বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন প্রত্যাহার করে নেয়ার পর অনেকটাই অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে ১৬ কোটি বাঙালির বহুল আকাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতু প্রকল্প। এ অবস্থায় সরকার প্রথমে বিকল্প বৈদেশিক ঋণের জন্য চেষ্টা করে। ভারত, চীন, রাশিয়া, সৌদি আরব, দুবাইসহ অনেকে আগ্রহ দেখালেও তাদের শর্ত গ্রহণযোগ্য ছিল না। শেষ পর্যন্ত নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
স্বপ্নের সেই সেতুর কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রমত্তা পদ্মায় যেন মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে দুরন্ত এক বাংলাদেশ। আর তাই দেখে আবেগে আপ্লুত বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
গত ১৫ আগস্ট (বুধবার) জাতীয় শোক দিবসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা জানাতে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যান শেখ হাসিনা। ফেরার পথে হেলিকপ্টার থেকে পদ্মা সেতুর কাজের অগ্রগতি দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি।
এই সময়ে তোলা প্রধানমন্ত্রীর একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন তার উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন।
তিনি ফেসবুকের ওই পোস্টে লিখেছেন- ‘গর্বিত বাঙালির বিজয়ের দুই প্রতিচ্ছবি। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ও পদ্মা সেতু। এই পদ্মা সেতু শুধু রড সিমেন্টে গড়া কোনো সেতু নয়। বিশ্বমোড়লদের দিকে ছুড়ে দেয়া সততার একটি চ্যালেঞ্জের বাস্তবায়ন। ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে পদ্মার বুক চিরে জেগে উঠা বাঙালির আত্মবিশ্বাসের এক সাহসী উচ্চারণ।’
আশরাফুল আলম আরও লিখেছেন- ‘এই চ্যালেঞ্জ শুধু বঙ্গবন্ধুকন্যাই নিতে পারেন। এই সাহস সততা এবং আত্মবিশ্বাসের। শেখ হাসিনা নিজেকে প্রমাণ করেছেন। তিনি স্বপ্ন দেখেন, স্বপ্ন দেখান এবং এর বাস্তবায়ন করেন। এখন আপনার আমার প্রমাণ করার পালা…’
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১০ জুলাই মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু নির্দেশ দেন। এরপর ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর মূল সেতুর কার্যক্রম শুরু করা হয় নিজেদের অর্থায়নেই। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সেতুর জাজিরা প্রান্তের ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিয়ারে পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যানটি বসানো হয়।
চলতি বছরের ২৮ জানুযারি ৩৮ ও ৩৯ নম্বর পিয়ারে দ্বিতীয় এবং ১১ মার্চ ৩৯ ও ৪০ নম্বর পিয়ারের ওপর তৃতীয় স্প্যান স্থাপন করা হয়। ১৩ মে ৪০ ও ৪১ নম্বর খুঁটির ওপর চতুর্থ স্প্যান বসানো হয়। সর্বশেষ ২৯ জুন পদ্মা সেতুর পঞ্চম স্প্যান বসায় ৬ দশমিক ১৫ কিমি দৈর্ঘ্যের এই পদ্মা সেতুর ৭৫০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছে।