করে তাদেরকে সহজ কিছু প্রশ্নের মাধ্যমে ঘুমন্ত বিবেক জাগ্রত করার চেষ্টা করা হয়েছে।

    সপ্তম রুকু, ৫১ থেকে ৬০ নম্বর আয়াত। শিরক থেকে দূরে থাকার নির্দেশ ও যৌক্তিকতা বর্ণনা করা হয়েছে।

    অষ্টম, ৯ম, ১০ম ও ১১তম রুকু। ৬১ থেকে ৮৩ নম্বর আয়াতে আগের ধারাবাহিকতায় শিরক এর অসারতা ও তাওহিদ তথা এক আল্লাহর ওপর ইমান আনার যৌক্তিকতা বর্ণনা করা হয়েছে। এখানে কিছু উদাহরণ দেওয়া হয়েছে, যা নিয়ে খোলা মনে চিন্তা করলে মানুষের বিবেক নাড়া দেবেই। এরপরও যদি কেউ সত্যের প্রতি ইমান না আনে, তাহলে দাওয়াত পৌঁছে দেয়া ছাড়া আর কোন দায়িত্ব নবীর ওপর নেই।

    ১২তম রুকু। ৮৪ থেকে ৮৯ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, এই দুনিয়ায় ওরা ইমান না আনলেও পরকালে তাদের বাঁচার কোন সুযোগ নেই। সে দিন তাদের সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবেই।

    ১৩, ১৪ ও ১৫তম রুকু। ৯০ থেকে ১২৮ নম্বর আয়াতে উম্মতে মুহাম্মাদিকে উদ্দেশ করে বিশেষ বিশেষ নসিহত করা হয়েছে। যাতে পরকালের পাকড়াও থেকে তারা বাঁচতে পারে।

    ১৬তম তথা শেষ রুকুতে বিশ্বাসীদের জাতির পিতা হজরত ইবরাহিম (আ.) এর জীবনাদর্শ তুলে ধরা হয়েছে। ইবরাহিমী ধর্ম ও মোহাম্মাদি ধর্ম এক ও অভিন্ন। তারপরও যারা এর মধ্যে বৈপরীত্য খোঁজে তাদের সঙ্গে আল্লাহর কোন সম্পর্ক নেই।

    আপনার মতামত দিন