দোহার থানা আওয়ামীলীগের নতুন কমিটি এখন সময়ের দাবি (পর্ব -০২)

1295

রাজনীতির গতি-প্রকৃতিটাই এমন সকালের সোনামাখা রোদ বুকে ডিগবাজি খাওয়ার সুখ শেষ করতে না করতেই মধ্য দুপুরে ঈশানকোণে মেঘ জমে ওঠে। আবার গোধূলিবেলায় পশ্চিমে লাল আভা ছড়িয়ে সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্যের মুগ্ধতা কাটতে না কাটতেই আসে নতুন খবর। কিন্তু এখন রাজনীতি অতীতের মতো ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ নয়, ঝড়ের পূর্বাভাসও নেই। নেই কোন অসম প্রতিযোগীতা। একটা অনিয়মই যেন নিয়মে পরিনত হয়ে চলছে দোহারের বর্তমান রাজনীতি। নিস্তরঙ্গ রাজনীতির পর্দার অন্তরালে চলছে একে অপরকে ঘায়েল করার কুটকৌশল।দোহার থানা আওয়ামীলীগের নতুন নেতৃত্বে কে আসবে সেটা নিয়ে হচ্ছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। হচ্ছে নানা দৃষ্টিভঙ্গির ওপর বিস্তর আলাপ-আলোচনা, জল্পনা-কল্পনা।সবই অদৃশ্য পর্দায় অন্তরালে।

দোহার থানা আওয়ামীলীগ রাজনৈতিক ভাগ্য কোন পরিণতির মুখোমুখি হবে— সেটি নিয়েও দোহার জুড়ে নানা আলাপ-আলোচনা, জল্পনা-কল্পনার মৃদুমন্দ ঢেউ উঠেছে। বর্তমানে দোহারের রাজনীতিতে যে অগুছালো অবস্থা আর দুঃসময় চলছে তা যে সামনে আরও কঠিন ও জটিল রূপ নেবে, তারই ইঙ্গিত বহন করছে অনেকে। এক নেতার অন্য নেতার প্রতি সন্দেহ ঘনীভূতই হচ্ছে আদৌ দোহারের নতুন কমিটি হবে কিনা ?বর্তমান কমিটি মেয়াদকাল ১৫ বছর চলছে তবুও তারা নিজেদের পদ ধরে রাখতে তিন নেতার দরবারেই তদবীরে ব্যস্ত।দোহারের রাজনৈতিক ইতিহাসে এমন দুঃসময় অতীতে আর কখনো আসেনি। সামনে দলের জন্য আরো কঠিন পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে বলে অনেকে আশংকা করছে।ক্ষমতার রাজনীতির হাওয়া কোন নেতার অনুকূলেই বইবে সেটাই এখন বিবেচ্য?  ক্ষমতার রাজনীতির প্রতিকূল-বৈরী রাজনৈতিক আবহাওয়ার মুখোমুখি দোহারের স্বচ্ছ, পরিচ্ছন্ন আর উদারপন্থীরা। সুবিধাজনক অবস্থানে আছে দলে অনুপ্রবেশকারী নব্যরা। যদি ধারাবাহিক কমিটি হতো তাহলে সেই রাজনৈতিক আবহাওয়া তাদের প্রতিকূলে বইত। এখনও নতুন কমিটি হলে দোহার থানা আওয়ামীলীগের পালে নতুন হাওয়া লাগবে। দলে অনুপ্রবেশকারী অনেকেই রাতারাতি তিন নেতার আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে আওয়ামী লীগের আস্থা ও অনুকম্পা লাভের প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হচ্ছে। পর্দার অন্তরালে নেতৃত্ব হতাশাক্ষুব্ধই নন; বিষণ্নচিত্তে অসহায় পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে। তরুণ নেতৃত্বের প্রাণশক্তি দলে অনুপস্থিত। ক্ষমতার রাজনীতির বাইরে ছিটকে পড়া হতাশাক্ষুব্ধ একটি অংশ যে কোন সময় নতুন কমিটির দাবিতে মাঠে যে নামবে না তা বলা যায় না। ইতিহাসের শোধের ধারায় এই কমিটি রাজনৈতিক ধারার বাইরে যে ছিটকে পড়বে না তাও বলা যাচ্ছে না। কারন এই কমিটির শক্তি ও সামর্থ্য এখনও দৃশ্যমান নয়।রাজনীতির গতিপথ বড়ই জটিল। সামনে রাজনীতির কূটচাল কারো জন্যই সুখকর হবে না। যাদের চরিত্রে সারল্যতা রয়েছে। মানুষের মনের ভাষা পাঠ করতে জানেন, তাদের সমন্বয়ে এখনই নতুন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়া জরুরী।দোহার থানার রাজনীতিতে এখন সততার বড়ই অভাব রয়েছে। সততার ঘাটতি পূরণ করতে হলে সৎ মানুষদের রাজনীতিতে নিয়ে আসতে হবে। ভালো মানুষেরা রাজনীতিতে আসলেই; রাজনীতি ভালো হয়ে যাবে। ভালো মানুষেরা রাজনীতি না করে দূরে সরে গেলে খারাপ লোকেরা রাজনীতির মঞ্চ দখল করবে, করছেও।এদের কারনেই রাজনীতির ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা কমে গেছে। রাজনীতিতে যখন ভালো মানুষ আসবে তখন রাজনীতি জনগণের কাছে আকর্ষণীয় হবে।রাজনীতিতে সৎ, যোগ্য ও মেধাবীদের টেনে আনা এখন সময়ের দাবী।দোহারের রাজনীতির গৌরবময় উত্তরাধিকারিত্ব কে কতটা বহন করছেন বুকে হাত দিয়ে সবাই বলতে পারবেন?

