ইছামতিতে নাব্যতা সংকট; দ্রুত খননের দাবি

296

কাজী সোহেল♦ নদীর নাম ইছামতি। একসময় মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলা থেকে ঢাকার নবাবগঞ্জ হয়ে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান পর্যন্ত নদীতে লঞ্চ চলতো। এখন নৌকাও চলতে পারে না। কোথাও একদম পানির দেখা নেই, সামান্য কিছুর অস্তিত্ব পাওয়া গেলেও তা কচুরিপানায় ঢাকা। আর এর থেকে পচনে সৃষ্টি হয়েছে দুর্গন্ধ আর মশার বসতি।

পদ্ম নদী থেকে ইছামতিতে পানি ঢোকার বিভিন্ন খাল দখল, ভরাট ও বাঁধ সৃষ্টি করায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। এখন শুধু ভরা বর্ষায় ইছামতিতে ধলেশ্বরী নদীর পানি ঢুকলেই কিছু নৌকা চলতে পারে। এ অবস্থায় ইছামতিকে বাঁচাতে বিভিন্ন মহল থেকে দ্রুত খননের দাবি করা হয়েছে।

সাবেক গণ-পরিষদের সদস্য ও নবাবগঞ্জের বাসিন্দা সুবেদ আলী টিপু বলেন, ১৯৭২ সালে ইছামতিকে সচল করতে কোমরগঞ্জ থেকে মরিচা পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার খনন করা হয়েছিলো। ধলেশ্বরী নদীর সঙ্গে সংযোগ দেয়া হয়। ফলে ঢাকার সঙ্গে কলাকোপা বান্দুরার নদীপথের দূরত্ব কমে আসে সারা বছর নৌ-চলাচলের জন্য ইছামতি সচল থাকে। পরে ১৯৭৭ সালে তত্কালীন ঢাকা-১ এর দোহার সংসদ ও নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন নুরুল হক ইছামতী নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে খনন করেছিলেন।

অন্য খবর  কাল -বৈশাখীর ছোবলে বিদ্ধস্ত প্রায় দুইশত পরিবার

এ অঞ্চলের কয়েকজন প্রবীণ বাসিন্দা জানান, ১৯৯৬ সালে সরকার ঢাকার দোহার-নবাবগঞ্জ ও মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলাকে পদ্মা নদীর ভাঙন থেকে রক্ষা করতে দোহারের অরঙ্গবাদ থেকে মানিকগঞ্জের হাট-পাড়া বংখুরী পর্যন্ত ১৩ কি.মি. বাঁধ নির্মাণ করে। এতে ইছামতির সঙ্গে পদ্মার সংযোগ খালে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়।

দোহার-নবাবগঞ্জ কলেজ এন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মানবেন্দ্র দত্ত বলেন, ইছামতিটি খনন করা হলে পরিবেশ দূষণমুক্ত হবে, পাশাপাশি স্কুল-কলেজের পরিবেশ ভাল থাকবে। তাই  খুব শিগগিরই  এর খনন দরকার।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটি) চেয়ারম্যান খন্দকার সামসুদ্দোহা বলেন, সরকারের নদী খনন প্রকল্পের ইছামতি প্রথম তালিকায় আছে। ইছামতি নদী খননে ড্রেজার পাঠানো হয়েছিল কিন্তু কিছু সমস্যার কারণে তা বন্ধ রয়েছে। তবে খুব শিগগিরই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিয়ে ইছামতিকে সচল করা হবে।

ঢাকা-১ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে  কথা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.আলমগীর হোসেন বলেন, ইছামতী নদী খননের বিষয়টি সরকারকে অবহিত করা হয়েছে।

আপনার মতামত দিন