খন্দকার আবু আশফাক

খন্দকার আবু আশফাক;  ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক। ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সৈনিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের ভিপি, নবাবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান। অনেক ভাবেই পরিচিত তিনি। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক এই নেতা ১৯৯০ সালেই বহিষ্কৃত হয়েছিলেন ছাত্রদল থেকে। সেদিন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কেঁদেছিলেন তার জন্য এবং বলেছিলেন ওরা আমার সন্তান। বর্তমান বিএনপির নির্বাহি কমিটির এই সদস্য নিউজ৩৯ এর কাছে বলেছেন অনেক দিনের না বলা রাজনৈতিক অনেক গুপ্ত কথা। কথা বলেছেন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা – ১ আসনে বিএনপিতে নিজের মনোনয়ন নিয়ে। নিউজ৩৯ এর পাঠকদের জন্য তার সাক্ষাৎকার তুলে ধরা হলো। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নিউজ এর সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার আছিফুর রহমান সজল।

নিউজ৩৯: কেমন আছেন?

খন্দকার আবু আশফাকঃ আলহামদুল্লিলাহ, আল্লাহর অশেষ রহমতে ও জনগনের দোয়ায় ভাল আছি।

নিউজ৩৯: আপনার মা একজন স্বর্ণপদক প্রাপ্ত রত্নগর্ভা, দুই ভাই ডাক্তার, এক ভাই জাজ, এক ভাই স্বনামধন্য আইনজীবী, এক ভাই চাটার্ড একাউন্টেড। নিজের পরিবার নিয়ে কিছু বলুন?

খন্দকার আবু আশফাকঃ আমার বাবা আব্দুল আলিম খন্দকার একজন সরকারি কর্মকর্তা। আমরা সাত ভাই, এক বোন। আমরা সবাই শিক্ষাগত ভাবে মাস্টার্স পাশ করেছি।  আমার বড় ভাই ডা খন্দকার আবুল কাশেম সাবেক যুগ্ম সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক, মেঝ ভাই খন্দকার আবুল বাশার ঢাকা শিশু হাসপাতালে আছেন, সেঝ ভাই খন্দকার আবুল হোসেন স্পেশাল ট্রাইবুনাল জজ, চতুর্থ ভাই খন্দকার আবুল খায়ের একজন চার্টার্ড একাউন্টেড, পঞ্চম ভাই খন্দকার আবুল কালাম সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবি এবং আমার ছোট ভাই খন্দকার আবু শফিকঃ খন্দকার গ্রুপের একজন কর্ণাধার এবং ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর একজন পরিচালক। আমার একমাত্র বোন আইরিন পারভিন পারুল একজন মাস্টার্স ডিগ্রী হোল্ডার। আমার ভগ্নীপতি সরদার নুরুল আমিন একজন উপ পুলিশ কমিশনার।

আর নিজের পরিবারের কথা বলি, আমার স্ত্রী একজন এলএলএম ডিগ্রি হোল্ডার। সে কোথাও প্র্যাক্টিস করেন না। সংসার জীবন আর ছেলেমেয়েদের নিয়েই তার ব্যস্ততা। আমার বড় মেয়ে স্কলাস্টিকায় এ লেভেল করছে, ছোট মেয়ে ভিকারুন্নিসা স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এবার জেএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে এবং একমাত্র ছেলে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট স্কুলে এখন ক্লাস ফাইভে অধ্যায়নরত আছে।

নিউজ৩৯: আপনার কর্মজীবন সর্ম্পকে বিছু বলুন?

খন্দকার আবু আশফাকঃ প্রথমতঃ আমি একজন রাজনীতিবিদ। আর জীবিকার জন্য আমি একজন ব্যবসায়ী। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নিয়ে আমি ভাল আছি। আমার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান খন্দকার গ্রুপ অব কোম্পানির ব্যবসা নিয়েই আমি আছি। সেই সাথে জনমানুষের জন্য রাজনীতির মাঠেও আমি পদচারনা করি।

নিউজ৩৯:  আপনার সব ভাই পেশাগত জীবনে সরকারের বিভিন্ন উচ্চপদে আছেন, নিজেরা নিজেদের পরিচয়ে প্রতিষ্ঠিত। ভাইদের বাইরে যেয়ে আপনি রাজনীতিতে কেন আসলেন?

