আগে জীবন পরে আনন্দ। আপনার একটু আনন্দের জন্য নিজের জীবনের চাইতেও প্রিয় সন্তান যেন মৃত্যুমুখে পতিত না হয়। মনে রাখা দরকার বাইচে যে কোনো সময় ঘটতে পারে ট্রলার-নৌকা ডুবির মতো ঘটনা। আর এতে করে ঘটতে পারে প্রাণহানি। ইতিমধ্যে দুই জেলায় অনুষ্ঠিত বাইচ দেখতে গিয়ে চার শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে জানান নৌকা বাইচ ঐতিহ্য রক্ষা জাতীয় কমিটি। বুধবার সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নিরাপদ স্থানে থেকে বাইচ দেখার অনুরোধ জানিয়েছেন। একইসঙ্গে বাইচে আসা দর্শকদের নদীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ঘোরাঘুরি না করে এক সাইডে ট্রলার কিংবা নৌযানটি নোঙ্গর করে বাইচ দেখার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে চার শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় সংগঠনের পক্ষ থেকে নিহতদের মাগফেরাত এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গবীর সমবেদনা জানানো হয়েছে। দুটি ঘটনার উদ্বৃতি দিয়ে রাশিম মোল্লা বলেন, গত সোমবার কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলায় পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে নৌকা বাইচ দেখতে গিয়ে পানিতে ডুবে দুই শিশুসহ তিনজন নিখোঁজ হন। পরে তিনজনের লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। এর আগে কুষ্টিয়ার গড়াই নদীতে নৌকা বাইচ দেখতে গিয়ে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। হৃদয় বিদারক এসব ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে লক্ষ্যে আমাদের সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। তা নাহলে কয়েকশত বছরের ঐতিহ্য নৌকা বাইচ টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না। এই ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে আয়োজক, দর্শক, মালিক, মাঝি-মাল্লাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বমীল বূমিকা পালন করতে হবে।
এদিকে, নৌকা বাইচ ঐতিহ্য রক্ষা জাতীয় কমিটির সভাপতি মাসুদ মোল্লা বলেন, বহু কষ্টে দেশবাসীকে বিনোদন দিতে আমরা নৌকা বাইচ আয়োজন করে থাকি। কিন্তু অত্যন্ত দুখের বিষয় সুন্দর ও ব্যয়বহুল এই আয়েজন কিছু উচ্ছৃঙ্খল দর্শক, নৌকার মালিক ও মাঝি মাল্লাদের কারণে বাইচের পরিবেশ নষ্ট হয়। পন্ড হয়ে যায় নৌকা বাইচ । আর এজন্য নানা ঝামেলা পোহাতে হয় আয়োজকদের। যে কারণে অনেক জায়গায় এখন প্রশাসন বাইচ মেলানোরও অনুমতি দিতে চান না।
তিনি বলেন, বাইচে বিশৃঙ্খলা ঘটার সম্ভাবনা থাকে বলে আয়োজকরা এখন নৌকা বাইচ আয়োজন করতে চান না। আর এসব কারণেই প্রতি বছর বাইচ আয়োজন কমতে শুরু করেছে। গত বছরের তুলনায় এ বছরও নৌকা বাইচ আয়োজন কমেছে। ঢাকা জেলায় এ বছর এখন পর্যন্ত মাত্র দুটি নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। অথচ বিগত বছর গুলোতে ১৫/২০টি নৌকা বাইচ হতো।
