উপরের ছবির মতো দোহার নবাবগঞ্জের বেকারিগুলোতে এভাবেই অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে নানারকম খাদ্যদ্রব্য। বেকারিগুলোর পরিবেশ দেখলে আঁতকে ওঠবেন যে কেউ । ভয়ানক নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দোহার নবাবগঞ্জের বিভিন্ন বেকারিতে তৈরি করা হচ্ছে বিস্কুট, কেক, পাউরুটি,ফার্ষ্টফুড,শিশুখাদ্যসহ রকমারি খাদ্যদ্রব্য । আর এসব পণ্য প্রতিদিন ছড়িয়ে পড়ছে দোহার-নবাবগঞ্জের বিভিন্ন কনফেকশনারি,ফার্ষ্টফুড চা ও মুদি দোকানে। অস্বাস্থ্যকর এসব পণ্য হাত ঘুরে চলে যাচ্ছে মানুষের পেটে।

দোহারের জয়পাড়া, থানার মোর, লটাখোলা নতুন বাজার, রায়পাড়া, কার্তিকপুর, মেঘুলা, উত্তর শিমুলিয়া, নবাবগঞ্জের বান্দুরা, বারুয়াখালী, শোল্লা, গালিমপুরসহ বিভিন্নস্থানে গড়ে ওঠা এসব বেকারিগুলোর বেশিরভাগেরই নেই বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই) এর অনুমোদন, কোন কোন বেকারির নেই টিন সার্টিফিকেট,ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্র। এমনকি সাধারণ ট্রেড লাইসেন্স ও নেই কিছু বেকারির। নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মানহীন উপাদান দিয়ে দিনের পর দিন রকমারি খাদ্যদ্রব্য তৈরি হচ্ছে এসব বেকারিগুলোতে । গত পনের দিনের অনুসন্ধানে দোহার নবাবগঞ্জের বিভিন্ন বেকারি ঘুরে এমন তথ্যই জানা গেছে।

বেকারিগুলোতে নোংরা আসবাবপত্রে রাখা হয় বাহারি রকমের মুখরোচক বিস্কুট, কেক। পাশেই থাকে মেয়াদোত্তীর্ণ কিছু খাদ্যদ্রব্য । ফেরত আসা বাসি খাবারগুলো চুল্লিতে দিয়ে গরম করে নতুন মোড়কে আবার সেগুলো বিক্রি করা হয় । দোহারের একটি বেকারিতে দেখা গেল ময়দা প্রক্রিয়াজাত করার মেশিনে মরিচা পড়ে আছে তবু সেটি দিয়েই চলছে খাদ্য প্রস্তুতের কাজ । বিস্কুট ও কেক তৈরি করার বিশাল চুল্লির আশপাশে রয়েছে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ, স্যাঁতসেঁতে মেঝের মধ্যে রাখা হচ্ছে নোংরা ড্রাম। যার মধ্যে রয়েছে দীর্ঘদিনের পোড়া তেল। মেঝেতে পড়ে আছে ডিমের খোসা আর তার ওপর মশা-মাছির উপদ্রব। শুধু তাই নয়,খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুতের সময় তাতে মেশানো হচ্ছে কৃতিম রং,ক্ষতিকারক এমোনিয়া, মেয়াদ উত্তীর্ণ বেকিং পাউডার ,খোলা ময়দা, চিনি, ডালডাসহ নারা রকম ক্ষতিকারক রাসায়নিক দ্রব্য এমনকি বেকারির কারিগরদের হাতে থাকেনা গ্লাবস, ঢাকা থাকেনা মাথার চুল। সরেজমিনে দোহার নবাবগঞ্জের বিভিন্ন বেকারি ঘুরে প্রায় একই চিত্র দেখা গেছে।

অন্য খবর  শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে দোহারের পশুর হাটগুলো

এসব বেকারির তৈরি পণ্য দোহার-নবাবগঞ্জের ছোট-বড় দোকানে এবং বিভিন্ন ফার্ষ্টফুডে প্রতিদিন সকালে তাদের নিজস্ব ভ্যানগাড়িতে করে পৌঁছে দেওয়া হয়। আর এভাবেই মানহীন এসব খাদ্যদ্রব্য পৌচ্ছে যাচ্ছে সবার হাতে। যা খেয়ে পেটের পিড়াসহ নানারকম অসুখে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।

এসব বেকারি ও তাদের নোংরা কর্মকান্ড বন্ধ করতে মাঝে মাঝেই দেখা যায় দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মানহীন খাদ্য প্রস্তুত করায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক জরিমানা করতে। কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়না। কিছুদিন উৎপাদন বন্ধ রেখে তারা আবার আগের মতোই মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য মিশিয়ে খাদ্যদ্রব্য উৎপাদনে নেমে পড়েন। সচেতন মহল মনে করেন, শুধু জরিমানা করেই নয়,এসব বেকারিগুলোকে নিয়মিত তদারকি করার মাধ্যমে এই সমম্যার সমাধান সম্ভব।

এ বিষয়ে দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে.এম.আল-আমীন নিউজ ৩৯ কে বলেন, ”আমরা নিয়মিত এদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছি ভবিষতেও তা অব্যাহত থাকবে। তবে সবার আগে ভোক্তাদের সচেতন হতে হবে। তবেই এ সমস্যার সমাধান সম্ভব”।

আপনার মতামত দিন