শিক্ষকতা থেকে ‘লন্ড্রি ম্যান’

316
শিক্ষকতা থেকে ‘লন্ড্রি ম্যান’

করোনার কবলে পড়ে অনেকের জীবনে এসেছে ছন্দপতন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কেউ কেউ জীবিকার জন্য আঁকড়ে ধরছেন নতুন পথ। তেমনই একজন দোহার উপজেলার মধুপ্রভাতী কিন্ডারগার্টেন স্কুলের ধর্মীয় শিক্ষক আবদুর রহমান। লকডাউনের এই সময়ে তিনি ‘লন্ড্রি ম্যান’ নামে নতুন প্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়েছেন।

গত বছর করোনা মহামারি শুরু হলে আবদুর রহমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় বসে না থেকে কিছু একটা করার চিন্তা তাঁর মাথায় আসে। সেই চিন্তা থেকে তিনি গতবছরের ৮.৯.২০ সাল থেকে চালু করেন লন্ড্রি ম্যান নামে পোশাক ইস্ত্রি করার ব্যবসা। আশে পাশের বাসা থেকে পোশাক এনে ইস্ত্রি করেতে দেন জয়পাড়া এলাকার লোক জন।

আবদুর রহমান নতুন ব্যবসা শুরুর আগে তেমন কোন প্রচারণা চালানি। তরপরও তার দোকানে একের পর এক অর্ডার আসতে থাকে। বাড়তে থাকে তার প্রতি মানুষের আস্থা।

তবে আবদুর রহমান এমন উদ্যোগের শুরুটা সহজ ছিল না। প্রথম আপত্তি আসে পরিবার থেকেই। স্ত্রী আপত্তি তোলেন। কিন্তু আবদুর রহমান ছিলেন অদম্য। তাঁর কাছে কাজের কোনো ছোট–বড় নেই।

আবদুর রহমান বলেন, ‘আমি কোনো কাজকে ছোট করে দেখি না। কাজ তো কাজই। আমার পরিবারের লোকজন লন্ড্রি ব্যবসা নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন। কিন্তু আমি মনে করি এই ব্যবসা একদিন বড় করতে পারলে তাঁরাই গর্ব করবেন। আমি ভালোবাসা দিয়ে কাজটা করে যেতে চাই।’

অন্য খবর  দোহার-নবাবগঞ্জ উপজেলা আমাদের পরিবারের রক্তে মিশে আছেঃ শায়ান এফ রহমান

আবদুর রহমানের লন্ড্রি সেবা পেয়ে খুশি গ্রাহকেরা। স্থানীয় বাসিন্দা কবির নামে একজন বলেন, আবদুর রহমান কাপড় ইস্ত্রি করা খুব সুন্দর। তিনি যত্ন সহকারে খুব ভাল ভাবে কাপড় ইস্ত্রি করে। তাই আমরা তার দোকানে কাপড় ইস্ত্রি করতে দেই।

অন্য আরেক গ্রাহক শাহাবুদ্দিন জানান, আগে আমরা কাপড় ইস্ত্রি করতে জয়পাড়া বাজারে যেতে হত সে জন্য কিছু টা সময়ে প্রয়োজন হত। কিন্তু এখন বাসার পাশে ইস্ত্রি দোকান হওয়াতে যে সময় কম লাগে তেমনি জয়পাড়া ও যেতে হয় না আবার বাসার পাশে হওয়া যখন খুশি তখনই কাপড় ইস্ত্রি করতে দিতে পারি।

আবদুর রহমান জানান গত সাত মাসে তাঁর নিয়মিত গ্রাহকের সংখ্যা ৫০-৬০ জনে দাঁড়িয়েছে। ভালো সাড়া পাচ্ছেন। তাঁর এই উদ্যোগ নিয়ে তিনি বেশ আশাবাদী। তিনি আরো জানান, সরকার ১২ তারিখ থেকে স্কুল খুলে দিবে বলেছে। আমি স্কুলের পাশাপাশি এই লন্ডির দোকানেও চালাবো। তবে তখন আমি এখানে সময় দিব স্কুল শেষে। আমি আমার এই ব্যবসা ধরে রাখবো সে জন্য আমি দোকানে কিছু মুদি মালামাল ও খাতাও রেখেছি বিক্রির জন্য।

অন্য খবর  দোহার পৌরবাসীর কুকুর আতঙ্কে ১ দিন !!

আবদুর রহমান লন্ড্রি ম্যানের দোকান দোহার জয়পাড়া ভোকেশনাল রোডের মোড়ে। প্রতিটি পোশাক ইস্ত্রি করতে নেন সাত থেকে বারো টাকা।

আপনার মতামত দিন