অন্য খবর  দোহারে জেলা পরিষদের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন

আওয়ামী লীগের যখন বিপর্যয় আসে, তখন সুবিধাভোগী বসন্তের কুকিলদের খুঁজেও পাওয়া যায় না। আদর্শিক কর্মীরাই দুঃসময়েরই মুখোমুখি হয়ে থাই পাহাড়ের মতো ভারী বোঝা কাঁধে নিয়ে টানে। ইতিহাসের পরতে পরতে সবচেয়ে অগ্নিপরীক্ষা অবহেলিত বঞ্চিত নেতা-কর্মীরাই দিয়েছে। কিন্তু এই আদর্শিক নেতা-কর্মী দলের কাঠামোতে ঠাঁই পাচ্ছে না। নেতৃত্বে উঠে আসতে পারছে না। সমাজে ভালো মানুষ হিসেবে চিহ্নিত হলেও দলের নেতৃত্বে আসতে পারছে বা আসতে দেয়া হচ্ছে না।কারন তারা নেতাদের কাছে তারা গুরুত্বপূর্ণ নয়। তাদের টাকা, হোন্ডা, গুণ্ডা হাতে নেই বলে তাদের কাছে টানা হয় না। দলের মাঠের নেতৃত্বে তাদের ঠাঁই হয় না। ক্ষমতার ছায়ায় থেকে রাতারাতি যারা বিত্তবৈভব গড়েছে, নেতাদের কাছে তাদেরই কদর বেশি। কিন্তু সৎ আদর্শবানদের কি মাঠের নেতৃত্ব থেকে কী দূরে সরানো সম্ভব ? ১৬ বছর ধরে দোহার থানার আওয়ামীলীগের কমিটি বন্ধ থাকার কারনে আদর্শিক তরুণ রাজনৈতিক কর্মী তৈরির প্রক্রিয়া রুদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সৎ,আদর্শিক দলের প্রতি অনুগতদের জীবন ও জীবিকার জন্য, পরিবার ও পরিজনের জন্য সৎ জীবনযাপন করে তাদের টিকে থাকতে হয়। তাদের রাজনৈতিক, সাংগঠনিক দক্ষতা আছে। সমাজে ক্লিন ইমেজ আছে।কিন্তু তাদের কৌশলে রাখা হয়েছে কমিটির বাইরে। সৃজনশীল, মেধাবী, আদর্শিক নেতৃত্বের সমন্বয়ে দোহার থানা আওয়ামী লীগ সাজাতে পারলে আগামী দিনের মাঠের বিরোধী আন্দোলন ঢেকাতে ভুমিকাই রাখবে না দলকেও আরো সুসংগঠিত করবে।

অন্য খবর  ব্যারিস্টার নাজমুল হুদাকে দন্ড কমিয়ে ৪ বছরের সাজা, ৪৫ দিনের মাঝে আদালতে আত্মসমর্পণ

তাই দোহার থানা আওয়ামীলীগের নতুন কমিটি এখন সময়ের দাবী।

আপনার মতামত দিন