নামেই ল্যান্ডিং স্টেশন। যথাযথ কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় রাজধানী ঢাকার চারদিকে বৃত্তাকার নৌরুটের ১৪টি ল্যান্ডিং স্টেশনের মধ্যে ১০টি অবৈধ দখলে। অন্য চারটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অবৈধ দখলে থাকা ১০টি বিভিন্ন কাজে ভাড়া দিয়ে একটি চক্র প্রতিমাসে হাতিয়ে নিচ্ছে কয়েক লাখ টাকা। চক্রটি আবার কোনোটিতে রেস্তোরাঁ, শুটিং স্পট ও পিকনিক জোন হিসেবে ভাড়া দিয়ে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে রাজধানীর যানজট কমাতে নৌরুটটি তেমন ভূমিকা রাখতে পারেনি। এ ছাড়া শিন্নীরটেক, বছিলা, আমিনবাজার, নবাবগঞ্জ ল্যান্ডিং স্টেশনও ব্যবহারের অনুপযোগী। রক্ষণাবেক্ষণ না করায় বছিলা ঘাটটি ভেঙে গেছে।
নবাবগঞ্জের নৌরুটের পন্টুনসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নেই। আমিনবাজার ঘাটের ভবনটিকে কর্মচারীদের থাকার ঘর হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আর শিন্নীরটেক ল্যান্ডিং স্টেশন সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে চলে যায় মাদক সেবী ও ব্যবসায়ীদের দখলে।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, নৌপথ ব্যবহার করে যাতে রাজধানীর সর্বত্র সহজেই পণ্য ও যাত্রী পরিবহন করা যায়, সে উদ্দেশে এ প্রকল্পটি বিগত ২০০০ সালের তৎকালীন সরকার হাতে নিয়েছিল। কিন্তু এসব ল্যান্ডিং স্টেশন (নৌঘাট) ব্যবহার করে পণ্য পরিবহন জোড়ালোভাবে শুরু করা যায়নি। আশুলিয়া সেতুর উচ্চতা কম হওয়ায় পণ্যবাহী কার্গো চলাচল সম্ভব হচ্ছে না। আর গাবতলী থেকে সদরঘাট পর্যন্ত যাত্রী পরিবহনের ওয়াটার বাস সার্ভিসের সেবাটি নামে মাত্র চালু রয়েছে। এভাবেই প্রকল্পটি এখন ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম। সরেজমিন নৌঘাট পরিদর্শনে গিয়ে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। আবার পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, মূল্যায়ন ও পরিবীক্ষণ বিভাগের (আইএমইডি) সমাপ্ত প্রকল্পের প্রভাব মূল্যায়ন প্রতিবেদনের খসড়ায় বিভিন্ন অসংগতির কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এ প্রকল্পটি শুরু করে ২০০০ সালে। শেষ হয় ২০১৩ সালের জুন মাসে। শিগগিরই প্রকল্পটির প্রভাব মূল্যায়নের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করবে আইএমইডি। আইএমইডির সচিব শহীদ উল্লাহ খন্দকার বলেন, প্রকল্পটি শেষ হওয়ার পর জনগণের কতটা কাজে লাগছে, তা দেখতেই সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়েছে। কোটি কোটি টাকা খরচ করা হলেও তা জনগণের তেমন কাজে লাগছে না। এতে রাষ্ট্রের অর্থের অপচয় হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।