দোহার – নবাবগঞ্জে উপজেলা নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ৩১ মার্চ

    704

    নিউজ৩৯,নির্বাচন কমিশন,জাকির হোসেনঃ
    মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সভার কার্যবিবরণী থেকে জানা গেছে যে, দোহার – নবাবগঞ্জে উপজেলা নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ৩১ মার্চ । পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট পাঁচ ধাপে সারা দেশের ৪৮১টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ করা হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রথম ধাপে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অর্ধেকের মতো জেলার সব উপজেলায় ভোটগ্রহণ করা হবে। এই ধাপে ভোটগ্রহণের জন্য নির্ধারিত উপজেলার সংখ্যা ৬৯ টি। তবে ইসি সচিবালয়ের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, ৮ মার্চ শুক্রবার। একই দিন বিশ্ব নারী দিবস। যে কারণে ৯ মার্চ ভোটগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ হতে পারে। এ ছাড়া দ্বিতীয় ধাপে ১৮ মার্চ ১২৫টি উপজেলায়, তৃতীয় ধাপে ২৪ মার্চ ১১১টি এবং ৩১ মার্চ চতুর্থ ধাপে ১৫৯টি উপজেলায় ভোটগ্রহণের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। রমজানের পরে পঞ্চম ধাপে জুনের দিকে ১৭টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
    দোহার-নবাবগঞ্জে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হয়েছিল সর্বশেষ ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪। সেসময় ঢাকার দোহারে নির্বাচিত হয়েছিলেন বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী কামরুল হুদা ও নবাবগঞ্জে নির্বাচিত হয়েছিলেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আবু আশফাক।
    উল্ল্যেখ্য ২৬ জুন,২০১৪ সাবেক চেয়ারম্যান কামরুল হুদার মৃত্যুতে দোহার উপজেলায় এ পদটি শূন্য হয়। এরপর ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ এই উপজেলায় উপ-নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর হোসেন আনারস প্রতীক, বিএনপি ও নাজমুল হুদা সমর্থিত প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম ভূলু দোয়াত-কলম প্রতীক নিয়ে, ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মেহবুব কবির মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর হোসেন আনারস প্রতীকে বিপুল ভোতে বিজয়ী হন। বর্তমানে তিনি সেই দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
    এ ছাড়া সারা দেশের যেসব উপজেলা পরিষদের মেয়াদ ২১ মার্চের মধ্যে শেষ হবে, সেগুলোতেও একইদিন ভোটগ্রহণ করা হবে।
    ইতিমধ্যে ইসি সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ গণমাধ্যমকে বলেছেন, প্রথম ধাপে ৮ অথবা ৯ মার্চ ভোটগ্রহণের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।
    ইসির কার্যবিবরণী থেকে আরও জানা যায়, দ্বিতীয় ধাপে রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগের অর্ধেকের বেশি জেলার সব উপজেলাতে ভোট হবে। সারা দেশের যেসব উপজেলার মেয়াদ ২৬ মার্চ শেষ হবে সেগুলোর নির্বাচনও এই ধাপে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
    তৃতীয় ধাপে খুলনা, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অবশিষ্ট জেলার সব উপজেলায় ভোটগ্রহণ করা হবে। সারা দেশের যেসব উপজেলার মেয়াদ ৩০ মার্চ শেষ হবে সেগুলোর নির্বাচনও এই দিন অনুষ্ঠিত হবে।
    চতুর্থ ধাপে ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের সম্পূর্ণ জেলা এবং চট্টগ্রাম বিভাগের বাকি জেলার সব উপজেলা ভোটগ্রহণ করা হবে। সারা দেশের যেসব পরিষদের মেয়াদ ১৯ জুনের মধ্যে শেষ হবে সেগুলোর নির্বাচনও চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত হবে।
    যেসব পরিষদের প্রথম সভা ২০১৪ সালের ২০ জুনের পরে অনুষ্ঠিত হয়েছিল সেগুলোতে রমজান মাস শেষে ঈদের পরে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
    ইসি সচিবালয় সূত্র জানায়, প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনের জন্য আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা।
    ইসি সচিবালয় থেকে আরও জানা যায়, এ বছর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া বা হওয়ার চেষ্টা এবং অন্যান্য কারণে ৩২ জন উপজেলা চেয়ারম্যান মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পদত্যাগ করেছেন। এসব উপজেলার নির্বাচনও প্রথম ধাপে ৮ অথবা ৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে।
    দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছিল। তবে একই বছর অনুষ্ঠিত চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনে দলটি অংশ নিয়ে ১১৬টি উপজেলায় জয় পেয়েছিল। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ জিতেছিল ২৬২টি উপজেলায়। সেবার প্রথম দুই ধাপের নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ছিল এবং বিএনপি সরকারি দলের সঙ্গে সমান তালে পাল্লা দিয়ে বিভিন্ন উপজেলায় জয় পেয়েছিল। তবে তৃতীয় ধাপ থেকে ষষ্ঠ (শেষ ধাপ) ধাপ পর্যন্ত নির্বাচন ব্যাপক অনিয়মের ঘটনা ঘটে।
    গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মাত্র আটটি আসনে জয় পেয়েছে। নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়নি দাবি করে দলটি এ নির্বাচনের ফল বর্জন করেছে এবং সংসদে শপথ নেওয়া থেকে বিরত আছে।
    সংসদ নির্বাচনের এই প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বিএনপি ইতিমধ্যে জানিয়েছে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না।

    আপনার মতামত দিন