দোহার-নবাবগঞ্জের চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, দুভোর্গে মানুষ

287

নিউজ৩৯.নেট ♦ দোহার-নবাবগঞ্জের চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, দুভোর্গে মানুষটানা বর্ষণে পদ্মা নদীর অব্যাহত পানি বৃদ্ধিতে ঢাকার দোহারের ৬ ইউনিয়ন ও নবাবগঞ্জ উপজেলার ২ ইউনিয়নের চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে এ অঞ্চলের অর্ধলক্ষাধিক নিম্ন আয়ের মানুষ। অন্যদিকে, বিশুদ্ধ পানির সংকটে নানান পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বন্যা কবলিত মানুষ। পানিবন্দী এলাকায় সরকারি-বেসরকারি কোন ত্রাণ আসে নি বলে এলাকাবাসী জানান।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র শ্রীনগরের ভাগ্যকুল রেঞ্জ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘন্টায় পদ্মা নদীর পানিবৃদ্ধি পেয়ে আজ বুধবার সকাল পর্যন্ত বিপদ সীমার ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাসে দেখা গেছে আগামীকাল বৃহস্পতিবারের পর থেকে পানি আরো ১০-১১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেতে পারে। 

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পদ্মানদীর অব্যাহত পানি বৃদ্ধিতে দোহার-নবাবগঞ্জ-মানিকগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধের বিপরীত অংশের প্রায় ১৩ গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। দোহারের নারিশা জোয়ার, চর বিলাশপুর, কৃষ্ণদেবপুর, কুতুবপুর, কুলছুরি, দেবীনগর, বায়রাচর, চর মাহমুদপুর, চর নারায়ণপুর, হোসেনপুর, সুখদেবপুর, চর কুসুমহাটির কিছু অংশ পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া দোহার ও চরভদ্রাসন উপজেলার বিরোধপূর্ণ উত্তর নবাবগঞ্জ এলাকাসহ ৩০ গ্রামের প্রায় সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানিবন্দী পরিবার গুলো ঘরের ভিতর মাচান বানিয়ে বসবাস করছে। খরের গাদা ও কচুরিপানার ডিবি বানিয়ে তাতে গবাদিপশু ঠাঁই দিয়েছে। 

অন্য খবর  দোহারে রুবেল হত্যার বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল

নবাবগঞ্জ উপজেলার জয়কৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোতাহার হোসেন জানিয়েছেন, ইউনিয়নের দোহার-নবাবগঞ্জ-মানিকগঞ্জ শহর রক্ষাবাঁধের বিপরীত অংশের কঠুরী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঘোষাইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাজাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানিতে ডুবে যাওয়ায় স্কুল বন্ধ রয়েছে। দুর্গত এলাকায় সরকারি-বেসরকারি কোন রকমের ত্রাণ আসে নি। 

দোহার উপজেলার নারিশা ইউপি চেয়ারম্যান ডা. আবুল কালাম জানান, ইউনিয়নের ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। আজ বুধবার পর্যন্ত নারিশা পশ্চিমচর ২টি পাঁকা রাস্তা ও একটি ব্রিজসহ শতাধিক বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। 

কুসুমহাটি ইউপি চেয়ারম্যান হাফেজ আব্দুল ওয়াহাব দোহারী জানান, তার ইউনিয়নের দেওভোগ, চরকুসুমহাটি, চরপুরুলিয়া, সুন্দরীপাড়া, কার্তিকপুর, চরকুসাই গ্রামের বেড়ীবাঁধের অপর অংশসহ নিমাঞ্চল চরাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এ পর্যন্ত সরকারি কোন সহায়তা আসে নি।

চরকুসুমহাটি গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক জানান, বাড়ি ঘর ও ক্ষেতের ফসল তলিয়ে গেছে। বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের অভাবে স্ত্রী, সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। তাই বাধ্য হয়ে দুদিন আগে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে স্থানীয় একটি বাড়িতে উঠেছি। 

দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের (আরএমও) ডা. জসীম উদ্দিন বলেন, পানিবাহিত রোগী যেমন- ডায়রিয়া বা গোটা, ঘা, পাঁচরা জাতীয় রোগী আসছে তবে নিয়মিত যেমন আসে। তবে প্রতি বছর পানি চলে যাওয়া সাথে সাথে এসব রোগী বৃদ্ধি পায়। 

অন্য খবর  দোহারে জামায়াতের ঈদ পুনর্মিলনী

দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল করিম ভূইয়া বলেন, বন্যা দুর্গতদের জন্য ত্রাণ বরাদ্ধ চেয়ে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

আপনার মতামত দিন