কেন দোহার – নবাবগঞ্জ আসন আলাদা হবে? সাক্ষাৎকারে নির্বাচন কমিশনের ২ আবেদন প্রার্থী

    910

    নিউজ৩৯: নবাবগঞ্জের সাবেক এমপি হারুনুর অর রশিদ এবং গ্রাজ্যুয়েট এসোসিয়েশন অব দোহারের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি মোঃ আইয়ুব আলী গত ৬ই ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে ঢাকা – ০১ সংসদীয় আসন পূণার্বিন্যাস শিরোনামে আবেদন করেছেন। ডাইরী নং – ১৭২৬। কেন দোহার – নবাবগঞ্জ আসন আলাদা হবে? সাক্ষাৎকারে নির্বাচন কমিশনের ২ আবেদন প্রার্থী বিস্তারিত জানান নিউজ৩৯কে।

    এ বিষয়ে সাবেক এমপি হারুন অর রশিদ নিউজ৩৯কে বলেন, ২০০৮ সালে নির্বাচনের পূর্বে তৎকালীন শামসুল হুদা নির্বাচন কমিশন যে মতবিনিময় সভায় আমি বলি নবাবগঞ্জের আছে ১৪টি ইউনিয়ন, দোহার পৌরসভাসহ আছে ৮টি ইউনিয়ন। এখানে রয়েছে বিশাল জনগোষ্ঠী । এটি ভৌগলিক, প্রশাসনিকভাবেই  আলাদা হওয়া প্রয়োজন। কেরানীগঞ্জে একটি প্রশাসনিক ইউনিট থেকে যদি ২টি সংসদীয় আসন হয়, তবে দোহার নবাবগঞ্জ আলাদা হওয়া তো একান্ত আবশ্যক।

    তখন ব্রিগেডিয়ার সাখাওয়াত বলেন, ৯০,০০০ হাজার ভোটে দোহার থেকে একজন নির্বাচিত হবে; কিন্তু অন্য স্থানে লক্ষাধিক ভোটের নির্বাচন হবে, তা তো ঠিক না।

    এই ব্যাপারে হারুন অর রশিদ আরও বলেন, অথচ ২০১৪ সালে ভোটার ছিল প্রায় ৩ লক্ষ ৭৯ হাজার। এখন তা প্রায় ৪ (চার) লক্ষের উপর। দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলা ২টি আলাদা আসন হওয়া একান্ত বাঞ্চনীয় এই জন্যে যে দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলা দুইটি আড়িয়াল বিল ও কোঠা বাড়ীর বিশাল বিল দিয়ে বিভক্ত। এই বিল দিয়ে বিভক্ত হওয়ার জন্য দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলার জনসাধারণ সহজে চলাচল করতে তো পারেই না উপরন্তু চরম ভোগান্তিতে তাদের এক উপজেলা হতে অন্য উপজেলায় প্রশাসনের বা এমপির সঙ্গে কাজ কর্মে ও প্রয়োজনে অনেক ঘুরে কষ্ট করে প্রয়োজনীয় কাজ করতে হয়।

    অন্য খবর  অবৈধ বালু উত্তলনঃ এলাকাবাসীর প্রতিরোধ

    তিনি নিউজ৩৯কে আরও বলেন, বাস্তবে সত্য কথাটি বলতে গেলে একথা অবশ্যই বলতে হয়, যে উপজেলা থেকে যিনিই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি নিজ উপজেলার উন্নয়ন ও জনগণের সুবিধার জন্য অন্য উপজেলার প্রতি প্রায়শই বিমাতাসূলভ আচরণ করে থাকেন। বিগত ২০০৮ এবং ২০১৪ সালের ২টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনই তার প্রকৃষ্ট প্রমান। এতে করে দোহার ও নবাবগঞ্জ উভয় উপজেলার মানুষের সমস্যা বেড়ে গেছে এবং দোহার ও নবাবগঞ্জের উন্নয়নে আনুপাতিক বরাদ্দ কমে গেছে।

    গ্রাজ্যুয়েট এসোসিয়েশন অব দোহারের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি আইয়ুব আলি নিউজ৩৯কে নির্বাচন কমিশনে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী সংসদ বহাল রেখে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান হলে ২০১৮ সালের ৩১ অক্টোবর থেকে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারীর মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যেই ভৌগলিক অখন্ডতাকে প্রাধান্য দিয়ে সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের লক্ষ্যে কাজ শুরু করছেন। নির্বাচন কমিশন সচিবালয় তরফে জানা গেছে ভৌগলিক অবস্থা বিবেচনা করে ঢাকা-২ ও ৩ আসনকে (কেরানীগঞ্জ উপজেলা) একত্রিত করার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়েছে।

    তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই ঢাকা-১ আসনটি দোহারের ৭/৮টি ইউনিয়ন এবং নবাবগঞ্জের ৩টি (জয়কৃষ্টপুর, বারুয়াখালী এবং শিকারী পাড়া) ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ছিলো। ২০০১ এর ০১ অক্টোবর অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রশাসনিক এবং ভৌগলিক অবস্থা বিবেচনা করে নবাবগঞ্জের ৩টি ইউনিয়ন বাদ দিয়ে দোহারের ৮টি ইউনিয়ন এবং ১টি পৌরসভার সমন্বয়ে ঢাকা-১ আসনটি পুনর্বিন্যাস করে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু অপ্রত্যাশিতভাবে ২০০৮ এর জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে নির্বাচন কমিশন প্রশাসনিক ও ভৌগলিক অবস্থানের পরিবর্তে শুধুমাত্র জনসংখ্যার বিবেচনায় দোহারের ৮টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা এবং নবাবগঞ্জের ১৪টি ইউনিয়ন একত্রিত করে ঢাকা-১ আসন পুনর্বিন্যাস করে।

    অন্য খবর  একটি ব্রিজের অপেক্ষায়  

    এতে করে দোহার ও নবাবগঞ্জের উন্নয়নে আনুপাতিক বরাদ্দ কমে গেছে। এই দুই অঞ্চলে ভাগ হয়ে যাচ্ছে টাকা। অথচ আলাদা আসন হলে, মসৃণ গতিতে চলবে এই উন্নয়ন।

    তিনি নিউজ৩৯কে আরও বলেন, শুধুমাত্র জনসংখ্যার বিবেচনা না করে ভৌগলিক অখন্ডতা এবং প্রশাসনিক দিক বিবেচনা করে ঢাকা-১ সংসদীয় আসনটি দোহারের ৮টি ইউনিয়ন এবং ১টি পৌরসভার সমন্বয়ে ২০০১ এর অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের নিকট জোর দাবী জানাচ্ছি পপাশাপাশি নবাবগঞ্জের ১৪ টি ইউনিয়ন নিয়ে ঢাকা ২ করার জন্য দোহার-নবাবগঞ্জের কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র-জনতা তথা সুশীল সমাজ সহ সকল রাজনৈতিক নেতৃত্বকে  নিজ নিজ অবস্থান থেকে দাবী আদায়ে সোচ্চার ভূমিকা নেয়ার জন্য বিনীত আহ্বান জানাচ্ছি।

    আপনার মতামত দিন