শরিফ হাসান, মিথুন এইচ জয় ও মোঃ আল-আমিন, news39.net:
দোহার নবাবগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন বাজারে উঠেছে মৌসুমি ফল। চলছে হরদম কেনা-বেচা। এছাড়া এসময়ে কোভিড-১৯সহ বেড়েছে বিভিন্ন অসুখ-বিসুখ। তাই, ফলের চাহিদাও অনেক। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এসব ফলের রয়েছে ভীষণ চাহিদা। এছাড়া, অতিথি আপ্যায়নেও এসব ফল দোহার-নবাবগঞ্জে আদর্শ খাবার। দোহার উপজেলার বিশেষ করে জয়পাড়া বাজারসহ মেঘুলা, নারিশা, মুকসুদপুর, লটাখোলা, কার্তিকপুর এবং বাংলা বাজার এবং নবাবগঞ্জ উপজেলার বান্দুরা, বারুয়াখালী, শিকারীপাড়া, নবাবগঞ্জ বাজার, বাগমারা, কোমরগঞ্জ, গালিম, চুড়াইন সহ প্রায় প্রতিটি বাজারের এসব রসালো ফলের দাম আকাশ্চুম্বী। বিভিন্ন ফলের মধ্যে বিশেষ করে ডাব ,আনারস, আখ, বিলাতিগাব, ডালিম এবং খেজুরের দাম মধ্যবিত্তদের হাতের নাগালের বাহিরে। কোভিড আক্রান্ত রোগীদের স্বজনদের এসব ফল কিনতে হিমশিম খেতে দেখা যায়। এদিকটায় যেন নজর নেজনপ্রশাসনের। তাই বাজার লাগামহীন। আর এই লাগামহীন বাজারে ফলের দামের আগুনে পুড়ছে সাধারণ মানুষ।
রোগীর জন্য ডাব কিনতে আসা জুবায়ের হাসান জানান, আমি আমআর আন্টির জন্য একটা ডাব কিনতে এসেছি। এসে দেখি ডাবের মধ্যে আগুন লেগেছে। আগে যে ডাব ৭০-৯০ টাকায় কিনতাম সে ডাব এখন ১৩০-১৫০ টাকা। দুটি ডাব কিনতে এসেছিলাম, ২টি ডাবের দাম ৩০০ টাকা চাইলো। তাই, একটাই কিনে নিয়ে যাচ্ছি।
এবিষয়ে, জয়পাড়া বাজারে ডাব বিক্রেতা সুমনের (৩৫) কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা গাছে থেকেই ডাব পেরে এনে বাজারে বিক্রি করি। আমরা ডাব বেশি দামে কিনেছি, সেজন্য বেশী দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। তাছাড়া জয়পাড়া বেশ কয়েকটি হাসপাতাল থাকায় ডাবের চাহিদা বেশি। দূর থেকেও ডাব নিয়ে আসতে হয়৷
তিনি আরও বলেন, আগে যে পরিমাণ ডাব গাছ ছিল, এখন সে তুলনায় ডাব গাছ কম। তাই, ডাবের দাম বেশী দিয়ে কিনে আনতে হয়।
অন্যদিকে গরম বেশী হওয়ায়, দোহার-নবাবগঞ্জে বেড়েছে রসালো ফল আনারসের চাহিদা।
বাগমারা বাজারে কথা হয় ফলক্রেতা আল আমিন সাথে। তিনি জানান, বউ অসুস্থ, তাই আনারস কিনতে এসেছি। কিন্তু এখন দেখি যে দাম তা আমাদের হাতের নাগালের বাহিরে। এক জোড়া আনারস দাম চাচ্ছে ২০০ টাকা। রমজান মাসেও এত দাম ছিলনা। এরচেয়ে অন্যকিছু নিয়ে যাই।
এবিষয়ে আনারস বিক্রিতা হানিফ ব্যাপারী বলেন, প্রথম প্রথম দাম একটু বেশি। আর বর্তমানে যে আনারস বাজারে আছে সেই আনারস বড় সাইজের। কিনতে, ভাড়া দিয়ে আনতে যা খরচ হয়, এরচেয়ে নিচে বেচলে তাহলে আর লাভ হয় না৷
এদিকে দোহার-নবাবগঞ্জের আরেকটি মৌসুমি ফল আখ ও গ্যান্ডারীর দামও তুলনামূলক বেশি। জয়পাড়া কলেজ গেটের আখ কিনতে আসা আসিফ জানান, একহালি গ্যান্ডারীর দাম তিনশত টাকা চায়। গ্যান্ডারী খাওনের চেয়ে, পোলাপানরে চিনি দিয়া শরবত খাওয়ায়। এখন মৌসুমে সময় আর এই সময় যদি এত দাম হয়। তাহলে যারা গরিব মানুষ দিন আনে দিন খায়, তারা ক্যামনে খাইবো। কোন কিছুরই কোন সিস্টেম নাই। যার যেমন ইচ্ছ্বা, সেমনে চলতাছে।
আখচাষি ও বিক্রেতা ইউসুফ (৩৫) জানান, গতবছর বন্যার পানিতে আখ ডুবে যায়। এতে, আমাদের অনেক টাকা লোকসান হয়। আর এবছর এমনিতেই আখের চাষ কম হয়েছে। সেজন্যই এখন আখের দাম একটু বেশী।
এই ব্যাপারে, দোহার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফজলে রাব্বি news39.net কে বলেন, খুব শীঘ্রই দোহারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে, ন্যায়সংগত বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া হবে। আর যারা অন্যায্য দামে বিক্রি করছে, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।