দোহারের চিকিৎসক পুরো পরিবার নিয়েই নিখোঁজ: পুলিশের ধারণা তারা সিরিয়া আছেন

956
ডা. রোকনউদ্দিন

গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলায় ঘরছাড়া তরুণদের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রকাশের পর নিখোঁজদের অনুসন্ধানে গিয়ে ঢাকার এক চিকিৎসকের পুরো পরিবার নিয়েই উধাও হওয়ার তথ্য মিলেছে। দোহারের কুসুমহাটি ইউনিয়নের আওলিয়াবাদ গ্রামের খন্দকার তোফাতুল ইসলামের ছেলে শিশু বিশেষঞ্জ ডা: খন্দকার রোকন উদ্দিন(৫৫) আজ দুই বছর ধরে নিখোজ আছেন। ধারনা করা হচ্ছে তিনি আইএস নিয়ন্ত্রীত সিরিয়ার রাক্কায় আইএসের অধীনে একটি হাসপাতালে কাজ করছেন।

শিশু চিকিৎসক খন্দকার রোকনুদ্দীন (৫০) তার স্ত্রী নাইমা আক্তার (৪৫), দুই মেয়ে রেজওয়ানা রোকন (২৩) ও রামিতা রোকন (১৫), জামাতা সাদ কায়েসকে (৩০) সাথে নিয়ে সিরিয়া হয়ে আইএস নিয়ন্ত্রিত এলাকায় পাড়ি গেছেন বলে তার পরিবারের ধারনা।

ঢাকা শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক রোকনুদ্দীন খিলগাঁও চৌধুরী পাড়ায় থাকতেন। তার স্ত্রী নাইমা ঢাকার বাইরের একটি কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ছিলেন।

রামপুরা থানার পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “গত বছরের ১০ই অক্টোবর তারা দেশ ছেড়ে চলে যায়। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে আমরা ধারণা করছি, তারা সিরিয়া চলে গেছে।”

সিরিয়া ও ইরাকের একটি অংশজুড়ে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়ে কাজ করছে ইসলামিক স্টেট (আইএস), বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি হামলায় যে সংগঠনটির নাম আসছে। সম্প্রতি গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলাকারী হিসেবে ঘরছাড়া অন্তত পাঁচ তরুণ-যুবকের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রকাশের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে নিখোঁজ আরও ১০ যুবকের তথ্য জানানো হয়। এরপর আরও নিখোঁজ আরও সাতজনের তথ্য আসে, যাদের পাঁচজনই ডা. রোকনুদ্দীনের পরিবারের সদস্য। অন্য দুজন হলেন তাওসীফ হোসেন এবং সেজাদ রউফ ওরফে অর্ক ওরফে মরক্কো।

অন্য খবর  স্বাধীনতা দিবসে প্রতিমন্ত্রীর সামনে নবাবগঞ্জের ইউএনও লাঞ্ছিত

ওই তথ্য পেয়ে চৌধুরীপাড়ায় গিয়ে জানা যায়, একটি পাঁচতলা ভবনের তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে পরিবার নিয়ে থাকতেন রোকনুদ্দীন। বাড়িটি তার শ্বশুর খ্যাতিমান হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক প্রয়াত আলী আহমেদের।

রোকনুদ্দীনের গাড়িচালক হিসেবে আট বছর কাজ করেছিলেন জানিয়ে হেলাল বলেন, “প্রায় এক বছর আগে থেকে তাদের (রোকনুদ্দীনের পরিবার) কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। প্রথমে তারা মালয়েশিয়া যাবে, এরপর অন্য কোনো মুসলিম দেশে যাওয়ার কথা বলেছিল। এরপর থেকে আর কিছু জানি না।”

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দেওয়া তালিকায় সাদ কায়েসকে ডা. রোকনুদ্দীনের ছেলে দেখানো হলেও হেলাল জানান, সাদ রেজওয়ানার স্বামী।

পুলিশ কর্মকর্তা মোস্তাফিজ বলেন, “রোকনুদ্দীনের বড় মেয়ে রেজওয়ানা ও তার স্বামী নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করত, তবে শেষ করেনি। ছোট মেয়ে রামিতা পড়ত ভিকারুন নিসা নূন স্কুল ও কলেজে।”

সংবাদসূত্র:

দৈনিক যুগান্তর
মানবজমিন
দৈনিক সমকাল

 

আপনার মতামত দিন