৪০ টি জেলার চেয়েও বেশি নবাবগঞ্জ উপজেলার করোনাভাইরাস আক্রান্ত সংখ্যা

2463

কোন ভাবে করোনা সংক্রামন ঠেকানো যাচ্ছে না ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলায়। ঢাকার একেবারে কাছে অবস্থিত ও প্রবাসী অধ্যুষিত এই নবাবগঞ্জ উপজেলায় নিয়মিত পাল্লা দিয়ে বাড়ছে করোনাভাইরাস আক্রান্ত সংখ্যা। কোন ভাবেই নিয়ন্ত্রনে আনা যাচ্ছে না এই উপজেলার করোনা পরিস্থিতি

বাংলাদেশের অনেক জেলার চেয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। দোহার উপজেলায় আক্রান্ত সংখ্যা ৩১ টি জেলার চেয়ে বেশি, নবাবগঞ্জ উপজেলার করোনাভাইরাস আক্রান্ত সংখ্যা ৪০ টি জেলার চেয়েও বেশি! শুরু থেকে প্রশাসনের যথেষ্ট প্রচেষ্টটা ছিল, কিন্তু জনসাধারণের অসহযোগিতাই  মূল কারণ। অনেকে করোনাভাইরাসকে কোনো গুরুত্বই দিতে চান না। পরীক্ষার জন্য স্যাম্পল দিয়ে নিজেকে আলাদা করার বদলে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করেন, রিপোর্ট আসার আগে কেনো ধরণের সাবধানতা অবলম্বন করছেন না। এই সময়ের মধ্যে তারা ভাইরাস ছড়িয়ে দিচ্ছেন পরিবার ও সমাজে। বান্দুরা-নয়নশ্রী খুব কাছাকাছি যায়গা, এটি হয়ে গেছে নবাবগঞ্জের হটস্পট। এটি হটস্পট হয়ে উঠার পেছনে এই অসচেতনতাই দায়ী।

নিচে চার্টে পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।

করোনা নিয়ন্ত্রনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কাজ করে যাচ্ছে দিনের পর দিন। দায়িত্বে থাকা নবাবগঞ্জ উপজেলার মেডিকেল অফিসার ও করোনা ইউনিটের ফোকাল পার্সন নবাবগঞ্জের সন্তান ডা. হরগোবিন্দ সরকার অনুপ প্রতিদিনই চষে বেড়াচ্ছেন নবাবগঞ্জের সম্ভাব্য করোনা আক্রান্তের বাসায়। তারপরও বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। জুনের ১ তারিখে নবাবগঞ্জে একদিনে সর্বোচ্চ ৯১ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে।

অন্য খবর  দোহারে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণে অভিযান ও মাস্ক বিতরণ: ১৩ জনকে অর্থদন্ড

নবাবগঞ্জে করোনা পরিস্থিতির দিক দিয়ে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে নবাবগঞ্জের বান্দুরা ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নে সর্বোচ্চ ৫২ জন করোনা আক্রান্ত রোগীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মাঝে ঢাকায় মারা গেছেন এই ইউনিয়নের গৌরাঙ্গ বণিক নামে একজন ব্যবসায়ী। বান্দুরার জেলে পাড়ার একই পরিবারের এক যুবক সদস্য বাদে সবাই করোনা আক্রান্ত। সেই যুবকের সাথে পরবর্তীতে যোগাযোগ মানবজমিনের সাংবাদিক রাশিম মোল্লা। তিনি সেই যুবক ও তার পরিবারের সাথে কথা বলেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ, মানসিক শক্তি প্রদান, আর চিকিৎসা পরামর্শ দিয়েছেন।

বান্দুরার পরেই আছে কলাকোপা ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪১ জন। এখন পর্যন্ত কেউ মারা না গেলেও নবাবগঞ্জের অন্যতম করোনা সংক্রামিত ইউনিয়ন কলোকোপা।
সংক্রমনের দিক থেকে ৩য় অবস্থানে আছে নয়নশ্রী ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নে আক্রান্তের সংখ্যা ১১ জন। তারপরের অবস্থান আগলা ইউনিয়নের। আগলাতে করোনায় আক্রান্তের সখ্যা ১০ জন। বাহ্রাতে আক্রান্তের সংখ্যা ৮ জন। যন্ত্রাইলে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ জন।

চুড়াইনে আক্রান্তের সংখ্যা ৬ জন। কিন্তু এরই মাঝে মারা গেছেন করোনা আক্রান্ত এক রোগী। বক্সনগর ও কৈলাইলে আক্রান্তের সংখ্যা ৪ জন করে। গালিমপুরে ৩ জন করোনায় আক্রান্ত। বারুয়াখালিতে ২ জন, শিকারিপাড়া, জয়কৃষ্ণপুর ও শোল্লায় ১ জন করে করোনা আক্রান্ত শনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়া সিরাজদিখানের (খারশুর) এর ১ জন করোনা আক্রান্ত চিহ্নিত হয়েছে নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

অন্য খবর  নবাবগঞ্জে যমুনা বাসের ধাক্কায় নসিমন চালক নিহত
জেলা/উপজেলা আক্রান্ত
নবাবগঞ্জ উপজেলা ১৫২
যশোর ১৪৪
জয়পুরহাট ১৩৫
মানিকগঞ্জ ১৩৪
শরিয়তপুর ১১৯
দিনাজপুর ১১৭
ব্রাহ্মণবাড়ীয়া ১১৬
মাদারিপুর ১১৫
চাঁদপুর ১০৯
নওগাঁ ১০২
দোহার উপজেলা ৯১
নীলফামারি ৯০
চুয়াডাঙ্গা ৮৯
শেরপুর ৮৬
খুলনা ৭৩
বরিশাল ৭০
রাঙামাটি ৬৫
কুড়িগ্রাম ৬৪
ঠাকুরগাঁও ৬১
রাজশাহী ৫৯
চাপাই নবাবগঞ্জ ৫৪
নাটোর ৫৩
টাঙ্গাইল ৫২
কুষ্টিয়া ৫১
ঝিনাইদহ ৪৮
বরগুনা ৪৪
সাতক্ষীরা ৪৩
পঞ্চগড় ৪০
গাইবান্ধা ৪০
পটুয়াখালি ৪০
পাবনা ৩৮
লালমনিরহাট ৩৬
খাগড়াছড়ি ৩৫
ঝালকাঠি ৩০
বান্দরবান ২৯
নড়াইল ২৬
মাগুড়া ২৫
পিরোজপুর ২৪
ভোলা ২৩
সিরাজগঞ্জ ১৯
বাগেরহাট ১৮
মেহেরপুর ১৪

জেলার তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা, ০২ জুন, ২০২০

আপনার মতামত দিন