ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর পথে এগোচ্ছে সাহেবখালী খাল

পরস্পরের উপর দায়িত্ব চাপিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে দোহারের প্রানকেন্দ্র জয়পাড়া বাজারের মাঝখান থেকে বয়ে যাওয়া সাহেবখালী খালকে। একদিকে বাজারের ময়লা আবর্জনার স্তুপ, অপরদিকে জয়পাড়া বাজার ব্রীজের পাশে পলিথিন ও ময়লার স্তুপ, সব মিলিয়ে মুমুর্ষ অবস্থায় জয়পাড়া খাল। দোহার পৌরসভা বলে খালের ব্যাপারে তাদের কোন দায় দায়িত্ব নেই, উপজেলা প্রশাসন বলছে খালের দায়িত্ব দোহার পৌরসভার উপর, আমাদের কিছু করার নেই। অপরদিকে বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছে প্রতিমাসে বাজারের দোকান থেকে মোটা ট্যাক্স নিয়ে যাচ্ছে দোহার পৌরসভা। জয়পাড়া বাজারের প্রাণ এই খালটা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে তা নিয়ে তাদের কোন মাথা ব্যাথাই নেই। দোহার পৌরসভার যত চিন্তা সেটা শুধু ট্যাক্সকে নিয়েই। সাধারন মানুষ বা ব্যবসায়ীদের কল্যানের চিন্তা তাদের নেই। এই তিন পক্ষের অসহযোগীতার কারনে মরে যাচ্ছে জয়পাড়া সাহেবখালী খাল।

ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর পথে এগোচ্ছে সাহেবখালী খাল

এক সময়ের সদা স্রোতবহমান জয়পাড়া বাজারের মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া সাহেবখালী খাল আজ মৃতপ্রায়। অবৈধ দখল, ময়লা আবর্জনার স্তুপ সব মিলিয়ে সাহেব খালী খাল আজ মৃতপ্রায়। বর্ষার সময় যা একটু স্রোত থাকে বর্তমানে খালে, তাছাড়া শুকনো মৌসুমে খাল শুকিয়ে যায়। পদ্মার পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় খালে শুকনো মৌসুমে পানি থাকে না প্রায়। তার উপর জয়পাড়া বাজারের ময়লা আবর্জনা এই মৃতপ্রায় খালকে মেরে ফেলার বাকি কাজটুকুও সেরে দিচ্ছে। ফলে ময়লা আবর্জনার কারনে একদিকে যেমন দুষিত হয়ে পড়েছে সাহেবখালী খাল, একই সাথে জয়পাড়া বাজারের ময়লা আবর্জনা দখল করে নিচ্ছে খালের মুখ। বাধা সৃষ্টি করছে পানি প্রবাহে। ফলে পানি হয়ে পড়ছে বদ্ধ।

অন্য খবর  বাঁশতলা থেকে মৈনটঘাট অভিভাবকহীন এক সড়ক!

ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর পথে এগোচ্ছে সাহেবখালী খাল

জয়পাড়ার সাহেবখালির এই করুন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নিউজ৩৯ কথা বলে দোহার উপজেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তরের সাথে। প্রধান প্রকৌশলী এই সময় না থাকলেও প্রকৌশল অধিদপ্তর জানায়, এই খালের দায়িত্ব পৌরসভার। তাই তারাই ব্যাপারটা সমাধান করতে পারবে। অপরদিকে দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম আল আমিনের সাথে যোগাযোগ চেষ্টা করে। কিন্তু তিনি দপ্তরের কাজে ঢাকায় থাকার কারনে তার সাথে যোগাযোগ করা যায় নি।

ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর পথে এগোচ্ছে সাহেবখালী খাল

সাহেবখালি খালের এই করুন অবস্থা নিয়ে নিউজ৩৯ কথা বলে দোহার পৌরসভার প্রধান প্রকৌশলী মশিউর রহমানের সাথে। মশিউর রহমান বলেন, খালের ব্যাপারে দোহার পৌরসভার কিছু করার নেই। জয়পাড়া বাজারের ব্যবসায়ীদের কারনেই আজ খালের এই অবস্থা। তাদের বার বার বলা হয়েছে প্রতিদিন রাতে আপনাদের ময়লা আপনারা দোকানের সামনে একটা ব্যাগে ভরে রাখবেন। সকালে পৌরসভার পরিচ্ছনতা কর্মীরা তা নিয়ে আসবে। কিন্তু তাদের কোন সহযোগিতা পাই নি। খালের এই অবস্থার জন্য আমাদের কোন দায় নেই।

অপরদিকে জয়পাড়া বাজার ব্যবসায় সমিতির সভাপতি, ব্যবসায়ী নেতা আব্দুল কুদ্দুস বলেন, দোহার পৌরসভা শুধু টাকার দিকেই তাকিয়ে থাকে। তাদের বার বার বলা হয়েছে আমাদের ময়লা ফেলার জন্য একটা নির্দিষ্ট জায়গার ব্যবস্থা করে দেন, সবার জন্য টয়লেটের ব্যবস্থা করে দিন। কিছুই করে না তারা। প্রতিবছর জয়পাড়া গরুর হাট থেকে কোতি টাকার ইজারা নেই, বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অংকের ট্যাক্স নেয়। কিন্তু বাজারের উন্নয়নে, খালকে বাচিয়ে রাখার তাদের কোন উদ্যোগই। খালের আজকের এই অবস্থার জন্য দোহার পৌরসভাই দায়ি।

অন্য খবর  অগ্নিকান্ডে নিহতের পরিবারের পাশে নির্মল রঞ্জন গুহ

ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর পথে এগোচ্ছে সাহেবখালী খাল

এই তিন পক্ষের চাঁপায় পড়ে সাহেবখালী খাল আজ মৃতপ্রায়। তিন পক্ষের সম্বনয়ের মাধ্যমে কোন উদ্যোগ নেয়া না হলে অচিরেই এই খাল মৃত খালে পরিনত হয়ে দোহারের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে।

আপনার মতামত দিন