ঢাকার দোহারে উপজেলা কেন্দ্রীয় শ্মশান মন্দিরে প্রবেশের মূল সড়ক দখল করে গড়ে উঠা দোকানপাট নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। দোহার পৌরসভা থেকে ভাড়া নিয়ে এখন তারা উপজেলা প্রশাসনের কাছে চিহ্নিত হচ্ছেন অবৈধ দখলদার হিসাবে।
জানা যায়, উপজেলার ঠিক প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত কেন্দ্রীয় শ্মশান মন্দিরে যাবার সড়ক থাকলেও তা ছিল ভাঙাচোরা। হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে সম্প্রতি দোহার পৌরসভা ড্রেনের ব্যবস্থা সহ ২৬ ফুট প্রশস্থ ৩৫০ ফুট দৈর্ঘ্য নতুন একটি সড়ক নির্মাণ করে। যে সড়কটি শ্মশান মন্দির পর্যন্ত গিয়ে শেষ হয়েছে। মন্দিরে প্রবেশ ছাড়াও আশপাশের বাসিন্দারা সড়কটি ব্যবহার করে যাতায়াতের ক্ষেত্রে। সম্প্রতি সড়কটির কাজ শেষ হতে না হতেই তার পাসে দোকান বরাদ্দ দেয় দোহার পৌরসভা। ইতোমধ্যে অন্তত ২০টি দোকান নির্মাণ করা হয়েছে সড়কটির দুই পাশে। দখল করে নেয়া হয়েছে সড়কটির ২৬ ফুটের অন্তত ১৮ ফুট। আর সড়কের বাকিটুকু দখলে রয়েছে দোকানের চেয়ার-টেবিল ও জিনিসপত্রে এবং চা এর দোকান দিয়ে। এককথায় সড়কটির পুরো অংশই ক্রমেই অবৈধ দখলদারের কবলে চলে যাচ্ছে।
দোকানদাররা জানায়, দোহার পৌরসভার কাউন্সিলর আদিল উদ্দিন সিকদার ও আনোয়ার হোসেনের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে দোকানে প্রতি ৮/১০ হাজার করে টাকা দিয়ে তারা দোকান ঘর নির্মাণ করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শ্মশান মন্দির সড়কের দুই পাশে দোকান বসানোর অনুমতি চেয়ে একটি আবেদন দিয়েছে দোহার পৌরসভার মেয়র এর কাছে জমা দেয়া হয়।
সে আবেদনটি গত ৩০ মে পৌরসভার মাসিক সভায় উঠানো হলে সেখানে ২৬ ফুট সড়কের ১৫ ফুট রেখে বাকি ১১ ফুটে ভ্রাম্যমান দোকান ও স্ট্যান্ড করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। জানা যায় ২/৩ জনের মতামতের ভিক্তিতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সরকারি সড়ক দখল করে স্থাপনা বসানো কোন আইন না থাকলেও এমন বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেয়া দোহার পৌরসভা।
দোহার উপজেলা কেন্দ্রীয় শ্মশান মন্দিরের সভাপতি গৌর চন্দ্র কুন্ডু বলেন, উপজেলা কেন্দ্রীয় শ্মশান মন্দিরের যাবার একটিই সড়ক। যে সড়কটি নির্মাণ ছিল আমাদের প্রাণের দাবি। সরকারি সহায়তা দোহার পৌরসভা সড়কটি নির্মাণ করেছে এতে যেমন আমরা খুশি হয়েছিলাম তার থেকে বেশি কষ্ট হচ্ছে সড়কটি দখল করে দোকান তোলার প্রতিযোগিতা দেখে। যেভাবে দোকানপাট উঠছে শ্মশানে মরদেহ নেবার মতো অবস্থা বোধহয় থাকবেনা। তাছাড়া এই মন্দিরে বছরে ৭/৮টি বার্ষিক উৎসব হয় বৃহৎ আকারে। তখন হাজার হাজার মানুষ সমবেত হয়। সড়কটির দুই পাশে তখন গ্রাম্য মেলা বসে এবং এই মেলাকে কেন্দ্র করে রাস্তার দুই পাশে বসে ভ্র্যামমান দোকানপাট। এভাবে দোকানপাট উঠতে থাকলে আমাদের উৎসব করা সম্ভব হবে না। মন্দিরের এ সড়ক দখলমুক্ত করতে আমরা প্রয়োজনে আন্দোলনে করে হলেও আমরা এই রাস্তাটি দখলবাজি থেকে মুক্ত করবো।
