যৌতুক নেওয়ার আধুনিক কৌশল

1032

উত্তরবঙ্গে শিক্ষা এবং অশিক্ষা নেই যৌতুকের লোভ সবার। বেসরকারি একটু ভালো চাকুরে পাত্রের দাবি সাধ্যের মধ্যে তাও ৪-৫ লাখ। পাত্রীর বাবার জমি থাকলে সেখানে আগ্রহ থাকে দুই এক কানি লিখে নেওয়ার। সরকারি চাকুরে পাত্রের সেটা ১৮-২০ লাখে গড়ায় জমি ১০-১২ কানি সাথে বাইক হলে আরো ভালো হয়। বগুড়ার এক ফ্রেন্ডের বড়ো বোনের ছয় সাত বছরের প্রেমিক বিয়ের সময় কম করে সম্পর্কের খাতিরে ৭-৮ লাখটাকায় রাজি। পরবর্তীতে সেই প্রেমিককে টাকা না দিতে পারায় বিয়ে বাতিল করে অন্যত্র বিয়ে করে বেশ সুখে আছে। যৌতুকের কোনো যৌক্তিকতা নেই বিয়ের ক্ষেত্রে। প্রেমিকার চাকরি নেই অার্থিক সামর্থ্যও ভালো নয় তাই অন্য পাত্রী খুঁজে বিয়ে করা চাকরি জীবী পুরুষও চিনি।

এবার একটু উন্নত সমাজের দিকে তাকাই। ঢাকার এই অঞ্চলে বিশেষ করে দোহার নবাবগঞ্জে নগদ টাকার চালাচালি নাই বললেই চলে। ছেলে বেকার হলে ভিসা দিয়ে মধ্য প্রাচ্যে অথবা ইউরোপ পাঠায়। ইউরোপীয় কার্ডধারী প্রবাসী হলে তার বাসার পুরো ফার্নিচারের দায়িত্ব কনে পক্ষের সাথে সুন্দরী কন্যদান। যদি চাকুরীজিবী পাত্র হয় সে খুঁজে চাকুরীজিবী পাত্রী। বিয়ের আগেই বলে নেয় ‘আমাকে সাহায্য করতে হবে আর্থিক ভাবে।’ সাথে কনের পরিবার থেকে ঘরভর্তি ফার্নিচার তো থাকেই। একটা মেয়ের গল্প জানি যার বাবা নেই চাকুরী করে তার উপার্জনের উপর নির্ভর পরিবার। তার বিয়ের সমন্ধের সময় পাত্র, (দেখতে অনেক পছন্দনীয় এবং মানানসই) সে সরাসরি টাকা না চেয়ে কনের বেতনের টাকার সাহায্য চাচ্ছে! আশ্চর্য হলেও সত্যি এরাও পুরুষ বিয়েটা এদেরও হয়।

অন্য খবর  সামাজিক অসংগতি–১: অসতর্ক অভিভাবক, মহামারী আকারে পর্নোগ্রাফি

যৌতুকের সমাধান কি হতে পারে? যত শিক্ষাই হোক নৈতিকতার পরিবর্তন না হলে যৌতুক নিরসন সম্ভব নয়। সম্ভব নয় যৌতুকের জন্য ডিভোর্স কমানো।

আইন করতে হয় যৌতুক বন্ধের অথচ ধর্ম শুরু থেকে যৌতুক নিরুৎসাহিত করছে। এতো এতো আইন এবং ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও আমরা কি মানছি! যৌতুকের টাকা জমাইতে চাকরি করতেও দেখছি মা মেয়েসহ পুরো পরিবারকে। দেখছি বিয়ের কথা চলাকালীন সময়ে ফার্নিচার না দিতে পারার জন্য পাত্রপক্ষকে উঠে যেতে। যে পাত্র প্রথম দেখায় বেতনের অংশীদারিত্ব চায় বিয়ের পরে চাকরি চলে গেলে কি হতে পারে? আমি এতো হ্যান্ডশাম হয়ে তুমাকে বিবাহ করেছি চাকরি দেখে, এই কথা বলতে কতক্ষণ! কোনো আর্থিক কমিটমেন্টে বিবাহ হওয়া উচিৎ নয়। ধর্ম দিয়েছে দেনমোহর আর সমাজ তৈরী করছে যৌতুক।

আবুল বাশার

আইনজীবী

আপনার মতামত দিন