যেসব সম্পদে জাকাত ফরজ

49
যেসব সম্পদে জাকাত ফরজ

 মাওলানা সাখাওয়াত উল্লাহ: সব ধরনের সম্পদে জাকাত ফরজ হয় না। শুধু সোনা-রুপা, টাকা-পয়সা, পালিত পশু (নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী) এবং ব্যবসার পণ্যে জাকাত ফরজ হয়।

সোনা-রুপার অলংকার সব সময় বা কালেভদ্রে ব্যবহৃত হোক কিংবা একেবারেই ব্যবহার না করা হোক, সর্বাবস্থায় তার জাকাত দিতে হবে। (আবু দাউদ শরিফ : ১/২৫৫; নাসায়ি,হাদিস : ২২৫৮)

অলংকার ছাড়া সোনা-রুপার অন্যান্য সামগ্রীর ওপরও জাকাত ফরজ।(মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস : ৭০৬১)

মৌলিক প্রয়োজন থেকে উদ্বৃত্ত টাকা-পয়সা নিসাব পরিমাণ হলে এবং এক বছর স্থায়ী হলে বছর শেষে তার জাকাত আদায় করা ফরজ। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস : ৭০৯১)

ব্যাংক ব্যালান্স, ফিক্সড ডিপোজিট, বন্ড, শেয়ার সার্টিফিকেট ইত্যাদিও নগদ টাকা-পয়সার মতোই। এসবের ওপরও জাকাত ফরজ।

টাকা-পয়সা ব্যবসায় না খাটিয়ে এমনি রেখে দিলেও তাতে জাকাত ফরজ। (আদ্দুররুল মুখতার : ২/২৬৭)

হজের উদ্দেশে কিংবা ঘরবাড়ি নির্মাণ, ছেলেমেয়ের বিয়েশাদি ইত্যাদি প্রয়োজনের জন্য যে অর্থ সঞ্চয় করা হয়, তাতেও জাকাত দিতে হবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা : ১০৩২৫)

দোকানপাটে যা কিছু বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে রাখা থাকে, তা বাণিজ্যিক পণ্য। এর মূল্য নিসাব পরিমাণ হলে জাকাত আদায় করা ফরজ। (সুনানে আবু দাউদ : ১/২১৮)

অন্য খবর  Slot Oyunları Siteleri Türkçe Canlı Casino Slot Oyunları

ব্যবসার নিয়তে কোনো কিছু ক্রয় করলে তা স্থাবর সম্পত্তি হোক যেমন—জমিজমা, ফ্ল্যাট কিংবা অস্থাবর সম্পত্তি যেমন—মুদিসামগ্রী, কাপড়চোপড়, অলংকার, নির্মাণসামগ্রী, গাড়ি, ফার্নিচার, ইলেকট্রনিক সামগ্রী, হার্ডওয়্যার সামগ্রী, বই-পুস্তক ইত্যাদি, তা বাণিজ্যিক পণ্য বলে গণ্য হবে এবং মূল্য নিসাব পরিমাণ হলে জাকাত দিতে হবে।(মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস : ৭১০৩)

যদি সোনা-রুপা, টাকা-পয়সা কিংবা বাণিজ্যিক পণ্যের মধ্যে কোনোটি পৃথকভাবে নিসাব পরিমাণ না থাকে, কিন্তু এসবের একাধিক সামগ্রী এ পরিমাণ আছে, যা একত্র করলে সাড়ে ৫২ তোলা রুপার সমমূল্য বা তার চেয়ে বেশি হয়, তাহলে এ ক্ষেত্রে সব সম্পদ হিসাব করে জাকাত দিতে হবে। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস : ৭০৮১)

ভূমি বা প্লটের জাকাত

যদি ব্যাবসায়িক উদ্দেশ্যে ভূমি বা প্লট ক্রয় করা হয়, তাহলে প্রতিবছর ভূমি বা প্লটের বাজারমূল্য বিবেচনা করে জাকাত দিতে হবে। উদাহরণস্বরূপ—কেউ যদি পাঁচ লাখ টাকায় পাঁচটি প্লট ক্রয় করে। তারপর এক বছরের মাথায় ওই প্লটের বাজারমূল্য সাত লাখ হয়ে যায়, তাহলে তাকে সাত লাখ টাকার জাকাত দিতে হবে।

দোকানের পণ্যের জাকাত

দোকানের ডেকোরেশন, আলমারি, তাক ইত্যাদির মূল্যের ওপর জাকাত ফরজ নয়, বরং সেল বা বিক্রি করার জন্য যেসব পণ্য বিদ্যমান, তার মূল্য যদি নিসাব পরিমাণ হয়, তাহলে তাতে জাকাত  ফরজ হবে। জাকাত হিসাব করার পদ্ধতি হলো—বছরের একটা সময় দিন-তারিখ নির্ধারণ করে দোকানে বিদ্যমান পণ্যের মূল্যের হিসাব করে দেখা গেল, পাঁচ লাখ টাকার পণ্য আছে। অতঃপর ওই বছর অতিবাহিত হওয়ার পর আবার আনুমানিক পণ্যের মূল্য ধরে দেখা গেল, শুরুতে যেই পরিমাণ সম্পদ ছিল, তা নিসাব পরিমাণ। আবার এক বছর অতিবাহিত হওয়ার পর যে পণ্য আছে, তা-ও নিসাব পরিমাণ, তাহলে সমুদয় সম্পদের আড়াই শতাংশ জাকাত দিতে হবে। (তাতারখানিয়া : ৩/১৬৯, হিন্দিয়া : ১/১৮০, দুররুল মুখতার : ৩/১৮২)

আপনার মতামত দিন