খন্দকার আবু আশফাকঃ আসলে আমি রাজনীতির মাঠে প্রবেশ করেছি ১৯৮১ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাত ধরে। ১৯৮১ সালে তিতুমীর কলেজে ভর্তি হয়েই আমার রাজনীতিতে প্রবেশ। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আমাকে রাজনীতিতে প্রবেশ করতে সবচেয়ে উৎসাহ জুগিয়েছেন। তার মতো জনমানুষের নেতার কাছে যেতেই আমার রাজনীতিতে আসা। এরপর ১৯৮৩ সালে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই। ১৯৮৩ সালে ঢাবিতে পরিসংখ্যানে অনার্স ভর্তি হয়ে ১৯৮৯ সালে বিএসসি অনার্স , ১৯৯০ সালে এম.এস.সি পাশ করি। ১৯৮১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত জাতীয়তাবাদী শক্তির সাথেই আছি। বাকী জীবন সেই আদর্শের সেই ঝাণ্ডা নিয়েই বেচে থাকতে চাই।

নিউজ৩৯: শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার সাথে কি কখনো দেখা হয়েছে?

খন্দকার আবু আশফাকঃ হ্যা, বেশ কয়েকবার দেখা হয়েছে। উনি তিতুমীর কলেজে এসেছেন। উনার সাথে আমার বেশ কিছু স্মৃতিই আছে। উনার সাথে কথা বলেছেন। তিতুমীর কলেজে উনি এসেছেন, কথা বলেছেন, মেধাবী হয়ে রাজনীতি করে দেশের দায়িত্ব নিতে বলেছেন। নিজের জীবনের মতো দেশকে ভালোবাসতে বলেছেন।

নিউজ৩৯: আশফাক ভাই, আপনার অতীত নিয়ে একটা প্রশ্ন করতে চাই। ১৯৯০ সাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশে এক অস্থির রাজনৈতিক অবস্থা বিরাজ করছিল। স্বৈরাচার এরশাদ পতন আন্দোলনে সেই সময়ে ছাত্ররা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশে অস্থিরতা বিরাজ করছিল। ১৯৯০ সালের ২৪ নভেম্বর বেগম খালেদা জিয়া কাঁদতে কাঁদতে ছাত্র রাজনীতির অন্যতম শীর্ষনেতা ছাত্রদলের সেই সময়ের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সানাউল হক নিরু সহ ফজলুল হক হলের সেই সময় কালের ভিপি আপনিসহ ছয়জনকে বহিস্কার করে। এর প্রতিবাদে মিছিল করায় আরেক শীর্ষনেতা গোলাম ফারুক অভিসহ আরও ছয় জনকে বহিস্কার হয়। সেই দিন খালেদা জিয়া বলেছিলেন “আমি আমার হাতে তৈরি করা ছয় সন্তানকে আজ বহিস্কার করছি, দুই মাস পরই আমি আবার ওদের দলে ফিরিয়ে আনবো”। সেই সময়ের যুবদলের সভাপতি গয়েস্বর চন্দ্র রায় সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন। সেই সময় আসলে কি ঘটেছিল, কেন ঘটেছিল সেই ঘটনা। আপনি যদি আমাদের জানাতেন।

খন্দকার আবু আশফাকঃ ১৯৮৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে সাতক্ষীরারা হাবিবুল ইসলাম হাবীব (বর্তমানে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক) ফজলুল হক হলের ভিপি নির্বাচিত হন। আর হাবিব উন নবি খান সোহেল (বর্তমানে বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি) সাধারণ সম্পাদক হন। অভ্যন্তরীণ গ্রুপিং এর কারণে ১৯৯০ সালের মে মাসে হাবিব উন নবি খান সোহেল গুলিবিদ্ধ হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চলে যায়। এ হামলার ঘটনা নিয়ে ছাত্রদলের নেতারা দোষারোপের রাজনীতি শুরু করেন।

