সম্মেলনের নির্দেশ পাওয়া আ. লীগের চার সংগঠনে চলছে জোর প্রস্তুতি

147

প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে সম্মেলন করার নির্দেশ পাওয়া আওয়ামী লীগের তিন সহযোগী ও এক ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন। ইতোমধ্যে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও কৃষক লীগ তাদের কার্যনির্বাহী সংসদের সর্বশেষ বৈঠক করেছে। যুবলীগ করেছে তাদের নীতিনির্ধারণী ফোরাম সভাপতিমণ্ডলীর বৈঠক। তবে, সম্মেলন প্রস্তুতিতে কিছুটা পিছিয়ে আছে শ্রমিক লীগ। কাউন্সিলর-ডেলিগেট তালিকা পাঠানোর জন্য জেলায় জেলায় নির্দেশনা পাঠিয়েছে প্রতিটি সংগঠন। প্রচার-প্রচারণার জন্য পোস্টার, বিলবোর্ড ও আমন্ত্রণপত্রের নকশা চূড়ান্ত করা হয়েছে।

সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোনোটির সাড়ম্বরে আয়োজন চলছে, আবার কোনোটি প্রাথমিক প্রস্তুতিতে রয়েছে।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা আবু কাওছার জানান, তারা ১১ অক্টোবর কার্যনির্বাহী সংসদের শেষ বৈঠকে সম্মেলন প্রস্তুতিসহ আনুষঙ্গিক উপ-কমিটিগুলো গঠন করেছেন। এছাড়া ঢাকা মহানগরের উত্তর ও দক্ষিণ শাখার সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, আগামী ১৬ নভেম্বর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। তার আগেই ১১ নভেম্বর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও ১২ নভেম্বর উত্তরের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। কেন্দ্রীয় সম্মেলনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে স্বেচ্ছসেবক লীগ জেলায় জেলায় চিঠি পাঠিয়ে কাউন্সিলর ও ডেলিগেটের তালিকা পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়া পোস্টার, বিলবোর্ড ও আমন্ত্রণপত্রের কার্ডের ডিজাইনও চূড়ান্ত করেছে। আর শিগগির একটি বর্ধিত সভা করা হবে বলে জানিয়েছেন মোল্লা আবু কাওছার।

যুবলীগ এখনও আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি শুরু না করলেও প্রাথমিক প্রস্তুতি নিয়েছে। ১১ অক্টোবর সংগঠনটির নীতিনির্ধারণী ফোরাম সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে নানা কারণে বিতর্কিত যুবলীগের চেয়ারম্যানকে ছাড়া সম্মেলন অনুষ্ঠানসহ আনুষঙ্গিক জটিলতা নিরসনে সংগঠনটির সাংগঠনিক নেতা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ উপলক্ষে  ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি পাঠানো হয়েছে জানিয়ে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কিছু বিষয় আছে, যেগুলো নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ সাপেক্ষে যুবলীগ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি শুরু করবে। আগামী ২৩ নভেম্বর এই সংগঠনটির সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।’

অন্য খবর  কারা হবেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কান্ডারী

প্রসঙ্গত, ক্যাসিনো, জুয়া, মাদক, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় গ্রেফতার যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আর তাদের প্রশ্রয়দাতা হিসেবে যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীকেও দায়ী করা হচ্ছে। এ অবস্থায় তাকে ছাড়া সভাপতিমণ্ডলীর বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সম্মেলন প্রস্তুতির অংশ হিসেবে কার্যনির্বাহী সংসদের সর্বশেষ বৈঠক করেছে কৃষক লীগও। ১০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সম্মেলন সফল করার লক্ষ্যে ১৩টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ছয় নভেম্বর অনুষ্ঠেয় সম্মেলনের জন্য ১৯ অক্টোবর বর্ধিত সভা করবে সংগঠনটি। কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক রেজা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তারা জোরেশোরেই প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছেন। কাউন্সিল-ডেলিগেট তালিকা চেয়ে জেলায় চিঠি দেওয়া হয়েছে। প্রচারণার জন্য প্রয়োজনীয় নকশাগুলো চূড়ান্ত করা হয়েছে।’

তবে, সম্মেলন প্রস্তুতিতে কিছুটা পিছিয়ে আছে শ্রমিক লীগ। সংগঠনটির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৯ নভেম্বর। এ লক্ষ্যে কার্যনির্বাহী সংসদের সভা বসবে আগামী ১৬ অক্টোবর। তবে, প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে কাউন্সিলর ও ডেলিগেটের তালিকা চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আমন্ত্রণপত্র, পোস্টার ও বিলবোর্ডের নকশা চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এর সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ১৬ তারিখের বৈঠকে ঢাকা মহানগর শাখার তারিখ ও সম্মেলন প্রস্তুতি বিষয়ক উপ-কমিটিগুলো গঠন করা হবে।

অন্য খবর  এসএসসির ফলে সন্তুষ্ট নয় ঢাকার ৭৩ হাজার শিক্ষার্থী

প্রসঙ্গত, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর। এর আগে দলটির জেলা-উপজেলায় সম্মেলনের পাশাপাশি মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সম্মেলন সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে আজ (১৩ অক্টোবর) আওয়ামী লীগের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ চারটি সংগঠনের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। এ চারটি সংগঠনের পাশাপাশি সমর্থক সংগঠন মৎস্যজীবী লীগের সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী ২৯ নভেম্বর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে মৎস্যজীবী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

আপনার মতামত দিন