দোহারে ইয়াবা নাটক সাজিয়ে যুবককে ফাঁসানোর চেষ্টাঃ এসআই রফিক প্রত্যাহার

1945
দোহারে ইয়াবা নাটক সাজিয়ে যুবককে ফাঁসানোর চেষ্টাঃ এসআই রফিক প্রত্যাহার

ঢাকার দোহার উপজেলার এক যুবককে ইয়াবা ব্যবসায়ী সাজিয়ে আটক করে টাকা আদায় করার অভিযোগ উঠেছে দোহার থানার এএসআই রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবারের এ ঘটনায় এলাকাবাসী ওই পুলিশ কর্মকর্তার অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করলে তাঁকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, দোহার গ্রামের জাহাঙ্গীর খানের ছেলে মারুফ খানকে ইয়াবা ব্যবসায়ী আখ্যা দিয়ে বড় অঙ্কের টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করেন এএসআই রফিক। এতে সহযোগিতা করেন পুলিশের সোর্স মধুর গ্রামের রউফ মাতবরের ছেলে রাজিব ও দোহার গ্রামের বাবুল সিকদারের ছেলে নূর মোহাম্মদ ওরফে মহত। রাজিব ১০০ টাকা ও এএসআই রফিক নিজের পকেট থেকে ৫০০ টাকা দিয়ে ইয়াবা কেনার দায়িত্ব দেন মহতকে। পরিকল্পনা করা হয়, ওই ইয়াবা দিয়ে মারুফকে আটক করে টাকা আদায় করা হবে এবং এই টাকা তিনজন ভাগ করে নেবেন।

গত বুধবার রাত ৮টার দিকে মারুফ বাড়ি থেকে দোহার বাজারে আসার সময় পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মারুফের হাতে ওই ৬০০ টাকা ধরিয়ে দিতে যান মহত। এ সময় পরিকল্পনা অনুযায়ী কাছে ওত পেতে থাকা এএসআই রফিক ও তার সোর্স রাজিব গিয়ে হাজির হন। তখন ওই টাকার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে মহত বলেন, এ টাকা ইয়াবা কেনার জন্য মারুফকে দিয়েছি। এরপর মারুফ ও মহতকে আটক করে একটি অটোরিকশায় করে থানার দিকে নিয়ে যান রফিক। পথে মহতকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আটকের বিষয়টি এক আত্মীয়ের মাধ্যমে জানানো হয় মারুফের মা ফাতেমা বেগমকে। ফাতেমা এএসআই রফিকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। দেন দরবার করে ১২ হাজার টাকায় মুক্তি মেলে মারুফের। বৃহস্পতিবার সকালে এলাকায় বিষয়টি জানাজানি হলে ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে এলাকাবাসী। পরে এই পরিকল্পনার কথা ফাঁস করে দেন মহত। এলাকাবাসী মিছিল নিয়ে উপজেলা প্রশাসনে এসে ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করতে থাকে। একপর্যায়ে দোহার থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম ঘটনাস্থলে এসে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

অন্য খবর  দোহারে বিশ্ব শিশু দিবস উপলক্ষে র‌্যালী, আলোচনা সভা

এ ব্যাপারে রফিকের সহযোগী মহত বলেন, ‘এএসআই রফিক আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে এ কাজে বাধ্য করেছেন। পুলিশের সোর্স রাজিব রফিককে সহযোগিতা করেছেন। তাঁরা দুজন আমাকে ৬০০ টাকা দিয়েছিলেন ইয়াবা কেনার জন্য এবং ওই ইয়াবা দিয়ে মারুফকে ফাঁসিয়ে টাকা আদায়ের জন্য। আমি ইয়াবা কিনতে না পারার বিষয়টি রফিককে জানাই। তিনি আমাকে বলেন, তাহলে তুই টাকাটাই মারুফের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলবি, এটা ইয়াবা কেনার টাকা। ওই মুহূর্তে গিয়ে আমি তোদের দুজনকে ধরব, কিন্তু তোকে রাস্তা থেকে ছেড়ে দেব’। দোহার থানার ওসি শেখ সিরাজুল ইসলাম বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার মতামত দিন