কোন্দোলে জর্জরিত দোহার আওয়ামী লীগ: কেন্দ্রের নির্দেশে স্থগিত দুই পক্ষের সম্মেলন

329

ঢাকার দোহার উপজেলায় আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছেছে। দলটির দুই পক্ষ আগামী ১৮ ডিসেম্বর পৃথক কেন্দ্রীয় সম্মেলন করার ঘোষণা দেয়। পরিস্থিতি আরো বেসামাল হওয়ার আশঙ্কায় গতকাল শনিবার কেন্দ্র থেকে সব সম্মেলন স্থগিত করার নির্দেশ আসে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, দোহার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবুল ও সাধারণ সম্পাদক আলী আহসান খোকন দলটির একাংশের নেতৃত্ব দেন। এ পক্ষকে সমর্থন দেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান।

অন্যদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নুরুল হক বেপারী, বেলাল হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গিয়াস আল মামুন, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউদ্দিন আহম্মেদ, আমিন কম্পানিসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা আরেক অংশের নেতৃত্ব দেন। এ পক্ষকে সমর্থন দেন সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান খান।

জানা যায়, আগামী ১৮ ডিসেম্বর দুই পক্ষ পৃথক কেন্দ্রীয় সম্মেলন করার ঘোষণা দেয়। এর আগে গত ২২ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত উপজেলার নারিশা, সুতারপাড়া, নয়াবাড়ি, মাহমুদপুর, কুসুমহাটি ইউনিয়নে দুই পক্ষ পৃথক সম্মেলন করে। এ ছাড়া গতকাল মাহমুদপুর ও মুকসুদপুর ইউনিয়নে দুই পক্ষের পৃথক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। যে কারণে মঞ্চ-প্যান্ডেল সব কিছু প্রস্তুত ছিল। এর মধ্যেই কেন্দ্র থেকে সব সম্মেলন স্থগিত করার নির্দেশ আসে। এ নির্দেশ পাওয়ার পর দুই পক্ষই গতকালকের সম্মেলনসহ সব সম্মেলন স্থগিত করে দেয়।

অন্য খবর  নবাবগঞ্জে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার রোধে কর্মশালা

এ ব্যাপারে মান্নান পক্ষের নেতা নুরুল হক বেপারী ও বেলাল মোল্লা বলেন, কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে মেনে নিয়ে আমরা বাকি সম্মেলনগুলো স্থগিত করেছি। তাঁরা অভিযোগ করে বলেন, মাহবুবুর রহমান চেয়েছিল একা একা সম্মেলন করে তাঁর অনুসারী নেতা-কর্মীদের নিয়ে ঘোষিত অবৈধ কমিটিকে বৈধ করে নেবেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় কমিটি এটা বুঝতে পেরে সম্মেলন স্থগিত করেছে, এটাই আমাদের বিজয়।

অন্যদিকে মাহবুব পক্ষের নেতা নজরুল ইসলাম বাবুল ও আলী আহসান খোকন বলেন, কেন্দ্র থেকে সিদ্ধান্ত এসেছে সম্মেলন স্থগিত করার জন্য। এরপর মুকসুদপুর ইউনিয়নের আজকের (শনিবার) সম্মেলনসহ সব সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমেদ বলেন, দোহারে আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি সম্মেলনের কারণে দলীয় ইমেজ নষ্ট হচ্ছে। আওয়ামী লীগের মতো একটি বড় ও স্বনামধন্য দলে এ ধরনের বিভক্তি মেনে নেওয়া যায় না। এ বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটিও এখন অবগত। যে কারণে কেন্দ্র আমাকে ও ঢাকা বিভাগীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মদ হোসেনকে নির্দেশ দিয়েছেন দোহারের সব সম্মেলন স্থগিত করার জন্য। সে নির্দেশ অনুসারে দুই পক্ষের সম্মেলন স্থগিত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অন্য খবর  দোহারে নবনিযুক্ত ইউএনও'র বন্যা এলাকা পরিদর্শন

তিনি জানান, আগামী ৮ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় একটি সভায় দুই পক্ষের নেতাদের ডাকা হয়েছে। সেখানে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত থাকবেন। ওই সভায় বিষয়টি সুরাহা করা হবে।

আপনার মতামত দিন