সাভারে সরকারি কালভার্ট বন্ধ করে মাছ চাষ

594

সাভারের পাথালিয়া ইউনিয়নের হাঁটুভাঙ্গা এলাকার প্রভাবশালী এক মাছ ব্যবসায়ীর কারণে ৩০টি পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। জানা যায়, ওই এলাকার পাশে একশ’ শতক জমিতে মাছ চাষ করেছেন ওই ব্যবসায়ী। পাশেই বিশাল মার্কেটও রয়েছে তার। এলাকার মানুষের ঘরের ব্যবহৃত পানি মার্কেটের কালভার্ট হয়ে তার পুকুরে এসে পড়ে এবং এতে নাকি ব্যবসায়ীর মাছের রেণু নষ্ট হয়। তাই নিজের লাভের কথা ভেবে তিনি এলাকার পানি নিষ্কাশনের পথ একমাত্র কালভার্টটি বন্ধ করে দিয়েছেন সিমেন্ট ঢালাই করে।

সরেজমিন দেখা গেছে, কালভার্ট দিয়ে পানি বের না হওয়ায় হাঁটুভাঙ্গা ও খেজুরটেক এলাকার প্রায় ত্রিশটি পরিবার পানিবন্দি হয় পড়েছে। কিন্তু তিনি প্রভাবশালী হওয়ায় অনেকবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বিষয়টি অবগত করা হলেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি বলেও জানান ভুক্তভোগীরা।

পানিবন্দির কারণে চরম অসহায়ত্ব ও কষ্টের মধ্য দিয়ে মানবেতর দিনযাপন করছে পরিবারগুলো। বাড়িগুলোতে জমে আছে প্রায় হাঁটুপানি। রান্নাঘরে পানি উঠে যাওয়ায় ডুবে গেছে চুলাও। তাই রান্না বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রুটি ও কলা খেয়ে দিন পার করছেন তারা। দেখা দিয়েছে খাবার পানির সংকট। জলাবদ্ধতার কারণে বৃদ্ধ ও শিশুরা পড়েছে বেশি বিপাকে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি শিশু পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে মানুষের কষ্ট বেড়েছে কয়েকগুণ। এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, দুই মাস যাবৎ তার বাড়িসহ আশপাশের প্রায় ত্রিশটি বাড়ির লোকজন পানিবন্দি রয়েছেন। তিনি বলেন, এলাকার প্রভাবশালী ব্যবসায়ী মো. শরীফ গায়ের জোরে পানি নিষ্কাশনের একমাত্র কালভার্টটি আটকে দিয়েছেন। এতে পানিবন্দি হয়ে এতগুলো মানুষ মানবেতর দিন পার করছে। এ ব্যাপারে তাকে বারবার বলা সত্ত্বেও তিনি কর্ণপাত করছেন না। তিনি আছেন তার মাছ বাঁচানো নিয়ে।

অন্য খবর  ১৩ বছর ধরে ভোটাধিকার বঞ্চিত দোহারের তিন ইউনিয়নের জনগণ

জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে মানুষের ভোগান্তি তৈরি করেছেন সেই প্রভাবশালী শরীফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি যুগান্তরকে বলেন, এলাকার মানুষের ব্যবহারের পানি আমার রেণুর প্রজেক্টে পড়লে রেণু মারা যাবে। তাই কালভার্টে এর ছিদ্র ঢালাই করে আটকে দিয়েছি। আর ওনাদের অনেকবার বলেছি, আপনারা পানি নিষ্কাশনের অন্য কোনো ব্যবস্থা করেন। কিন্তু তারা সেটা করেনি। এতে আমার দোষ নেই। তারা বিকল্প ব্যবস্থা করে নিতে পারে। তবে সরকারি অর্থে নির্মিত পানি নিষ্কাশনের একমাত্র কালভার্টটির ছিদ্র তিনি কোন অধিকারে আটকে দিয়েছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সরকারি অর্থে কালভার্টটি নির্মিত হলেও কেবল তাদেও ক্ষেতে পানি সেচের কারণে তা দেয়া হয়েছিল। এখন ওই জমিতে ধান হয় না তাই কালভার্টটি বন্ধ করে তিনি মাছ চাষ করছেন। জলাবদ্ধতায় ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর সমস্যা কেন সমাধানের কোনো চেষ্টা করা হয়নি এমন প্রশ্নে দায়সারা জবাব দেন ব্যবসায়ী অনুগত স্থানীয় মেম্বার আবুবক্কর সিদ্দিক বাক্কা। এদিকে জলাবদ্ধতার সংবাদে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে ওই এলাকা পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আশুলিয়া সার্কেলের সহকারী (ভূমি) কর্মকর্তা বিকাশ বিশ্বাস। তিনি জলাবদ্ধতা নিরসনে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।

অন্য খবর  দোহার থানা পুলিশের সাথে দোহার পূজা উদযাপন পরিষদের মত বিনিময়

 

আপনার মতামত দিন