সালমান এফ রহমান: দোহার-নবাবগঞ্জের শত শত বেকারের কর্ম উদ্যোক্তা

1693

সালমান এফ রহমান বর্তমানে, তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিনিয়োগ বিষয়ক উন্নয়নের উপদেষ্টা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জেষ্ঠ্য  সন্তান শেখ কামালের  ঘনিষ্ঠ বন্ধু।  তিনি আবাহনী ক্লাবের চেয়ারম্যান। তিনি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক হিসেবেও মনোনীত হয়েছিলেন। তিনি বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজ ও বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির সভাপতি। এ ছাড়াও তিনি বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউট (বিএনআই), ইংরেজি দৈনিক ইনডিপেনডেন্ট-এর সম্পাদকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান। এছাড়া সালমান এফ রহমান আইএফআইসি ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান। তিনি আইএফআইসি ব্যাংকের একজন উদ্যোক্তা পরিচালক। তিনি বাংলাদেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের মধ্যে একজন। তিনি বেক্সিমকোর প্রতিষ্ঠাতা এবং ভাইস চেয়ারম্যান।

দোহার-নবাবগঞ্জেকে সমগ্র বাংলাদেশে পরিচিত করেছে যে ২টি নাম; তার একটি নাম সালমান এফ রহমান ও অপরটি তারই ভাতিজা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার নাম। একসময় দোহারবাসী ঢাকাসহ সারা দেশে পরিচিতি হতো আমরা সালমান ও হুদার এলাকাবাসী বলে। ফলে সালমান নামটি ছিল দোহারের পরিচয়পত্র ও গর্বের বিষয়।

২০১৩ ও ১৪ সালের করবর্ষের সম্পদ বিবরণীর তালিকা অনুযায়ী বাংলাদেশের শীর্ষ সম্পদশালী ৫০ ব্যক্তির তালিকায় দেখা গেছে ১০০ কোটি টাকার বেশি নিট সম্পদের মালিক রয়েছেন ২৭ জন। আর ৫০ কোটি টাকা বা তার চেয়ে বেশি টাকার নিট সম্পদের মালিক রয়েছেন এমন সম্পদশালীর সংখ্যা ৪৬জন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের তালিকায় এমন তথ্য জানা গেছে। মোট সম্পদ থেকে মোট দায় বাদ দিলে যা থাকে তাই নিট সম্পদ। ১৬৫ কোটি টাকার নিট সম্পদ নিয়ে তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছেন বেক্সিমকোর সালমান এফ রহমান।

অন্য খবর  কালীগঙ্গা নদীতে ট্রলার ডুবি: নিখোঁজ ২ যুবকের লাশ উদ্ধার

সালমান এফ রহমান বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান। অত্যন্ত পরিশ্রমী ও সদালপী এই মানুষটি কঠোর পরিশ্রম ও সাধনার মাধ্যমে বর্তমান অবস্থানে এসেছেন। ১৯৬৬ সালে সালমান এফ রহমান এবং তার ভাই সোহেল রহমান একটি চলন্ত পাট কলে ব্যবসা শুরু করেছিলেন যেই ব্যবসা তার বাবা ছেড়ে দিয়েছিলেন। সরকার ১৯৭১ সালে পাট কলটি জাতীয়করণ করে, যা তাদেরকে বাধ্য করেছে অন্য ব্যবসার দিকে ঝুঁকে পড়তে। তখন তারা ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ রপ্তানি এবং আমদানি কোম্পানি (বেক্সিমকো গ্রুপ) প্রতিষ্ঠা করেন। তারা সীফুড এবং হাড় গুঁড়ো রপ্তানি করতে শুরু করেন বেলজিয়াম, ফ্রান্স, ব্রিটেন, জার্মানি এবং নেদারল্যান্ড-এ। তারা তখন সীফুড এবং হাড় গুঁড়ো রপ্তানির বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে ঔষধ আমদানি করতে লাগলেন।

একমাত্র বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান হিসাবে নিউইয়র্ক ও লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে রয়েছে বেক্সিমকো’র নাম। শোনা যায়, বর্তমান সৌদি বাদশাহ এর সাথে তার রয়েছে ব্যবসায়িক সম্পর্ক। এছাড়া যুবরাজ তালালের সাথে তার সম্পর্ক বন্ধুসুলভ।

৪৮ হাজারেরও বেশি মানুষ এই বেক্সিমকো প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। দোহার-নবাবগঞ্জের শত শত মানুষকে কর্ম সংস্থানের সৃষ্টি করেছে বেক্সিমকো গ্রুপ। দোহার উপজেলা চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বর্তমানে বেক্সিমকো গ্রুপের মিডিয়া জিএম ও একজন পরিচালক। দোহার উপজেলা বিএনপি সভাপতি সাহাবুদ্দীন আহমেদের মেয়েও বর্তমানে এখানে কর্মরত। এছাড়া সালমান এফ রহমানের পিতা ফজলুর রহমানের নামে প্রতিষ্ঠিত এফ রহমান ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী হিসাবে দায়িত্বরত আছেন দোহারের লটাখোলার আব্দুর রব। ইন্ডিপেন্ডেণ্টে টেলিভিশনের সিনিয়র সাংবাদিক হিসাবে কর্মরত আছেন মেঘুলা’র শিমুল বাশার শামীম। বেক্সিমকো এর ফ্যাশন হাউজ ‘ইয়েলো’ তে আছেন দোহারের অনেকে। এছাড়া বেক্সিমকো ফার্মাতে কর্মরত রয়েছে দোহারের অনেক ফার্মাসিস্ট, কেমিস্ট ও বিবিএ ডিগ্রীধারী সন্তানেরা। শাইনপুকুর সিরামিক্স, বেক্সিমকো টেক্সটাইলে রয়েছে দোহার – নবাবগঞ্জের অনেকে।

অন্য খবর  দোহারের পদ্মা নদীতে চলছে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

আর এভাবেই পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে দোহারকে ভালোবাসা দিয়েছেন তিনি। নিরাশ করেন নি। জাতীয় পর্যায়ে আলোচনা – সমালোচনা ও প্রশংসা যাই থাকুক না কেন তিনি এবার এসেছেন বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্ব বৃহৎ রেমিটেন্স প্রেরণকারী উপজেলা দোহারকে আধুনিক ও মডেল হিসাবে রুপান্তর করতে। এবার আর কথা নয়; কাজ দিয়ে তিনি নিজেকে প্রমাণ করতে চান। তাই আবারো সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে দোহার-নবাবগঞ্জে মানুষের কর্মের নতুন সুযোগ সৃষ্টির ও সমৃদ্ধ জনপদ হিসাবে গড়তে।

আপনার মতামত দিন