পদ্মায় আবারো বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার

292
পদ্মা

পদ্মা নদীর মাঝে বাঁধ দিয়ে আবার মাছ ধরা শুরু করেছে একটি চক্র। ২০১৬ সালের পর চক্রটি আবার সক্রিয় হয়েছে। তারা পদ্মায় পানি চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বাশের ব্লক ব্যবহার করে মাছ শিকার শুরু করেছে। যার নেপথ্যে রয়েছে  স্থানীয় প্রভাবশালী মুরাদ মৃধা ও কাশেম মেম্বার নামে দুই ব্যক্তি। আর এ কাজে তাঁদের সহযোগী হিসেবে আছেন আরও কয়েকজন। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী নদীতে এভাবে বাঁধ দেওয়ার কোন ধরণের নিয়ম না থাকলেও তা তোয়াক্কা করেনি ওই দুই প্রভাবশালী ব্যক্তি।

বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, দোহার উপজেলার মৈনট দিয়ে প্রবাহিত পদ্মা নদীতে বাঁশ দিয়ে আড়াআড়ি দুটি ব্লক বাঁধ দেওয়া হয়েছে। নদীর ওপারে রয়েছে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার গোপালপুর ট্রলারঘাট। বাঁশ ও জালের দীর্ঘ এই দুটি বাঁধ নদীর মূল প্রবাহে আড়াআড়িভাবে তৈরি করা হয়েছে। বাঁশের সঙ্গে আটকানো জালের নিচে ভারী পাথর বাঁধা। নিচের অংশে রয়েছে ‘রাক্ষুসে জাল’। এমন জাল ইলিশ ধরার ফাঁদ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আড়াআড়ি এমন বাঁধে নৌযান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে।

সেখানে কর্মরত মৎস্যজীবীরা জানান, প্রতি দুই ঘণ্টা পর পর জালগুলোতে মাছ ধরা পড়েছে কি না, তা দেখা হয়। ইলিশ, ছোট ছোট জাটকা সহ সবই ধরা পড়ছে এ জালে। এ মাছ ধরার কাজ করেণ বেশ কয়েকজন জেলে। নৌকা ব্যবহার করে তাঁরা জালে আটকানো মাছগুলো সংগ্রহ করেন।

অন্য খবর  দোহার-নবাবগঞ্জের সর্বত্র বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে হবে: সালমা ইসলাম

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেখানে দায়িত্বে থাকা জেলেরা বলেন, ‘মুরাদ মৃধা ও কাশেম মেম্বার আমাদেরকে মাছ ধরার কাজে খাটাচ্ছেন। কোনো কোনো দিন ১০/১২ মণ মাছ ধরা পড়ে। আবার কোনো দিন চার-পাঁচ মণ মাছ পাওয়া যায়। বেশির ভাগ মাছ দোহারের মৈনট ঘাটে বিক্রি করা হয়। গত ২/৩ সপ্তাহ ধরে মাছ ধরার কাজ চলছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মৈনট ঘাটের এক মাছ ব্যবসায়ী জানান, এভাবে নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ শিকারের কারণে সাধারণ জেলেরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। বাঁশের ওই দুটি বাঁধে মাছ বেশি আটকা পড়ছে। তিনি বলেন, এই বাঁধের কারণে নদীতে মাছের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এর ফলে এ অঞ্চলের মাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটবে না।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মুরাদ মৃধা বলেন, “আমি এই বাঁধের সাথে জড়িত নই। কাশেম মেম্বারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন, ওনি সব জানেন।”

বিষয়টি জানতে কাশেম মেম্বার কে ফোন দেয়া হলে তিনিও বাঁধের সাথে তাঁর সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেণ। তবে তিনি এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য এই প্রতিবেদককে অনুরোধ করে বলেন, ‘আসেন আমরা একটু সামনে বসে কথা বলি।’

অন্য খবর  দোহারে বিলুপ্তির পথে খেজুর রস

দোহার উপজেলা সহকারি মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বলেন, বাঁধের বিষয়ে আমরা অবগত নই। মাছ শিকারে নদীতে এভাবে বাঁধ দেয়া দেশের প্রচলিত মৎস্য আইনের পরিপন্থী। যদি এরকম কিছু হয়ে থাকে তাহলে ২/১ দিনের মধ্যে আমরা অভিযান চালাব।

আপনার মতামত দিন