আবার নেতৃত্ব প্রতিযোগিতার অংশ হিসেবে হাবিবুল ইসলাম হাবীব রাজনীতির মঞ্চ থেকে আমাকে দূরে রাখার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতে থাকেন। আমার বন্ধু হাবিবুল ইসলাম হাবিব(সাবেক এমপি) ফজলুল হক হলের ভিপি নির্বাচিত হয় ১৯৮৯ সালে। আমি ১৯৯০ সালে ফের নির্বাচিত হই। যার কারণে ১৯৯০ সালের ৬ জুন ডাকসু নির্বাচনে আমি খন্দকার আবু আশফাককে মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত করা হয়। কিন্তু আমি নির্দলীয়ভাবে নির্বাচন করি। আর সে নির্বাচনে আমি নির্দলীয়ভাবে  জয়লাভ করে ফজলুল হক হলের ভিপি নির্বাচিত হই। তাদের মধ্যকার দ্বন্দের এই জের ধরে বহিষ্কারের শাস্তি পেতে হয় সানাউল হক নীরু সহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি শফিকুল ইসলাম (রানা সিকদার), ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সদস্য মাহবুব আলম, শফিকুর রহমান শফিক, তৎকালীন ফজলুল হক শাখার ভিপি আমি খন্দকার আবু আশফাক ও ঢাকা কলেজ ছাত্রদল নেতা মীর নেওয়াজ আলীকে।

১৯৯০ সালে  জুনের আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হল নিয়ে হাবিব উন নবি খান সোহেল আর হাবিবুল ইসলাম হাবীবের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিলো। আবার তারা উভয়ে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ প্রতিষ্ঠিত নতুন বাংলা ছাত্রসমাজ থেকে আগত এম ইলিয়াছ আলী (গুমের শিকার- সিলেট বিভাগীয় সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক) গ্রুপের ছিলেন। অন্যদিকে তৎকালীন ছাত্রদলের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানও মুজিববাদী ছাত্রলীগ (ঢাকা কলেজ অধ্যয়নকালীন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক ছিলেন) থেকে নতুন বাংলা ছাত্রসমাজে যোগ দিতে যান। সেসময় নীরু ভাই অস্ত্রের মুখে আমানউল্লাহ আমানকে জোর করে ছাত্রদলে নিয়ে আসেন। তারা সম্মিলিতভাবে হাবীবকে মারধরের দায় ছাত্রদলের নিজস্ব নেতৃত্ব সানাউল হক নীরুর উপর চাপিয়ে দেন।

তাদের এই অপতৎপরতায় ১৯৯০ সালের ২০ নভেম্বর তৎকালীন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপিকা জাহানারা বেগম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে ৬জনকে বহিষ্কার করা হয়। তখন ছাত্রদল বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান। কোন তদন্ত না করে এবং সঠিক উপায়ে এসকল ছাত্র নেতৃবৃন্দকে বহিস্কারেরর প্রতিবাদে ২৩ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল করার প্রতিবাদে আরো ৬জনকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। তারা হলেন, ছাত্রদলের সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক গোলাম ফারুক অভি, মহসীন হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্র সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদুর রহমান, সূর্যসেন হলের সাধারন সম্পাদক মির্জা মাসুদ জুয়েল, শহিদুল্লাহ হল শাখার ভিপি (কারাগারে থাকা অবস্থায় নির্বাচিত হন) আক্তারুজ্জামান খোকন, সূর্যসেন হলের ভিপি গোলাম মর্তূজা।

ফলে ছাত্রসমাজের নেতারা বেগম খালেদা জিয়ার কাছে গিয়ে বলে এদের বহিস্কার না করলে তারা ছাত্রসমাজ ভেঙ্গে দিবে। ফলে দল ও দেশের বৃহত্তম স্বার্থে স্বৈরাচার এরশাদ পতনের আন্দোলনের ঐক্য ধরে রাখার জন্য বেগম খালেদা জিয়া চোখের জলে আমাদের ছাত্রদল থেকে বহিস্কার করেন। যার একমাত্র সাক্ষী বাবু গয়েস্বর চন্দ্র রায়। ম্যাডাম সেদিন কেদেছিলেন, বলেছিলেন “আমি আমার হাতে তৈরি করা ছয় সন্তানকে আজ বহিস্কার করছি, দুই মাস পরই আমি আবার ওদের দলে ফিরিয়ে আনবো”। আমরাও আমাদের মায়ের সে আদেশ মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু নির্দেশ ছিল কাজ চালিয়ে যাবার।”

