কেরানীগঞ্জে ইউনেস্কো থেকে পুরস্কার পেল দোলেশ্বর মসজিদ

122

ঢাকার জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে অবস্থিত প্রায় দেড়শ বছরের পুরনো দোলেশ্বর হানাফিয়া জামে মসজিদ জাতিসংঘের শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেয়েছে।

ডিসেম্বর শুরুতে ইউনেস্কোর এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অফিস থেকে অনলাইনে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর বিবিসির।

বিভিন্ন দেশের শ্রেষ্ঠ কাজগুলোকে প্রতিবছর স্বীকৃতি দেয় ইউনেস্কো।এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চল -ফিজি থেকে শুরু করে কাজাখাস্তান পর্যন্ত। পুরস্কারের নাম দেয় হয়েছে ‘এশিয়া-প্যাসিফিক অ্যাওয়ার্ডস ফর কালচারাল হেরিটেজ কনসারভেশন’ ADVERTISEMENT

২০২১ সালে ছয়টি দেশের নয়টি স্থাপনাকে এ স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ‘অ্যাওয়ার্ড অব মেরিট’ ক্যাটাগরিতে স্বীকৃতি পেয়েছে কেরানীগঞ্জের দোলেশ্বর হানাফিয়া জামে মসজিদ, সেই সাথে
বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, চীন, জাপান, মালয়েশিয়া এবং থাইল্যান্ডের বিভিন্ন স্থাপনা ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেয়েছে এমনটাই ইউনেস্কো জানিয়েছে,

১৮৬৮ সালে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে অবস্থিত এই মসজিদ নির্মিত হয়। এই মসজিদটি কেরানীগঞ্জের দোলেশ্বর ইউনিয়নে অবস্থিত জনসংখ্যার বিবেচনায় এটি ছোট আকারে নির্মাণ করা হয়েছিল।এরপর মসজিদটি একাধিকবার সম্প্রসারণ করা হয়েছিল। কালের পরিক্রমায় এই মসজিদের অবকাঠামো ক্ষয়িষ্ণু হয়ে যাচ্ছিল। কয়েক বছর আগে মসজিদটিকে সংস্কার করে পুরনো রূপ দেয়ার উদ্যোগ নেন সেখানকার সংসদ সদস্য ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

অন্য খবর  নবাবগঞ্জে যুবক খুন

ইউনেস্কো আরো বলেছে যেসব স্থাপনা পুরস্কার পেয়েছে সেগুলোতে টেকসই উন্নয়নের নানা দিক রয়েছে বলে। স্থাপনাগুলোর সংরক্ষণ ঠিকমতো হয়েছে কি না সেটি বিশ্লেষণ করে দেখে ইউনেস্কোর বিশেষজ্ঞ কমিটি।

স্থপতি আবু সাঈদ এম আহমেদ এ সংস্কার কাজের নেতৃত্ব দেন এবং ২০১৮ সালে এর সংস্কার কাজ শেষ হয়।পুরনো মসজিদের পাশেই নির্মাণ করা হয় নতুন আরেকটি মসজিদ। পুরনো মসজিদটি এখন লাইব্রেরি এবং মক্তবে রূপান্তরিত হয়েছে।

ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য স্থপতি আবু সাঈদ এম আহমেদ আবেদন করেন। ইউনেস্কো এক বিবৃতিতে বলেছে, এসব স্থাপনার মাধ্যমে ঐতিহ্যের যে বৈচিত্র্য ধরে রাখা হয়েছে সেটি সত্যিই প্রশংসার বিষয়।

স্থপতি আবু সাঈদ এম আহমেদ জানালেন, সে মানদণ্ড পূরণ করতে পেরেছে দোলেশ্বর হানাফিয়া মসজিদ।পুরনো স্থাপনা রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে ব্যক্তি এবং বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগকে উৎসাহ দেয় ইউনেস্কো। এ অঞ্চলের মসজিদগুলো আরব দেশের মসজিদগুলোর চেয়ে ভিন্ন ধাঁচের।

তিনি আরো বলেন, আমাদের পুরনো মসজিদগুলোতে কোথাও মিনার পাবেন না। মিনার বলতে বাঙালিরা সে রকম কিছুই চিনতো না। যেভাবে চুন-সুরকি দিয়ে অবকাঠামো নির্মাণ করা হতো সেটিও অন্যদের তুলনায় ভিন্ন।

অন্য খবর  দোহারে পদ্মায় বালুদস্যুতা নির্বিকার প্রশাসন

সেজন্য ২০০০ সাল থেকে এ পুরষ্কার চালু করেছে ইউনেস্কো। স্থপতি আবু সাঈদ এম আহমেদ বলেন, সাধারণত বাংলাদেশে পুরনো মসজিদ ভেঙ্গে নতুন মসজিদ নির্মাণ করা হয়। এক্ষেত্রে পুরনোটা রেখে নতুনটা তৈরি করা হয়েছে। পুরনোটাকে একেবারে আদি অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

দেড়শ বছর আগে চুন-সুরকি দিয়ে এই মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিল। স্থপতি আবু সাঈদ এম আহমেদ জানালেন, এ মসজিদকে পুরনো রূপ দেওয়ার জন্য চুন-সুরকি দিয়ে সংস্কার করতে হয়েছে।

মসজিদটি সংস্কারের উদ্যোক্তা বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, দেড়শ বছর আগে এই মসজিদটি নির্মাণের সঙ্গে তার পূর্বপুরুষদের ভূমিকা ছিল। আমাদের লক্ষ্য ছিল, পুরনোকে সঙ্গে নিয়ে নতুনের কথা বলা।

আপনার মতামত দিন