আধুনিক দোহারের রুপকার সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না নিল্লাহ হি ওয়া ইন্না- ইলাহির রজিউন। বিষয়টি তার একান্ত সচিব আক্কাস খান ক্রন্দনরত অবস্থায় news39.net কে নিশ্চিত করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮০ বছর। তিনি লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে কেমোথেরাপি নিচ্ছিলেন। সর্বশেষ রবিবার রাত ১০টায় স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা মৃত্যুকালে তার স্ত্রী আইনজীবী ব্যারিস্টার সিগমা হুদা এবং দুই কণ্যা অন্তরা সামিলা ও শ্রাবন্তী আমিনা রেখে গিয়েছেন।
তার মৃত্যুতে news39.net শোক প্রকাশ করছে। একইসাথে, তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত এবং জান্নাতুল ফেরদৌস কামনা করছে।
স্কয়ার হাসপাতাল থেকে তার লাশ ধানমন্ডিতে নিজ বাসভবনে নেয়া হবে। সেখান থেকে সোমবার সংসদ ভবনে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের জন্য নেয়া হবে। পরে দোহারে সর্বসাধারণের সম্মান প্রদর্শন ও জানাযার জন্য আনা হবে বলে প্রাথমিক সূত্রে জানিয়েছেন আক্কাস আলী খান। সময়সূচি পরিবারের সাথে কথা বলে জানানো হবে বলে, তিনি জানান।
১৯৪৩ সালের ৬ জানুয়ারি এই বর্ষিয়ান নেতা জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ সালে পরপর ৩ বার তিনি ঢাকা -১ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান জাগো দল গঠন করলে নাজমুল হুদা জাগো দলে যোগ দেন। ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) গঠিত হলে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন এবং তিনি ছিলেন দলের সর্বকনিষ্ঠ স্থায়ী কমিটির সদস্য। ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার গঠন করলে তিনি তথ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ সরকারের যোগাযোগ মন্ত্রী ছিলেন। ১/১১ পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তার বিরুদ্ধে তিনটি দুর্নীতির মামলা হয়েছিল। ২০১০ সালে ২১ নভেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তাকে দল থেকে বহিষ্কার করেন তখন তিনি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। বহিষ্কৃত হলেও তিনি বিএনপির দলীয় কাজ করতে থাকেন এবং ২০১১ সালের ৫ এপ্রিল তার সদস্য পদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়। অবশেষে ২০১২ সালে ৬ জুন নাজমুল হুদা বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেন।
১০ই আগস্ট ২০১২ সালে নাজমুল হুদা ও আবুল কালাম মিলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট (বিএনএফ) নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন। কিন্তু কয়েক মাস পরের আবুল কালাম কর্তৃক বিএনএফ থেকে বহিষ্কার হন। ২০১৪ সালের ৭ মে মাসে তিনি বাংলাদেশ জাতীয় জোট নামে একটি জোট গঠন করেন এবং ২১ নভেম্বর তিনি বাংলাদেশ মানবাধিকার পার্টি নামে দল গঠন করেন। ২০ নভেম্বর ২০১৫ সালে হুদা তৃণমূল বিএনপি নামে আরও একটি নতুন দল গঠন করেন। দলটিকে এই মাসে নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন দিয়েছে।