নিউজ৩৯: হাবিবুন নবী খান সোহেল ও হাবিবুল ইসলাম হাবিব, জাতীয় ছাত্র সমাজ থেকে আসা ইলিয়াস আলীর গ্রুপের নেতা, অপর দিকে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক ছাত্রদলে আসলেন মুজিববাদী ছাত্রলীগ থেকে। কিন্তু আপনি তো ১৯৮১ সাল থেকেই ছাত্রদল।

খন্দকার আবু আশফাকঃ আসলে ব্যাপারটা সেটা না। মূল ঘটনা হচ্ছে ১৯৮৪ সালে ছাত্রদল থেকে ইলিয়াস আলী ছাত্রসমাজে যোগ দিলো। সেই দিনই আমানুল্লাহ আমানও ছাত্রসমাজে যোগ দেয়ার জন্য ছাত্রসমাজের অফিসে গিয়েছিল। সেই দিন তৎকালীন কিংবদন্তী ছাত্রনেতা সানাউল হক নিরু, আমানুল্লাহ আমানকে অস্ত্রের মুখে সেখান থেকে নিয়ে আসে। আসলে আমানুল্লাহ আমানের দলের সাথে বেঈমানী করার অভ্যাস নতুন না। সেই সময় আমানুল্লাহ আমান ছাত্রদলেরই নেতা ছিল।

একটা জিনিস আপনাদের জানা দরকার ১৯৯১ সালের নির্বাচনের সময়ও কিন্তু আমার বহিস্কার আদেশ ছিল কিন্তু তারপরও আমি দলের বাইরে যাই নি। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার জন্য আমি জানপ্রান দিয়ে খেটেছি। এবং এতটুকু বলতে পারবো কখনোই আদর্শ চ্যুত হই নি।

নিউজ৩৯: সেই সময়ের কিংবদন্তী ছাত্রনেতাদের মধ্যে আপনি একজন। বাকি সেই সব সহকর্মীদের সাথে আপনার এখনো যোগাযোগ আছে?

খন্দকার আবু আশফাকঃ হ্যা সবার সাথেই যোগাযোগ আছে আমার। এর মাঝে কেউ এখনও রাজনীতিতে আছে আবার কেউ ব্যবসায় বা প্রবাস জীবনে আছে। শফিকুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল সভাপতি রানা শিকদার, কেন্দ্রীয় সদস্য মাহবুব আলম, নিরু ভাইএর চাচাত ভাই শফিকুর রহমান শফিক, বর্তমান কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা মীর নেওয়াজ আলী, শহীদুল্লাহ হলের ভিপি আখতারুজ্জামান খোকন, শহীদুল্লাহ হলের জিএস মনিরুজ্জামান মনির, সূর্যসেন হলের জিএস খান মির্জা মাসুদ জুয়েল, মহসিন হলের জিএস কামরুল ইসলাম সজল। গোলাম ফারুক অভি বর্তমানে কানাডাতে আছেন। রানা শিকদার বর্তমানে অস্ট্রেলিয়াতে আছে, শফিকুর রহমান শফিক বর্তমানে তার ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত। সেই মেধাবী ছাত্রনেতাদের অনেককেই আমরা আর ছাত্র রাজনীতিতে ফেরত আনতে পারি নি। কালের সাক্ষি হিসাবে আমরা কিছু সাবেক ছাত্রনেতাই এখনও রাজনীতিতে সক্রিয় আছি।

নিউজ৩৯: আপনার সহযোদ্ধা এক সময়ের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হাবিবুন নবী খান সোহেল বর্তমানে ঢাকা মহানগর বিএনপি দক্ষিনের সভাপতি, আপনি ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক। আপনাদের মাঝে বর্তমানে সম্পর্ক কেমন?

