একসময় পুরো বাংলাদেশই ছিল বনে ভরা, ঢাকার দক্ষিণাঞ্চলও তাই, এখানে জনবসতি বাড়তে বাড়তে বন প্রায় নিঃশেষ হয়ে গেছে, হারিয়ে গেছে বন্যপ্রাণীরা। পরিচিত, মানুষের আশেপাশে থাকে এমন প্রাণীদেরও আর তেমন একটা দেখা যায় না। কিন্তু বিস্ময়কর ভাবে এখনো নবাবগঞ্জের চুড়াইন নামে এক জনপূর্ণ গ্রামে টিকে আছে কিছু বানর।
এক সময় এই উপজেলারই সুলতানপুরে বানরদের রাজত্ব ছিল, এখনো তাদের আবাস আছে কিনা সে খোঁজ নেয়া হয় নি। চলুন দেখে নিই চুড়াইনের বানরা কেমন আছে।
চুড়াইন বাজারের সেতুটি পাড় হয়ে পূর্ব দিকে কিছুটা এগিয়ে গেলেই দেখা মিলবে বানরদের। মানুষের বাড়ীর চালে বা ছাদে, বাড়ীর পাশের গাছে, ঝোপে। তবে প্রথমেই হুট করে দেখা যাবে না। গাছে লুকিয়ে থাকে, প্রয়োজনে নেমে আসে, খাবর সংগ্রহ করে। বহু আগে একসময় হয়তো এখানে জনবসতি ছিল না, জঙ্গলাকীর্ণ এই যায়গাটি বানরদের অভয়ারণ্য ছিল, দিনে জনবসিত গড়ে উঠে, বন-জঙ্গল কমে আসে। কিন্তু বানররা হয়তো সরে যাওয়ার সুযোগ পায় নি। মানুষের সাথে সহবস্থান গড়ে নিয়েছে।
Monkies of Churain
1 of 8
গাছে উঠে আখ খাচ্ছে একটি বানর।
মানুষের কাছ থেকে সংগ্রহ করা খাবার খেয়ে বেঁচে আছে ওরা।
ফেলে দেয়া উচ্ছিষ্ট থেকে খাবার খুঁজছে একটি বানর।
মা বানর আগলে রেখেছে সন্তানকে।
অন্যান্য প্রাণীদের সাথেও রয়েছে বোঝাপড়া।
এলাকার কেউ রাস্তার উপর বানরদের খাবার দেয় না, দিলে রাস্তায় চলে আসে তাই। অনেক দর্শনার্থী বানরদের কাছে আনার জন্য কলা, রুটি দেয়। আশেপাশের বাড়ীর মানুষজন বানরদের উৎপাতে যথেষ্টি বিরক্ত।
প্রকৃতিধ্বংসী মানুষের সমাজে কতদিন টিকে থাকতে পারবে এই বানরেরা? উত্তরটা সহজ, খুব বেশি দিন নয়। কিন্তু এদের টিকিয়ে রাখা প্রয়োজন আমাদের নিজেদের স্বার্থেই। মনে রাখতে হবে আমরা মানুষরাই শুধু এই পৃথীবির নাগরিক নই। যেদিন পৃথিবীর সব গাছ কাটা হয়ে যাবে, সব নদী শুকিয়ে যাবে, সব মাছ ধরা হয়ে যাবে সেদিন আমরা জানব টাকা চিবিয়ে খাওয়া যায় না।