পর্নোগ্রাফি দেখা কমছে?

479
পর্নোগ্রাফি দেখা কমছে?

 

পর্নো ওয়েবসাইট বন্ধের উদ্যোগসরকার দেশে পাঁচ শতাধিক পর্নোসাইট বন্ধের পরে ব্যান্ডউইথের ব্যবহারও কমেছে। যে পরিমাণ ব্যান্ডউইথ ব্যবহার হতো পর্নোগ্রাফি দেখায় তার ৩০ ভাগেরও বেশি ব্যান্ডউইথের ব্যবহার কমেছে বলে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবি সূত্রে জানা গেছে। সূত্র জানায়, দেশে পর্নোগ্রাফি দেখায় ব্যান্ডউইথ ব্যবহার হতো ৭০ গিগারও (জিবিপিএস) বেশি। বর্তমানে এই ব্যান্ডউইথের ব্যবহার ৩০ শতাংশ বা ২১ গিগারও বেশি কমেছে।

প্রসঙ্গত, দেশে বর্তমানে ব্যবহার হচ্ছে ৩৫০ গিগা ব্যান্ডউইথ। এর ২০ শতাংশ ব্যান্ডউইথ অর্থাৎ ৭০ গিগা ব্যবহার হতো পর্নোগ্রাফির পেছনে। সরকার ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে ৫৬০টি পর্নোগ্রাফি সাইট বন্ধের ঘোষণা দেয়। এই ঘোষণা কার্যকরের অব্যবহিত সময়ের পর থেকে ব্যান্ডউইথ ব্যবহার কমতে থাকে। যে পরিমাণ সাইট আগে দেখা হতো তার সিংহভাগ কমে যাওয়ায় (লিংক ব্লক) হওয়ায় এসব সাইট দেখাও কমেছে।

জানতে চাইলে আইএসপিএবির সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা তালিকার (বিটিআরসির পাঠানো) ৫৬০টির মধ্যে ৯০ শতাংশ সাইট বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছি।’ তালিকার অবশিষ্ট ১০ শতাংশ সাইট বন্ধ করতে সময় লাগছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু সাইট ক্লাউডে হোস্ট করা। ফলে আইপি ধরে ধরে সেগুলো বন্ধ করতে হচ্ছে। দেখা গেল একটা আইপি ধরে বন্ধ করা হলো, সঙ্গে সঙ্গে আরেকটি আইপির মাধ্যমে ওই সাইট চালু হয়ে গেল।’

অন্য খবর  ফেসবুকে নিষিদ্ধ মিয়ানমার সেনাপ্রধান

তবে উল্লেখযোগ্য এবং বেশি পরিচিত সাইটগুলো বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে বলে জানান তিনি। এমদাদুল হক বলেন, ‘মেজর মেজর সাইট বন্ধ হওয়ার ফলে ৩০ শতাংশর বেশি ব্যান্ডউইথ ব্যবহার কমেছে। আমাদের কাজ চলছে। আগামী দিনে এই ব্যবহার আরও কমবে।’ তিনি উল্লেখ করেন, ব্যান্ডউইথের ব্যবহার কমায় (রাউটার ধরে পরীক্ষার ফলে) এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে পর্নোগ্রাফি দেখায় ব্যান্ডউইথ ব্যবহার কমেছে।

এমদাদুল হক আরও জানান, পর্নোগ্রাফি সাইট বন্ধে গঠিত কমিটি মনিটরিংয়ের কাজ করে যাচ্ছে। শিগগিরিই একটি বৈঠক ডাকা হবে। ওই বৈঠকে এই কাজের সর্বশেষ অগ্রগতি জানানো হবে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, ‘যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে তাতে করে পর্নোগ্রাফি সাইট হয়তো শতভাগ বন্ধ করা সম্ভব হবে না। কারণ প্রযুক্তি কখনও বন্ধ করা যায় না। দেখা যাবে বিকল্প পথেও মানুষ এসব সাইটে প্রবেশ করছে।’ তবে এই উদ্যোগ নিয়ে যে সবার মাঝে একটা বার্তা পৌঁছনো গেছে, সচেতনতা তৈরি করা গেছে— এটাই ভবিষ্যতে অনেক কাজে দেবে বলে মনে করেন তিনি।

এদিকে, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, প্রথম দফায় ৫৬০টি সাইট বন্ধের (দেশি ও বিদেশি মিলিয়ে) তালিকা করা হলেও এখনও দ্বিতীয় দফার তালিকা করা হয়নি। তালিকা হাতে পেলে কমিশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগ তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তালিকা চূড়ান্ত করে বন্ধের উদ্যোগ নেবে বলে জানিয়েছে ওই সূত্র।

অন্য খবর  নাসার ‘ইনোভেটর অব দ্য ইয়ার’ বাংলাদেশি মাহমুদা

উল্লেখ্য, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিবের বরাবর ‘এক পিতার লেখা চিঠি’র সূত্র ধরে সরকার পর্নোগ্রাফি সাইট বন্ধের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। গত ২৮ নভেম্বর সচিবালয়ে অনলাইনে আপত্তিকর কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক বৈঠকে পর্নোগ্রাফি ওয়েবসাইট বন্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই বৈঠকে একটি কমিটিও গঠন করে দেওয়া হয়। ওই কমিটিকে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতেও বলা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ কাজ শুরু করে বলে জানা গেছে।

আপনার মতামত দিন