সুতাহীন জালে ধরা পড়ছি আমরা

446

সকাল ৬ টা

ঘুম ভাঙ্গলো ফেসবুকের নটিফিকেশনে,চোখ মুছতে মুছতে ফেসবুক চালানো  শুরু হল।আজ স্কুল বা প্রাইভেট নেই কারণ আজ শুক্রবার।তাই বলে পড়া যে নেই তা নয়,পড়তে বসব ঠিক করলাম ৯ টায়।ফ্রেশ হয়ে আসার পর ইউটিউব এর নটিফিকেশন পেলাম,সাবস্ক্রাইব করাছিল কোন চ্যানেল তারা নতুন ভিডিও দেওয়ার  কারণে নটিফিকেশন পেলাম।ভিডিও চালু করার পর ঢুকে গেলাম ইউটিউব এর জগতে।একটার পর একটা ভিডিও দেখেই যাচ্ছি। ৯ টার সময় পড়তে বসার কথাছিল কখন যে ৯ টা পার হয়ে দুপুরের খাওয়ার সময় হয়ে গেছে বলতে পারব না।

মূল কথার আসা যাক,রাউটারের মাধ্যমে ওয়াইফাই দিয়ে নেট চালানো এখন সবারই জানা।আগে ঢাকাতে রাউটারের ব্যবহার প্রচুর পরিমানে থাকলেও এখন গ্রামেগঞ্জের মানুষও একটু সাশ্রয় ও বাধাহীনভাবে ইন্টারনেটের দুনিয়ায় বিচরণ করার জন্য এই ওয়াইফাই ব্যবহার করছে।তরুণদের কাছে এটি একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাড়িয়েছে। আগে বিদ্যুৎ চলে গেলে বিরম্বনা বোধ হত কিন্তু এখন বিদ্যুৎ  চলে গেলে আরো বেশি বিরম্বনা হয় কারণ রাউটারটিও বন্ধ থাকে ইচ্ছে হলেই যাওয়া যায় না ইন্টারনেটের দুনিয়ায়।আর যাদের ওয়াই -ফাই এর পাশাপাশি মোবাইল ডাটা থাকে  তাদের কথা আলাদা।বিরতীহীনভাবে ইন্টারনেটের দুনিয়ায় রাজত্ব করা যায়।এই ইন্টারনেট আমরা ব্যবহার করি ফেসবুক, ইউটিউব, মেসেঞ্জার,what’s app ইত্যাদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম চালানোর জন্য।এই ইন্টারনেটে আমারা এতটাই আসক্ত হচ্ছি যা মাদকের থেকেও ভয়াবহ। আমরা ইন্টারনেটকে কেন মাদকের সাথে তুলনা করছি।ইন্টারনেট এমন এক প্রকার জিনিস যা প্রয়োজনের সময় জীবন রক্ষাকারী ঔষধের মত কাজ করে আবার অতিরিক্ত এবং প্রয়োজনহীন ভাবে ব্যবহার করলে বিষাক্ত মাদকের মত কাজ করে।এই কথাগুলো আমাদের সকলের জানা।এর ভয়াবহতা এখন এতটাই যে মানুষ একবেলা না খেয়ে থাকলেও কিছু মনে হয় না,কিন্তু কিছু মূহুর্ত ইন্টারনেট ব্যবহার না করতে পারলে আমাদের মনে হয় আমরা অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত আমরা।

অন্য খবর  বাংলাদেশকে নিয়ে চীন-ভারত দ্বন্দ্ব: কী ঘটছে নেপথ্যে?

আমাদের এইজন্য ইন্টারনেট ব্যবহার বন্ধ করতে হবে এমন কিন্তু না।এই ইন্টারনেট ব্যবহার করে অনেক তরুণ তাদের রুটিরুজি যোগার করছে,কেউ বিদেশের ক্লাস ও ডিগ্রি নিতে পারছে,কেউ বিশ্বের  কাছে নিজেকে তুলে ধরতে পারছে,আর এই কাজগুলো যারা করতে পারছে না,এই চিন্তাগুলো যাদের মাঝে নেই তারাই হারিয়ে যাচ্ছে  ইন্টারনেট রূপী মাদকে।এর সুষ্ঠু ব্যবহার করার জন্য অনেক সচেতনতা অনেক কার্যক্রম গ্রহণ করার হয়েছে।কিন্তু আসলেও কি আমারা এর যথউপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারছি?পরিবার থেকে যতক্ষণ না পর্যন্ত সচেতনতা বোধ জাগ্রত হবে ততক্ষণ প্রয়োজনীয় ইন্টারনেট ব্যবহার হবে মাদকের মত।সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ  করার জায়গা রয়েছে। কি কি ভাবে এই ইন্টারনেটের যথউপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করা যায় তা জনগণসহ তরুণদের মাঝে প্রকাশ করতে হবে।ইউটিউব যে আমাদের কত বড় শিক্ষক, ফেসবুক যে কত বড় বাজার জানাতে হবে।স্বপ্ন দেখাতে হবে এই ইন্টারনেট ব্যবহার করে কীভাবে নিজেদের,সমাজের ও রাষ্ট্রের উন্নয়ন করা যায়।এর দায়িত্ব কার? উদ্যোগী হতে হবে সবাইকে – নিজেকে,পরিবারকে,শিক্ষককে, সমাজ ও রাষ্ট্রকে।অন্যথায় এর করাল গ্রাসে হারিয়ে যাবে অনেক সম্ভাবনাময় তরুণ।

অন্য খবর  ব্রডব্যান্ড যুগে প্রবেশ দোহারবাসীর

লেখক: প্রান্ত ঘোষ

ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগ

তেজগাঁও কলেজ,ঢাকা

আপনার মতামত দিন