দোহার-নবাবগঞ্জের ইটভাটায় শিশু শ্রম!

 

দোহার-নবাবগঞ্জের ইট ভাটায় কাজ করছে শিশু শ্রমিক। পেটের তাড়নায় প্রতিদিন অন্তত কয়েকশ শিশু শ্রমিক দোহার-নবাবগঞ্জের বিভিন্ন ইট ভাটায় কাজ করছে। অথচ আইন অনুযায়ী ১২ বছরের নিচের কোনো শিশু শ্রমিককে এ রকমের কাজে নেওয়ার কথা নয়।

 

নবাবগঞ্জের সাহেবগঞ্জ এলাকায় কাজ শুরু করেছে আট বছর বয়সী পলাশ। প্রতিদিন ১ হাজার ইট বহনের কাজ করে সে। মজুরি পায় মাত্র ১শ টাকা। দোহার-নবাবগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে ২০টি ইটের ভাটা। আর সেই ভাটায় কাজ করছে ১২ বছরের নিচের কয়েকশ মেয়ে ও ছেলে শিশু শ্রমিক। তবে কয়েকজন ভাটা মালিকের দাবি, বাবা-মায়ের সঙ্গেই তারা ভাটায় আসে। তবে ভাটাগুলোর শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা মজুরি নিয়েই সেখানে কাজ করছে।

 

দোহার উপজেলার ইসলামপুর ইটভাটায় কাজ করে ছয় বছরের শিশু মিরাজ। পেটের দায়ে বরিশাল থেকে মায়ের সঙ্গে এসেছে ইটের ভাটায় কাজ করতে। কথা হয় মিরাজের সাথে। সে জানায়, এ ভাটার মালিক আমাগো বাড়িতে গিয়ে মায়রে ৩০ হাজার টাকা দাদন দিছে। দাদনের টাকা শুধানের জন্যই মায়ের সঙ্গে আমিও চইল্যে আইছি, ভাটায় কাম করতে। কাম না করলে খামু কি? কি কাজ করো জানতে চাইলে মিরাজ বলে, মাথায় কইর্যে রোইদের শুকনা ইট খোলায় তুলি। পুড়া অইলে ওগুলা আবার নিয়া সাজাইয়্যা রাখি। বড় কষ্টের কাম। অনেক সময়ে ইট মাথায় থাইক্যা পায়ে পইড়া ব্যথা পাই।

অন্য খবর  যে গ্রামে নেই শিক্ষার আলো

 

এ দৃশ্য দোহার-নবাবগঞ্জের প্রায় সবগুলো ইটভাটার। প্রতিটি ইটভাটায় ১২ বছরের কম বয়সী অনেক শিশু কাজ করছে। ইট তৈরি ও টানার কাজ করে এসব শিশুরা। প্রত্যেক শিশু ২০ কেজি ওজনের সমান কাঁচা ইট মাথায় করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যায়। এই শিশু শ্রমিকদের অভিভাবকদের অনেককে ভাটার মালিকরা দাদন দিয়েছেন। শিশুদের বাবা-মা কারখানার মালিকদের কাছ থেকে ৬ থেকে ৮ হাজার টাকা নিয়েছেন। ওই টাকা নেওয়ার কারণে ইটের কারখানায় কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে এসব শিশুরা। কাজ শেষে এসব শিশু ভাটাতেই ঘুমায়। খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠেই শুরু হয় কাজ। মাঝে কিছু সময় বিরতির পর টানা কাজ করে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।

 

দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম আল-আমীন বলেন, এ বিষয়ে জানা ছিল না। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার মতামত দিন