ঢাকার দোহার উপজেলায় কুসুমহাটি ইউনিয়নের চরকুশাই গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে একটি খামার বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এই ঘটনা ঘটে। কুসুমহাটি ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আজহারুল ইসলামে খামার বাড়িতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ রাসেল নামে একজনকে আটক করেছে। রাসেল স্থানীয় শেখ জব্বারের ছেলে।
খামার বাড়ির মালিক কুসুমহাটি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আজহারুল ইসলামের অভিযোগ করে বলেন, এই জমিটি আমি মূল মালিক কদম আলী ও মদন আলীর কাছ থেকে পাওয়ার নিয়েছি এবং কোর্ট আমাকে জমি দখলে যেতে অনুমতি দিয়েছে। অথচ মিলন গং এই জমির মালিক দাবী করে আমাকে সেখান থেকে সরে যাওয়ার জন্য বারবার হুমকি দিয়ে আসছে। সেই বিরোধের জেরে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে মিলন ২০/২৫ জন দুর্র্বৃত্তদের নিয়ে দেশীয় অস্ত্র, রড ও চাপাতিসহ তার মালিকানাধিন মদিনা ডেইরি ফার্মে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এসময় ফার্মের তত্ত্বাবধায়ক বাবুল হোসেন হামলার শিকার হন। আহত বাবুল হোসেনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এবিষয়ে কদম আলী জানান, আমি মিলন গংদের কাছে অন্য জমি বিক্রি করেছি তারা যে অংশ দাবী করছে এই জমি আমি আজাহারের নামে পাওয়ার দিয়েছি। যার সমস্ত দালিল আমার কাছে আছে।
মিলন ও তার মা জহুরা খাতুন অভিযাগ অস্বীকার করে বলেন, ১৯৭৪ সালে আমরা এই জমি কদম আলীর কাছ থেকে কিনে নিয়েছি। এখন তারা এই জমির মালিকানা দাবী করছে। আর ঘরে হামলার বিষয়ে আমরা কিছুই জানিনা। তারা নিজেরাই এই ঘটনা ঘটিয়ে আমাদেরকে ফাঁসানোর চেস্টা করছে।
দোহার থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এঘটনায় শুক্রবার রাতে রাসেল নামে এক আসামীকে আটক করে আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে।
এইদিকে এই হামলার ঘটনাকে নাটক হিসাবে উল্লেখ করেছে এলাকাবাসী। এই ঘটনায় হামলার শিকার কুসুমহাটি ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আজাহার আলী বেপারীর বিচারের দাবিতে ঝাড়ু মিছিল করে এলাকাবাসী।
রবিবার বিকেলে মিছিলটি উপজেলার রতন চত্বর থেকে বের হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা পরিষদে এসে শেষ হয়। মিছিলে শত শত নারীরা ঝাড়ু নিয়ে অংশ গ্রহণ করেন। তারা ইউপি সদস্য আজাহার ও তার ছেলে আসিফের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে বিক্ষোভকারীরা। পরে দোহার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো.আলমগীর হোসেনের বরাবর একটি স্বারকলিপি প্রদান করেন তারা।
বিক্ষোভকারীরা জানান, আজাহার মেম্বার পূর্বে বিএনপি করতো অথচ এখন সে আওয়ামীলীগে এসে সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার করছে, দিচ্ছে মিথ্যা মামলা। আজাহার মেম্বার ও তার ছেলে আসিফের অত্যাচারে অতিষ্ট এলাকাবাসী। তাদের অত্যাচার থেকে রেহাই পেতে বাধ্য হয়ে তারা উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন।
কুসুমহাটি ইউনিয়নের ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ড মহিলা সদস্য হিমুল বেগম জানান, আজাহারের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ট। আমার নিজের জমি নিয়েও আজাহার আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। তার কাছে কেউই নিরাপদ না, তাই আজ আমরা রাস্তায় নেমেছি।
উপস্থিত কয়েকজন নারী অভিযোগ করেন, আজাহার মেম্বার ও তার ছেলে ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে সাধারণ মানুষের জমি দখল করছে। কেউ বাঁধা দিলে তার নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে আজাহার মেম্বার।