এখন একটু খালি জায়গা পেলেই দোহার – নবাবগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে শোনা যায় আউট! ব্যাট টাচ! এসব শব্দ, একই সাথে আলোর ঝলকানি, ছেলে,মধ্যবয়সি সকলের হৈ-চৈ এ সরব এলাকাটি। একটু যেন উৎসব মুখর অবস্থা। অনেকের কাছে এগুলো পরিচিত নাম। এসব ব্যাডমিন্টন খেলার প্রচলিত কয়েকটি নাম। প্রকৃতিতে আস্তে আস্তে বইতে শুরু করেছে শীতের হাওয়া। আর শীত মানেই ব্যাডমিন্টন খেলা। শীতের আগমনী বার্তা বোঝার অন্যতম একটি চিত্র এই খেলাটি।
শীত আসলেই দোহার-নবাবগঞ্জের প্রতিটি অলিতে গলিতে ব্যাডমিন্টন খেলার ধুম পড়ে। সন্ধ্যা থেকে রাত অবধি খেলায় অংশ নেন তরুণরা। তালিকা থেকে বাদ পড়েন না মধ্যবয়সী ও মেয়েরাও। তারাও শীতের পরশ বুলানো কুয়াশায় মত্ত থাকেন ব্যাডমিন্টন খেলায়। রাস্তার পাশে অলি গলিতে ,বাড়ীর পাশে খালি স্থানে বা মাঠে শুরু হয়ে যায় ব্যাডমিন্টনের মাঠ সাজানোর প্রস্তুতি। লাইট, নেট, কক, স্ট্যান্ড। টানা খেলতে খেলতে শরীর ঘেঁমে অস্থির। তবুও মানুষ উপভোগ করে খেলাটি। বাংলাদেশের মানুষ ক্রিকেট ও ফুটবল খেলতে অভ্যস্ত থাকলেও ব্যাডমিন্টন নিয়ে উৎসাহ উদ্দীপনা কোনো অংশেই কম নয়। বরং শীতকাল আসলেই এই খেলাটি সব খেলাকে ছাপিয়ে যায়।
দোহার – নবাবগঞ্জে মরহুম আশরাফ আলী স্মৃতি ব্যাডমিণ্টন টূর্ণামেণ্ট অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি লীগ। এটি পরিচালনা করে থাকেন সাবেক জাতীয় ব্যাডমিণ্টন চ্যাম্পিয়ন ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার শামীম আশরাফ চৌধুরী এবং আয়োজন গ্রুপের চেয়ারম্যান ইভু চৌধুরী।
প্রতিদিনিই দোহার- নবাবগঞ্জ উপজেলা পরিষদে কম্পাউন্ডে উপজেলা চেয়ারম্যান, নির্বাহি কর্মকর্তা সহ-বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি পেশার মানুষ প্রতিদিন খেলায় অংশ নেন। এছাড়া থানায় নিয়মিত ডিউটি পালনে ক্লান্ত পুলিশ কর্মকর্তারাও একটু বিনোদন খুজে পান এই ব্যাডমিণ্টন খেলায়। শীত আসলেই দোহার নবাবগঞ্জের খেলার সামগ্রী বিক্রির দোকান গুলোতে ৫০০ থেকে শুরু করে ৪০০০ টাকার ব্যাড নিয়মিত বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ফেদারতো আছেই।
শাহরিয়ার বাবু যিনি এক সময়ের ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে ভলিবলে সর্বোচ্চ স্কোরার ছিলেন তিনি ব্যাডমিন্টন খেলছিলেন দোহারের জয়পাড়াতে, তিনি নিউজ৩৯কে বলেন, ‘আমি এখানে প্রায় ১০ বছর ধরে ব্যাডমিন্টন খেলি। এখন এমনিতে খালি জায়গার অভাব। তার উপর বিভিন্ন স্থানে মাঠের বেহাল অবস্থা। এখানে ব্যাডমিন্টন খেলে যে মজাটা পাওয়া যায় অন্য কোনো জায়গায় তা পাওয়া যায় না।’
দেশের তরুণদের কাছে এটি ‘মৌসুমী’ খেলা নামে পরিচিত। শীতের রাতের ব্যাডমিন্টন কোর্টগুলো প্রমাণ করে দেয় খেলাটি এই দেশের মানুষের কাছে কতটুকু জনপ্রিয়। সারাদিন ক্লাস কোচিংসহ ব্যস্ত সময় পার করে সন্ধ্যা হলেই তরুণ ছেলেমেয়েরা হাজির হন ব্যাডমিন্টন খেলতে। পাড়ায় পাড়ায় শুরু হয়ে যায় ‘ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট’।