পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নবাবগঞ্জের দুই তরুনের মৃত্যু 

140
পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নবাবগঞ্জের দুই তরুনের মৃত্যু 

পদ্মা সেতুতে ঘুরতে গিয়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার দুই তরুণের মৃত্যু হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে এলে রাত সাড়ে ১০টার দিকে চিকিৎসক মৃত ঘোঘণা করেন।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন মো. আলমগীর হোসেন (২৫) ও মো. ফজলু (২৫)। তাঁরা ঢাকার নবাবগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। নিহত আলমগীর মোটরসাইকেল মেরামতের কাজ করেন। আর ফজলু বিদেশে থাকেন। এক মাস আগে দেশে আসেন তিনি।

নবাবগঞ্জ উপজেলা সমসাবাদ এলাকার চিনু বেপারীর ছেলে মো. আলমগীর মোটর মেকানিকের কাজ করতেন। আলমগীরের বাবা অন্ধ ও মা অসুস্থ। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম আলমগীরের আয় দিয়েইও চলছিলো তাদের সংসার।  রবিবার বিকেলে হঠাৎ বন্ধুদের সাথে দেখতে যান পদ্মা সেতু। কিন্ত সড়ক দুর্ঘটনায় নিভে যায় তার জীবন প্রদীপ। প্রিয়জনকে হারিয়ে দিশেহারা আলমগীরের পরিবারের সদস্যরা।

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের অপরজন উপজেলা যন্ত্রাইল ইউনিয়নের হরিষকুলের মৃত আবু মিয়ার ছেলে মো. ফজলু। সদ্য বিয়ে করেছিলেন বিদেশফেরত ফজলু, একদিন আগেই কিনেছিলেন মোটরসাইকেল। কে জানতো সেই মোটরসাইকেলই কেড়ে নেবে তার প্রাণ! দীর্ঘদিনের প্রতিক্ষার পর প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধোধনের পরদিনই অর্থাৎ রোববার (২৬ জুন) ভোর থেকে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয় পদ্মা সেতু। সেতু পাড়ি দিতে ৩ মোটরসাইকেলে নবাবগঞ্জ থেকে গিয়েছিলেন ৬ বন্ধু। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, ক্ষণস্থায়ী উচ্ছ্বাস মুহূর্তেই পরিণত হয় ঘোর অন্ধকারে। মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে লাশ হয়ে ফেরেন আলমগীর ও ফজলু দুই বন্ধু। শেষ পর্যন্ত আনন্দ উচ্ছ্বাস পরিণত হলো বিষাদে।

অন্য খবর  নবাবগঞ্জে সুগন্ধি কালিজিরা ধানের বাম্পার ফলন

নিহত ফজলু’র মামাতো ভাই আবদুল ও বোন কহিনুর বেগম জানান, ফজলু ইরাকে ছিলেন। সাড়ে তিন বছর পর রমজান মাসে সে দেশে এলে গত মাসের ২০ তারিখে বিয়ে করেন সে। মার ইচ্ছা অনুযায়ী ঘোড়ার গাড়িতে বিয়ে করেছিল ফজলু। রবিবার কিনে এনেছিলেন নতুন মোটর সাইকেল। সেই মোটর সাইকেল নিয়েই বিকেলে বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে যায় পদ্মা সেতুতে। রাতে টিভিতে ফজলু ও আলমগীরের মৃত্যুর খবর পাই আমরা।

আলমগীর ও ফজলুকে যাঁরা ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এসেছিলেন, তাঁদের একজন জয়দেব রায়। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা ছয় বন্ধু মিলে তিনটি মোটরসাইকেলে পদ্মা সেতু দেখতে গিয়েছিলেন। সেতুর জাজিরা প্রান্ত ঘুরে ফেরার সময় মাওয়া প্রান্তে এসে দুর্ঘটনাটি ঘটে।

জয়দেব বলেন, তিনি যে মোটরসাইকেলে ছিলেন, সেটি সামনে ছিল। তিনি সেতু থেকে নামার পর ফোনে দুই বন্ধুর দুর্ঘটনার শিকারের কথা জানতে পারেন। পরে তাঁদের আর মোটরসাইকেল নিয়ে সেতুর দিকে যেতে দেওয়া হয়নি। তাঁরা হেঁটে কিছু দূর এগোলে দেখেন, আহত দুই বন্ধুকে একটি পিকআপে তুলে নিয়ে আসা হচ্ছে। পরে ওই পিকআপে করেই তাঁরা ঢাকা মেডিকেলে পৌঁছান।

অন্য খবর  নবাবগঞ্জে ইয়াবাসহ যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার, দল থেকে বহিস্কার

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে।

আপনার মতামত দিন