সৌদি যুবরাজ উদ্ভট-কল্পনাপ্রবণ; কথা বলে জাহেলি যুগের বেদুইনদের মত: ইরান

    203

    ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাহরাম কাসেমি তার দেশের বিষয়ে সৌদি যুবরাজের সাম্প্রতিক অবমাননাকর বক্তব্যের জবাবে বলেছেন, উদ্ভট কল্পনা-প্রবণ মুহাম্মাদ বিন সালমান মিথ্যা ও কটু কথা ছাড়া অন্য কোনো কথা বলেন না, তাই তার কথা কোনো জবাব পাওয়ারই মূল্য রাখে না।

    রাজনীতি সম্পর্কে অনভিজ্ঞ বা আনাড়ি এই ব্যক্তির কোনো দূরদর্শিতা না থাকায় তার মুখ দিয়ে অসময়ে অযথাই কড়া কথা বের হয় বলে কাসেমি মন্তব্য করেছেন।

    গত বৃহস্পতিবার সিবিএস টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সালমান ইরানকে ‘বিপজ্জনক’ বলে দাবি করে বলেছিলেন, ইরান পরমাণু বোমা বানালে সৌদি আরবও খুব শিগগিরই একই কাজ করবে!

    জাতিসংঘের পরমাণু বিষয়ক নজরদারি সংস্থা আইএইএ বা আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা যখন বহু বছর ধরে ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে শান্তিপূর্ণ বলে স্বীকৃতি দিয়ে আসছে তখন সৌদি রাজার ছেলে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি সম্পর্কে ইসরাইলি দাবির সঙ্গে সুর মিলিয়ে কথা বললেন!

    সৌদি রাজার ছেলে আরও বলেছিলেন, ইরানের সশস্ত্র বাহিনী মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় পাঁচটি সশস্ত্র বাহিনীর অন্যতম নয় এবং সৌদি আরবের অর্থনীতি ইরানের অর্থনীতির চেয়ে বড়।

    অন্য খবর  নিউজ ৩৯ এ সংবাদ প্রকাশের পর ইটভাটাকে ৩লক্ষ টাকা অর্থদন্ড

    ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরও বলেন, সালমানের বক্তব্যে বিচক্ষণতা বা দূরদৃষ্টি থাকে না, বরং তার বক্তব্য উগ্র-গোত্রবাদে ভরপুর থাকে যা ইসলাম-পূর্ব জাহিলি বা অজ্ঞতার যুগের বেদুইনদের (গোত্র-পূজার) কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।

    সৌদি যুবরাজ মুহাম্মাদ বিন সালমান

    তিনি আরও বলেন, যে দেশটির হাঁটু তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে নিরস্ত্র ও অবরুদ্ধ ইয়েমেনি জনগণের প্রতিরোধের মুখে নড়বড়ে হয়ে পড়েছে এবং যাদের প্রতিরোধ সৌদি কর্মকর্তাদের ঘুম হারাম করে দিয়েছে সেই দেশের উচিত নয় সশস্ত্র বাহিনী ও অর্থনীতির সাইজ নিয়ে কথা বলা। বড়দের মোকাবেলায় বিশেষ করে ইরানের মত শক্তিশালী দেশের মোকাবেলায় সৌদি শাসকগোষ্ঠীর সংযত হয়ে কথা বলা উচিত বলে কাসেমি মন্তব্য করেন।

    ইসলামী ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরও বলেছেন, ইরান তার প্রতিবেশী সব দেশকেই সম্মান দেখিয়ে আসছে এবং ইরান এ অঞ্চলে কেবল কোনো একটি দেশ শক্তিশালী হোক্ তা চাওয়ার বদলে গোটা অঞ্চলকে‌ শক্তিশালী ও নিরাপদ দেখতে চায়।

    কাসেমি বলেন, ইসলামী ইরান তার আশপাশের অঞ্চলে কোনো কোনো দুর্বিনীত শত্রু ও অকল্যাণকামী সরকারসহ সব দেশকেই সংলাপ ও সহিষ্ণুতার দিকে আহ্বান জানায় যার ভিত্তি হচ্ছে যুক্তি ও ন্যায়বিচার এবং মুসলিম বিশ্বের উন্নয়ন যাতে এ অঞ্চলসহ গোটা বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তা জোরদার হয়।

    অন্য খবর  ১৫ কোটি টাকা দামের মোটরসাইকেল আনলো হার্লে ডেভিডসন

    তিনি রিয়াদের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিদ্রুপ করে বলেন, সৌদি সরকার জনগণের অর্থ দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কথিত ‘সুন্দর অস্ত্রশস্ত্র’ ও ‘নিরাপত্তা কেনা’ অব্যাহত রেখেছে!

    গত বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সৌদি সরকারের কাছে অস্ত্র বিক্রির জন্য ১১ হাজার কোটি ডলারের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। আর এর পরপরই (গত জুন মাসে) কাতারের আমিরের সঙ্গে বৈঠকের প্রাক্কালে তিনি বলেছিলেন, এই বৈঠকে ‘বিপুল পরিমাণ সুন্দর সমরাস্ত্র বিক্রির ওপর আলোকপাত করব’। ইরানি কর্মকর্তারা এরপর থেকে মধ্যপ্রাচ্যের রাজতান্ত্রিক দেশগুলোতে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি বিষয়টিকে বিদ্রূপ করে ‘সুন্দর অস্ত্র বিক্রি’ বা গাভীর দুধ ‘দোহন’ বলে অভিহিত করে আসছেন। #

    আপনার মতামত দিন