ঢাকা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি নির্মল রঞ্জণ গুহ বলেন, উপজেলার কেন্দ্রীয় একটা মন্দিরের সড়ক দখল করে যারা দোকানপাট উঠাচ্ছে তারা সাধারণ মানুষের কাছে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার ষড়যন্ত্র করছে। এটা কোন ভাবেই মেনে নেব না। স্থানীয় প্রশাসনকে বলব এগুলো বন্ধে জরুরী পদক্ষেপ নিন।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত দোহার পৌরসভার কাউন্সিলর আদিল উদ্দিন সিকদার বলেন, সড়কটি হওয়ার আগেও দোকান ছিল এখানে। যাদের দোকান ছিল তাদের পূণঃর্বাসন করা হচ্ছে। তাদের তালিকা পৌরসভায় দেয়া আছে। এখানে দোকানিদের কাছে থেকে শুধু স্ট্যাম্পের টাকা নেয়া হচ্ছে আর কোন টাকা নেয়া হয়নি।
দোহার পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউর রহমান বলেন, পৌরসভা এখনো দোকানদারদের কাছ থেকে কোন টাকা গ্রহণ করেনি। কেউ টাকা নিয়ে থাকলে দায়ভার তাদের। তবে মিটিং-এ সিদ্ধান্ত হয়েছে ২৬ ফুট সড়কের মধ্যে ১৫ ফুট খালি রেখে ভ্রাম্যমান দোকান বা স্ট্যান্ড দেয়ার বিষয়ে।
দোহার পৌর মেয়র আলহাজ্ব আব্দুর রহিম মিয়া বলেন, দোকান বসানোর জন্য আমাদের কাছে একটি আবেদন জমা পড়েছে। আমরা মিটিং এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি কিন্তু এখনো কাউকে দোকান উঠানোর অনুমতি দেইনি। অনুমতি ছাড়া দোকান কিভাবে উঠল তা আমাদের জানা নেই।
দোহার উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) সালমা খাতুন নিউজ৩৯ কে বলেন, সড়কটি সরকারি জমির উপর। এখানে দোকান বসানোর অনুমতি দেয়ার বৈধতা পৌরসভার নেই। আমি বিষয়টি জেনেছি। দ্রুত এসব অবৈধ দোকানপাট উচ্ছে করা হবে এবং আমি তাদেরকে ৩ দিন সময় দিয়ে এসেছি দোকান সরানোর জন্য তখন তাকে জিগাসা করা হলে যে তারা যুদি না দোকান সরায় তকন আপনাদের কি করবেন তখন তিনি বলেন যে আমরা দরকার পরলে বোল্ড়জার দিয়ে ঔ দোকান ভেঙ্গে দিব।
এবেপারে উপজেলা নির্রবাহী অফিসারকে জিগাসা করা হলে তিনিও নিউজ৩৯ কে একই কথা বলে এবং তিনি আরো বলেন যে আমি শুনেছি যে পৌরসভা আর কিছু জায়গা দখল করে ভাড়া দিচ্ছে এবং জয়পাড়া বাজেরের ভিতরেও নাকি তারা বিল্ড়িং উঠিয়ে অবৈধ ভাবে জায়গা দখল করে রেখেছে আমি এই সবগুলো অবৈধ দখল উচ্ছেদ করব।