দোহার পৌরসভা এখন ময়লার ভাগার

398
দোহার পৌরসভা এখন ময়লার ভাগার

ঢাকার দোহার উপজেলা ও দোহার পৌরসভার  প্রাণকেন্দ্র জয়পাড়া খাল এখন আর খাল নেই, খালটি পরিনত হয়েছে দোহার উপজেলা ও পৌরসভার ময়লার ভাগারে। ফলে এক সময়ের দৃষ্টিনন্দন এই খালটি এখন পরিনত হয়েছে  রোগসৃষ্টিকারী জীবানুর প্রজননক্ষেত্র হিসাবে। শুধু খাল নয়, পুরো পৌরসভা জুড়েই যত্রতত্র ময়লা ফেলে পুরো পৌরসভাটাকে পরিনত করা হয়েছে উন্মুক্ত ময়লার ভাগারে।

বৃহস্পতিবার (৩ মে) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও উপজেলা পরিষদের মাঝামাঝি রতনচত্তরের সামনে দোহার প্রেসক্লাবে যাওয়ার সড়কের পাশেই সৃষ্টি হয়েছে এ ময়লার ভাগাড় তাছাড়া জয়পাড়া খালেও এ চিত্র দেখা যায়। ময়লার ভাগাড়টি পরিবেশ দূষণসহ মানুষের বিভিন্ন রোগ সৃষ্টির কারখানায় পরিনত হয়েছে।

এছাড়া দেখা যায় জয়পাড়া বাজার বড় ব্রিজের দু’পাশে দোহার উপজেলার বিভিন্ন ক্লিনিকের বর্জ, বাজারের ময়লা, আবর্জনা ফেলে যেন, জয়পাড়া খাল ভরাট করার প্রতিযোগিতা চলছে  ব্যাবসায়ীদের মাঝে। এ যেন এক দীর্ঘ দিনের সমস্যা নেই কোন প্রতিকার।

এসকল ময়লা, আবর্জনা পঁচে সৃষ্টি হচ্ছে দূর্গন্ধ। বাতাসের সাথে মিশে বায়ুকে করছে দূষিত। ফলে মানুষের শরীরে সৃষ্টি হচ্ছে বায়ু দূষিত ও ফুসফুসজনিত নানা রোগ। তাই পথচারী, ক্রেতা, ব্যবসায়ী ও পৌরবাসী কর্তৃপক্ষের কাছে ময়লা আবর্জনা ফেলার একটি নির্দিষ্ট স্থান তৈরী করে এই ময়লার ভাগাড় অন্যত্র সরিয়ে নেয়াসহ এর একটি সঠিক সমাধানের দাবি রাখে।

ময়লা পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে বাতাসে। নাকে কাপড় চেপে লোকজন জয়পাড়া ব্রিজ পার হচ্ছেন।পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে এ রকম ময়লা-আবর্জনার অসংখ্য স্তূপ রয়েছে। দুর্গন্ধে পৌরবাসীর পথ চলা দায় হয়ে পড়েছে। তাদের অভিযোগ, ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থান ও ডাস্টবিন না থাকায় লোকজন যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলছেন। পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা যথাযথ দায়িত্ব পালন করেন না। তবে পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, ব্যবসায়ীরা যথাযথ স্থানে ময়লা না ফেলায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

অন্য খবর  ধর্ষণের শিকার বলে স্কুলে যেতে পারবে না নবাবগঞ্জের মেয়েটি?

দোহার পৌরসভা এখন ময়লার ভাগার

যেখানে সেখান ময়লা, আবর্জনা ফেলে ময়লার ভাগাড় তৈরী হয়েছে। সেখান থেকে দুর্গন্ধ ছরিয়ে পরচ্ছে নানা জায়গায়। পথচারী, ক্রেতা, বিক্রেতা, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ এলাকার লোকজন দুর্গন্ধ থেকে রক্ষা পেতে নাক চেপে ধরে চলাচল করছে।

এ বিষয় দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এর ডাঃ জসিমউদদীন এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, এ ময়লা আমাদের হাসপাতালে না এটা জয়পাড়া বাজারে চাইনিজ রেস্টুরেন্টের ও আশে পাশের দোকান দারদের ময়লা। আমাদের হাসপাতালে যে ময়লা আছে সেগুলো আমরা আমাদের ডাস্টবিন এ রাখি সেখান থেকে পৌরসভার লোক এসে সে ময়লা নিয়ে যায়। আমরা মানুষ না বলে এমন অবস্থায় আছি।  আর সে জন্য আমরা এর প্রতিকার চাই। এ বিষয় নিয়ে আমরা এমপি মহোদয় সালমান এফ রহমানকে জানিয়েছি যে সে যেন আমাদের হাসপাতালে জন্য একটি ডাম্পিং ব্যবস্থা করে দেয়।

এ বিষয় নিয়ে জয়পাড়া ক্লিনিক এর পরিচালক দেলোয়ার হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমাদের ক্লিনিক এর যে ময়লা আছে সেগুলো পৌরসভার লোকজন এসে সকালে নিয়ে যায় এরপর তারা কোথায় ফেলে বা কি করে সে বিষয়  আমরা কিছু জানি না।

অন্য খবর  জাতীয় পার্টিকে আরও গতিশীল করতে হবে: সালমা ইসলাম

এ বিষয় জয়পাড়া বাজারে কশাই পট্টির ফারুক বলেন, জয়পাড়া বাজারের যত ময়লা আছে সব ময়লা এই খালে এনে ফেলে যায় পৌরসভার লোকজন। এখানে আমরা ময়লা ফেলি না আমরা ময়লা অন্য কোথাও নিয়ে ফালাই। পৌরসভার লোকজন এখানে যে ময়লা ফেলায় তাতে আমরা এর দূর গন্ধে থাকতে পারি না এবং জয়পাড়া ব্রিজ দিয়ে যারা আসা যাওয়া করে তাদেরও কষ্ট হয়। এর একটি সঠিক সমাধান চাই পৌরসভার কাছে।

জয়পাড়া বাজার দেবী নগর গুরুর হাটের পাশে কামার রবি বলেন, সকালে এসে পৌরসভার লোক এসে এই খালের ময়লা ফেলে যায়। আর এতে আমাদের অনেক সমস্যা হচ্ছে। আমরা এখানে বসে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। আর জয়পাড়া বাজারের যত হাসপাতালের ময়লা আছে সব ময়লা এখানে ফালানো হয়। এতে করে আমরা যেমন দূর গন্ধে ভক্তেছি তেমন সমস্যাও পরিতেছি।

দোহার পৌরসভা এখন ময়লার ভাগার

এ বিষয়ে দোহার পৌরসভার প্রকৌশলী মশিউর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ক্লিনিকের বর্জ্যর ব্যাপারে পৌর কর্তৃপক্ষের কোনো দায়িত্ব নেই, সেটা হেল্থ ডিপার্টমেন্টের দায়িত্ব। এছাড়া পৌরসভা আওতাধীন সাধারণ বর্জ্য আমরা মেইনটেন্ট করি। এখনো আমরা সরকারিভাবে ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট জমি পাই নি। তবে গতকাল ভূমি অফিস থেকে পৌর কর্তৃপক্ষকে কাজিরচর এলাকায় একটি জায়গা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে আমাদের কার্যক্রম শুরু হবে।

আপনার মতামত দিন