দেশের মানুষকে পেঁয়াজের বাড়তি দাম আরও কিছুদিন সহ্য করার আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। পেঁয়াজের দাম আবারও বৃদ্ধি পাওয়া নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আর একটু কষ্ট সহ্য করুন। আমরা আশা করছি নভেম্বরের শেষদিকে দেশে চাষ হওয়া পেঁয়াজ বাজারে আসবে। ওই সময় ভারত থেকেও পেঁয়াজ আসবে। এতে দাম কমে যাবে।’
শনিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে রংপুরের পীরগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় যোগদান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
টিপু মুনশি বলেন, ‘আমাদের দেশে পেঁয়াজের মোট চাহিদা ২৬ লাখ টন, উৎপাদিত হয় ২২-২৩ লাখ টন। এরমধ্যে আবার পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আমাদের ৭-৮ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। ভারত থেকেই মূলত আমরা বেশিরভাগ পেঁয়াজ আমদানি করি। কিন্তু এবার ভারত কোনও যোগাযোগ ছাড়াই পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়। এতে আমরা সমস্যায় পড়েছি।’
তিনি দাবি করেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আমি নিজে তাদের (ভারত) বলেছি, আমাদের না জানিয়ে এভাবে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেওয়া আপনাদের ঠিক হয়নি। অন্তত এক মাস আগে বলতে পারতেন বলে আমি তাদের বলেছি। তারা রফতানি বন্ধ করায় আমরা বিপদে পড়েছি। তারা কোনও নোটিশও দেয়নি আমাদের।’
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী সপ্তাহে মিসর থেকে পেঁয়াজের চালান আসবে; মিয়ানমার থেকেও আমরা পেঁয়াজ আমদানি করছি।’
টিপু মুন্সি বলেন, ‘ভারত থেকেও পেঁয়াজ আসবে; ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি। দিওয়ালীর কারণে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী ব্যস্ত থাকবেন আগামী দুইদিন। এরপরও তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি; যাতে পেঁয়াজ আমদানি করা যায়।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘আমাদের দেশের কোনও কোনও ব্যবসায়ী অধিক মুনাফা লাভের আশায় সুযোগ নিচ্ছে।’ এজন্য জনগণকে সচেতন থাকার আহ্বানও জানান তিনি।
সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে বাংলাদেশের জন্য পেঁয়াজের রফতানি মূল্য তিনগুণ করে ভারত। প্রতিবেশী দেশটির বাজারে দাম বাড়ায় বাংলাদেশে পেঁয়াজের রফতানি নিরুৎসাহিত করতে ভারত এ কাজ করেছে বলে হিলি স্থলবন্দরের কয়েকজন আমদানিকারক জানান।
এরপর সেপ্টেম্বরের শেষদিকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের ঘোষণা দেয় ভারত সরকার। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য বিভাগ এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করে। ভারতের অভ্যন্তরীণ চাহিদায় প্রভাব না পড়ার জন্য এই আদেশ জারি করা হয়। আদেশে বলা হয়, পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে ভারতের পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ থাকবে। তবে এ বিষয়ে তখন কিছুই জানতো না বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।