প্রতিশ্রুতির বেশি উন্নয়ন করেছি। আমার এলাকায় কোনটা নেই, বলেন -স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল

581

নিজের নির্বাচনি এলাকার জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতির চেয়ে বেশি কাজ করেছেন মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তিনি বলেন, ‘আমি যখন ২০০৮ সালে ঢাকা-১২ আসন থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করি, তখন এলাকায় পানির দাবিতে রাস্তাঘাট বন্ধ করে হাঁড়ি-পাতিল নিয়ে মানুষ আন্দোলন করতো। এখন কিন্তু পানির সেই অভাব আমার এলাকায় নেই। গত দশ বছরে জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতির চেয়ে বেশি কাজ করেছি।’ সোমবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ কার্যালয়ে বসে তিনি এসব কথা বলেন।

বিগত ১০ বছরে নির্বাচনী এলাকার জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতির কতটুকু পূরণ করতে পেরেছেন, জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সব প্রতিশ্রুতি পূরণ করে দিয়েছি। প্রতিশ্রুতির বেশি উন্নয়ন করেছি। আমার এলাকায় কোনটা নেই, সেটা বলুন যে, এখানে এটা নেই।’ আগামীতে এলাকার মানুষের প্রতি কী প্রতিশ্রুতি আছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘উন্নয়নের কী শেষ আছে? আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করবো বলেছিলাম। তখন আমরা এ পর্যায়ে আসবো, তা কি চিন্তা করেছি? আমরা মেধা ও মনন দিয়ে যাই চিন্তা করি, সেটাই আমরা উন্নয়নের জন্য ব্যয় করি।’

আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘আপনার প্রশ্নটা ছিল আমি ১০ বছরে কী করেছি? আমি আমার এলাকার স্কুল কলেজগুলোকে সুন্দর করে দিয়েছি। যেগুলোয় আগে পাঁচ থেকে ছয়শ’ শিক্ষার্থী ছিল, সেগুলোতে এখন তিন হাজার শিক্ষার্থী আছে। যেমন মধুবাগে আছে শেরেবাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজ। সেখানে আমি যখন প্রথম ঢুকেছি, সেখানে তখন ১১০০ শিক্ষার্থী ছিল। এখন তিন হাজার শিক্ষার্থী। আর প্রত্যেকটা স্কুলের নতুন ভবনসহ নতুন যা কিছু করার, সবই করে দিয়েছি। ইস্পাহানী স্কুলে নতুন ভবন হচ্ছে। কনস্ট্রাকশনের কাজ শুরু হয়ে গেছে।’

অন্য খবর  আর্সেনিক আক্রান্তদের চিকিৎসার দাবীতে নবাবগঞ্জে বিক্ষোভ

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি যখন ২০০৮ সালে নির্বাচন করি, তখন এলাকায় পানির দাবিতে রাস্তাঘাট বন্ধ করে হাঁড়ি-পাতিল নিয়ে মানুষ আন্দোলন করতো। এখন কিন্তু সেই পানির অভাব আমার এলাকায় নেই। রাস্তাঘাটের বেহাল ছিল। নতুন নতুন রাস্তা করেছি। সংযোগ রাস্তা করেছি। হাতিরঝিল তো পুরোটাই আমার এলাকায়। এই এলাকা কী একটা বিশ্রী অবস্থায় ছিল! এগুলো নিয়ে এলাকাবাসীকে নিয়ে বসতে হয়েছে। তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করে বোঝাতে হয়েছে। তারা এই জায়গাগুলো ছাড়তে চাইছিল না। কারণ, তারা তো খুব কম দাম পেয়েছে। টেকনিক্যাল কারণেই দাম কম পেয়েছে। এখন তো তিনগুণ দাম। এটার জন্য কান্নাকাটির দৃশ্যটাও আমরা দেখেছি। রাস্তা বন্ধ করার দৃশ্য ছিল। এগুলো বুঝিয়ে শুনিয়ে আজকের হাতিরঝিল করতে হয়েছে। এটা হওয়ায় আরও নতুন নতুন রাস্তা হয়েছে। ব্রিজ হয়েছে। আমার নির্বাচনি এলাকার আগে মগবাজার এলাকা দিয়ে আসতে যেতে একঘণ্টা-দেড় ঘণ্টা সময় লেগে যেতো। এখন পাঁচ-দশ মিনিটের মধ্যে চলে আসতে পারছি।’

শিক্ষাক্ষেত্রেও এলাকায় অনেক উন্নয়ন করেছেন উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীকে বলে আমার এলাকায় টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটি করেছি। এটা আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার আগেই করেছি। এবার শেরেবাংলা আদর্শ মহিলা কলেজকে এক বিঘা জমি দেওয়া হয়েছে। এক হাজার এক টাকায় মহিলা কলেজের নামে এ জমি দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যেদিন সেটা উদ্বোধন করতে গেলেন, সেদিন আটতলা ভবন করে দিয়েছেন। আধুনিক ল্যাবসহ সুন্দর একটা মহিলা কলেজ হয়ে গেছে। মনু মিয়া স্কুল। ছয় দফা আন্দোলনের প্রথম শহীদ যিনি। সেই স্কুলটা বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। সেখানে ওই স্কুলটা আজ জাতীয়করণ হয়ে গেছে। নতুন ভবন হচ্ছে। আবার সেই স্কুল প্রাণ ফিরে পেয়েছে। প্রত্যেকটা স্কুল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যা কিছু দরকার ছিল, সেটা আমরা করে দিয়েছি।’

অন্য খবর  দোহারে পুলিশি বাধায় বিএনপির ইফতার মাহফিল পণ্ড

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমার এলাকায় মসজিদের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। যেসব মসজিদ টিনের ঘর ছিল সেগুলো বিল্ডিং হয়েছে। একতলা যেগুলো ছিল সেগুলো চার-পাঁচতলা হয়ে গেছে। যেগুলোতে ফ্যান ঘুরতো, সেগুলোর সবকটিতে এখন এসি চলে। শাহীনবাগে একটা নতুন মসজিদ আমরা করে দিয়েছি। কাজীপাড়ায় আম্বরশাহ দ্বিতীয় মসজিদ করে দিয়েছি। মগবাজারে জামে মসজিদ হয়েছে। প্রত্যেকটা মসজিদেই যেখানে একশ’ লোক নামাজ পড়তো, সেখানে এখন পাঁচ ছয়শ’ লোক নামাজ আদায় করেন। তেজগাঁও জামে মসজিদ ভেঙে নতুনভাবে করে দেওয়া হয়েছে। রহিম মেটাল জামে মসজিদটাও ভেঙে নতুনভাবে করে দেওয়া হয়েছে। এটাও বিশাল মসজিদ। বায়তুল মোকাররম মসজিদের পরেই সেটা।’ মসজিদ-রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

আপনার মতামত দিন