আসাদ সবুজ৩৯ঃ উজান থেকে নেমে আসা ঢলে পদ্মায় ক্রমেই বেড়ে চলছে পানির উচ্চতা। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। সেই সঙ্গে বাড়ছে জনদুর্ভোগ। সড়ক ও জনপদ তলিয়ে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবন। অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে দুর্গতরা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেই ত্রাণ বিতরণের উদ্যোগ। ২৪ ঘণ্টায় দোহার ও নবাবগঞ্জের ৯ গ্রামে প্রায় ১২ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের অভাবে পানিবন্দী মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
এলাকার লোকজন জানান, ছয় দিন ধরে পদ্মার পানি বেড়েই চলেছে। এতে করে দোহার ও নবাবগঞ্জের নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। গতকাল দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, দোহারের নারিশা জোয়ার, চর বিলাসপুর, কৃষ্ণদেবপুর, কুতুবপুর, কুলছুরি, দেবীনগর, বায়রাচর, চর মাহমুদপুর, চর নারায়ণপুর, হোসেনপুর, সুখদেবপুর, চর কুসুমহাটির কিছু অংশ প্লাবিত হয়েছে।এ ছাড়া নবাবগঞ্জের কাশিয়াকালী বেড়িবাঁধ গেট বন্ধ করা না হলে যে কোনো সময় গেট ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হতে পারে। এতে নবাবগঞ্জ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের মানুষের পানিবন্দি হয়ে পড়ার আশংকা করা হচ্ছে।
৭ দিনে পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ঢাকার নবাবগঞ্জের জয়কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ১০টি গ্রাম, দোহার উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ২২টি গ্রামের প্রায় সাড়ে ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গবাদিপশু নিয়ে ক্ষতিগ্রস্তরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এতোদিনেও সরকারি কোনো ত্রাণ পাওয়া যায়নি। বানভাসি মানুষরা অসহায় হয়ে পড়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল। পানিবন্দী পরিবারের সদস্যরা ঘরের ভেতর মাচার ওপর বসবাস করছেন। খড়ের গাদা ও কচুরিপানার ঢিবি বানিয়ে তাতে গবাদিপশু রাখা হয়েছে। নলকূপগুলো তলিয়ে যাওয়ায় এলাকাগুলোতে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।নবাবগঞ্জের জয়কৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোতাহার হোসেননিউজ৩৯কে বলেন, তার ইউনিয়নের দোহার-নবাবগঞ্জ-মানিকগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধের বাইরের অংশের প্রায় ১৩ গ্রামের ২ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া বালেঙ্গা এলাকার শতাধিক বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল করিম ভুঁইয়া বলেন, বানভাসি ও ভাঙনকবলিত পরিবারগুলোর জন্য বরাদ্দের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বরাদ্দের জন্য আলোচনা চলছে। এছাড়া এদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।