দেশে বাড়ছে নীরব ঘাটক রাসেল ভাইপারের সংখ্যা

55
দেশে বাড়ছে নীরব ঘাটক রাসেল ভাইপারের সংখ্যা

বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় নানা রকম বিষাক্ত সাপের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। রাসেল ভাইপারের বাংলা নাম চন্দ্রবোড়া বা উলুবোড়া। বাংলাদেশে অল্প যে কয়েকটি সাপ অত্যন্ত বিষধর, তার মধ্যে এটি একটি। অন্যান্য সাপ মানুষ দেখে দূরে সরে থাকলেও, রাসেল ভাইপার সাপ উল্টো অতর্কিতে এসে মানুষকে আক্রমণ করে। ফসলের মাঠে, ঝোপে-ঝাড়ে যারা কাজ করতে যাচ্ছেন, তাদের অনেকের মৃত্যুর খবরও আসছে। অত্যন্ত বিষধর প্রজাতির এই সাপ বাংলাদেশ থেকে বহু আগেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে বলে মনে করা হলেও, সাম্প্রতিক সময়ে এর অবাধ বিচরণ ভাবিয়ে তুলছে বিশেষজ্ঞদের। সবচেয়ে বিপজ্জনক ভারত থেকে আসা চন্দ্রবোড়া বা রাসেল ভাইপার সাপ।

সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন জেলায় ভয়ঙ্কর এই সাপের উপদ্রব বেড়েছে উদ্বেগজনকহারে। রাসেল ভাইপার নামক বিষধর সাপের আক্রমণে আতঙ্কে দিন পার করছেন জনসাধারণ। বিশেষ করে পদ্মা তীরবর্তী এলাকায় ঢাকা, মাওয়া, ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, কুষ্টিয়া, পাবনার রূপপুর, মুন্সীগঞ্জের লৌহজং, মাদারীপুরের শিবচর, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ সহ চরাঞ্চলের মানুষ এই সাপের ছোবলে একাধিক মানুষ মারা যাচ্ছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতি বছর অন্তত ৫ লাখ ৮০ হাজার মানুষ সাপের কামড়ের শিকার হন এবং এদের মধ্যে ছয় হাজার মানুষ মারা যান।

অন্য খবর  আজ থেকে শুরু হচ্ছে হজের ফিরতি ফ্লাইট

নিম্নবর্তী কোনও পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করবেন না: কামড়ের স্থান থেকে চুষে বিষ বের করে আনার চেষ্টা করা। কামড়ের স্থান আরও কেটে বা সেখান থেকে রক্তক্ষরণ করে বিষ বের করে আনার চেষ্টা করা। বরফ, তাপ বা কোনও ধরনের রাসায়নিক কামড়ের স্থানে প্রয়োগ করা। আক্রান্ত ব্যক্তিকে একা ফেলে যাওয়া। কামড়ের স্থানের গিঁটের কাছে শক্ত করে বাঁধা। এর ফলে বিষ ছড়ানো বন্ধ হবে না এবং আক্রান্ত ব্যক্তি পঙ্গুও হতে পারেন।

রাসেল সাপের কামড়ে কেউ আক্রান্ত হলে করণীয় কী?

যেকোনো সাপে কাটলে ওঝার কাছে যাওয়া যাবে না। কারণ ওঝারা বিষ নামাতে পারেন না। আবারো বলছি ‘ওঝারা বিষ নামাতে পারেন না’। রাসেল ভাইপার শতকরা ৯৯ ভাগ কামড়েই এরা বিষ প্রয়োগ করে। তাই কবিরাজের কাছে না গিয়ে ১০০ মিনিটের মধ্যে অ্যান্টিভেনম দিতে হবে। সাপে কামড়ানোর পরবর্তী ১০০ মিনিট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ের মধ্যে অ্যান্টিভেনম পুশ করলে বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা ৯৯%। রাসেল ভাইপারের বিষে আক্রান্ত ব‍্যক্তির কামড় খাওয়া হাত বা পা ফুলে ওঠে। তাই হাত-পায়ে আংটি, বালা বা ব্রেসলেট জাতীয় কিছু থাকলে সাথে সাথে খুলে দিতে হবে। নাহলে ফোলা হাত থেকে আংটি-চুড়ি-ব্রেসলেট খোলা সম্ভব হবে না। রাসেল ভাইপারসহ ভাইপার জাতীয় সাপ হেমোটক্সিন বিষধারী যা রক্তের উপর প্রভাব ফেলে। রক্ত জমাট বাঁধতে না পেরে অনবরত ক্ষরিত হয়৷ তাই এ জাতীয় সাপের ছোবলে একদমই বাঁধন দেওয়া যাবে না। নইলে পচন ধরা আরও সহজ হয়ে যাবে ৷

আপনার মতামত দিন