“করোনা ভাইরাস” বর্তমান সময়ে সবচেয়ে ভয়ংকর এক দূর্যোগের নাম। তবে এটি মানবসৃষ্ট দূর্যোগ নাকি প্রাকৃতিক দুর্যোগ এ নিয়ে রয়েছে বহুমত। “করোনা মহামারী” কোভিড-১৯ নামক এক রোগ বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে পড়ায় এই বৈশ্বিক মহামারীর সৃষ্টি হয়েছে। ধারনা করা হয়, পূর্বে ব্যাধিজনিত যত মহামারী এসেছে তারমধ্যে করোনা মহামারী সবচেয়ে ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। পুরো বিশ্বের অর্থনৈতিক আর সামাজিক অবস্থাকে গ্রাস করে রেখেছে এই মহামারী।
গেলো বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুইপ প্রদেশের উহান নগরীতে সর্বপ্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। আর দেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হয় চলতি বছরের ৮ই মার্চ রাজধানীর মিরপুরের টোলারবাগ এলাকায়। প্রথম শনাক্ত হওয়ার তিন মাস পেরিয়ে গেলেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি করোনা পরিস্থিতি যেখানে করোনা উ্ৎপত্তিস্থল চীন সহ কানাডা, ইতালি, ফ্রান্স আরো বেশ কয়েকদেশ এতটা সময়ের মধ্যে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পেরেছে এই মহামারী কে।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, করোনা ভাইরাস রোগ সংক্রামিত শীর্ষ ১৯ দেশের তালিকায় প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ, আক্রান্ত শনাক্তের ৯০ তম দিনে এঘটনা ঘটেছে।
এছাড়াও জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী কোভিড-১৯ রোগী শনাক্তের তালিকায় শীর্ষ ২৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৯ তম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় ৩য়।
একপক্ষ সরকারকে সবসময়ই দোষী করবে, আর আমরা যেন ধোঁয়া তুলসীপাতা! অসচেতনতাই করোনা বিস্তারের অন্যতম কারণ। রাজধানী থেকে কয়েক কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত নবাবগঞ্জ ও দোহার উপজেলা যা মূলত ব্যাবসায়ী আর প্রবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল। তাই করোনার প্রাদুর্ভাবে অন্যান্য উপজেলা গুলোর মধ্যে এ দুই উপজেলায় ক্ষতির পরিমাণ বেশি আশঙ্কা করা হয়। নবাবগঞ্জ উপজেলায় প্রথম করোনা শনাক্ত হয় মার্চের ৩১ তারিখে, এর পরেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকা লকডাউন করে দেয়া হয় কিন্তু তা কেবলই সামরিক ও বেসামরিক বাহিনীর উপস্থিতিতে। সাধারণ জনগণের মধ্যে করোনা নিয়ে একটা গা ছাড়া ভাব সেই শুরু থেকেই। দিব্বি ঘুরে বেড়িয়েছে হাটে বাজারে, দূরত্ব বজায় রাখে নি সামাজিক যোগাযোগে। যার ফলস্বরূপ এই দুই অঞ্চলে আক্রান্তের সংখ্যা এখন তিন শতাধিক, করোনা সংক্রামনের ঝুঁকিতে আছে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে করোনা ভাইরাস নির্মূল করা হয়তো প্রায় অসম্ভব, কিন্তু তাই বলে তো গাঁ ছেড়ে দিয়ে করোনার বিরুদ্ধে লড়ার মনোভাব ছেড়ে দিলে চলবে না। সকল স্বাস্থবিধি মেনে সচেতনতার সাথে আমাদের লড়ে যেতে হবে এই মহামারীর বিরুদ্ধে।
সাকুরা ইসলাম,
শিক্ষার্থী (৩য় বর্ষ),
ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ,
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
বাহ্রা, নবাবগঞ্জ, ঢাকা।