পাঁচ হাজার অতিথি আপ্যায়ন!

303

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার নয়নশ্রী গ্রামে দুই গাছ- বট ও পাকুড়ের অভিনব বিয়ের ১২তম বিবাহবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় এ উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার পাঁচ হাজার লোককে দাওয়াত করে খাওয়ালেন স্থানীয় কমল পাল নামে এক ব্যক্তি। বিবাহবার্ষিকী উপলক্ষে বসেছে ৪ দিনব্যাপী গ্রাম্য মেলা।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিন দেখা যায়, খাওয়া-দাওয়ায় ব্যস্ত লোকজন। স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর বাংলা অগ্রহায়ণ মাসের ১৮ তারিখে বট-পাকুড়ের বিয়েবার্ষিকী উপলক্ষে স্থানীয়রাসহ দোহার , নবাবগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জ উপজেলা থেকে কয়েক হাজার লোক এখানে আসেন। এটি শুধু বট-পাকুড় বিবাহবার্ষিকী নয়, হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানদের মহামিলন মেলা। এবারের মেলায় অবিবাহিত যুবক-যুবতীদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। মেলায় আসা অতিথিদের খিচুিড়-পায়েস দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানের আয়োজক কমল পাল জানান, আমি স্থানীয় রাহেন সাধুর ভক্ত ছিলাম। তিনি মুসলমান ধর্মাবলম্বী ছিলেন। তার আদেশে ৩৮ বছর আগে ইছামতি নদীর পাড়ে একটি বট ও একটি পাকুড় গাছ রোপণ করি। ২০০৬ সালের দিকে বাড়িতে বিয়ের বয়সী চার ছেলে-মেয়ে ছিল কিন্তু তাদের বিয়ে হচ্ছিল না কিছুতেই। এক রাতে আমি স্বপ্নে দেখলাম ওই বট-পাকুড় গাছের বিয়ে দিলে আমার ছেলে-মেয়েদের বিয়ে হবে। ওই বছরের বাংলা সনের ১৮ অগ্রহায়ণ বট-পাকুড়ের বিয়ে দিলাম। বিয়ে দেয়ার পরই আমার ভাগ্য খুলে গেল। ওই বছরই আমার বড় ছেলে বাবুল পালের বিয়ে হয়। পরের বছর বড় মেয়ে কল্যানী পালের। এভাবে সব ছেলে-মেয়ের বিয়ে হয়েছে। সেই থেকে দীর্ঘ ১২ বছর যাবত এ উৎসব পালন করে আসছেন তিনি। স্থানীয় লোকজনও তাকে সাহায্য-সহযোগিতা করছেন

অন্য খবর  নবাবগঞ্জে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

অনুষ্ঠানে আসা মালতী রানী জানান, পরিবারের মঙ্গল কামনায় প্রতি বছর আমি এ অনুষ্ঠানে এসে থাকি। বট-পাকুড়ের জন্য মানতের কাপড়, মিষ্টি, সিঁদুর দিয়ে গেছি। আমরা বিশ্বাস করি এখানে এসে কিছু মানত করলে পাওয়া যায়। মো. ফারুক নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, এখানে ঝাড়ফোঁক করা হয় না। মানত করে যে যা দিয়ে যায়। এ অনুষ্ঠান এলাকায় উৎসবে পরিণত হয়েছে।

রাহুতহাটি গ্রামের হেনা বেগম জানান, গত বছর অসুস্থ ছিলাম। মানত করে গিয়েছিলাম, সুস্থ হলে নতুন কাপড় দিব। তাই এ বছর নতুন কাপড় দিয়ে গেলাম। এবারো একটা মানত করেছি দেখি মনের বাসনা পূরণ হয় কিনা।

নয়নশ্রীর বাসিন্দা সাবেক তাঁতী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, এলাকার সকল ধর্মের লোকজন একত্রিতভাবে এই মেলার আয়োজন করেন। আমরা তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করার চেষ্টা করি।

আপনার মতামত দিন