খন্দকার আবু আশফাকঃ অত্যন্ত মধুর সম্পর্ক। হাবীবুন নবী খান সোহেল শুধু আমার সহযোদ্ধাই না, সে আমরা ব্যাচ মেট। এবং হলে আমরা বহুদিন রুমমেটও ছিলাম।

নিউজ৩৯: আপনারা যখন ছাত্ররাজনীতি করেছেন তখন ছাত্রদলকে বলা হতো বিএনপির ভ্যানগার্ড, আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন, ছাত্ররাজনীতি করেছেন। ছাত্ররাজনীতি এখন কি সেই জায়গায় আছে? আপনার মূল্যায়ন কি?

খন্দকার আবু আশফাকঃ আসলে এখানে নিয়মানুবর্তিতা বলে একটা কথা আছে। আমরা যখন স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন করি তখন ফজরের নামাজের আগে আমরা লাঠিসোটা নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়তাম আর এখনকার ছাত্রনেতারা ঘুম থেকে উঠেই দুপুর একটার সময়। সেই প্র্যাকটিসটা হবে কিভাবে। সেই প্র্যাকটিসটা তো থাকতে হবে।

অন্য খবর  বিএনপির কাছে জামায়াত চায় ৪৩ আসন

নিউজ৩৯: দোহার-নবাবগঞ্জ ছাত্রদল নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কি?

খন্দকার আবু আশফাকঃ দোহার-নবাবগঞ্জে পূর্বে যে কমিটি ছিল তা অনেকাংশেই ঝিমিয়ে গেছে এবং অনেকের ছাত্রত্বও শেষ হয়ে গেছে। দোহার উপজেলা ও জয়পাড়া কলেজের ছাত্রদল কমিটি করা হয়েছে, নবাবগঞ্জেরটা এখনো করা হয় নি। অতি শীঘ্রই আমরা করবো। তবে আমার চিন্তা যে, দোহার-নবাবগঞ্জে ছাত্ররাজনীতির একটা ব্যাপক পরিবর্তন দরকার। আমি মনে করি ছাত্ররাজনীতিটা ছাত্রদের হাতেই থাকা উচিৎ। এই মেয়াদটা হয়তো আমি ছেড়ে দিছি কিন্তু এর পর ছাত্রদলের কমিটি আমি ছাত্রদের দিয়েই গঠন করবো। ছাত্রদলের কমিটি ছাত্রদের নিয়েই গঠিত হবে।

নিউজ৩৯: বর্তমানে ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক হিসাবে বিএনপির বর্তমান অবস্থা কেমন? ঢাকা জেলা বিএনপিকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?

খন্দকার আবু আশফাকঃ ঢাকা জেলা বিএনপি বর্তমানে আগের যেকোন সময়ের তুলনায় শক্তিশালী অবস্থানে আছে। আমি তো মনে করি দেশের সকল জেলা কমিটির চেয়ে ঢাকা জেলা বিএনপি শক্তিশালী অবস্থানে আছে। নির্বাচনের পূর্বেই ঢাকা জেলা বিএনপির কমিটি নিয়ে যে অচল অবস্থা আছে সেই গুলো দূর করা হবে।

নিউজ৩৯: কিন্তু বিগত আন্দোলনে ঢাকা জেলা ও মহানগরীর ব্যার্থতা-ই সারাদেশে বিএনপি’র আন্দোলন ব্যার্থ হওয়ার মূল কারণ বলে সবাই মনে করে?

খন্দকার আবু আশফাকঃ যেহেতু দায়ি করেই ফেলেছেন, সেহেতু নিশ্চয় কোন কারন ছিল যার কারনে তারা মাঠে নামে নি, আন্দোলন করে নি।

নিউজ৩৯: যুবদলের ক্ষেত্রে দোহার-নবাবগঞ্জে আপনার মূল্যায়ন কি?

খন্দকার আবু আশফাকঃ দোহারে তো যুবদলের কমিটি নাই, নবাবগঞ্জেও কমিটি নাই। এই অবস্থা থেকেই বোঝা যায় জেলাতে একটা অগ্রহণযোগ্য কমিটি তৈরি হয়েছে। আর কমিটির বিরুদ্ধে একটা অভিযোগ আছে তারা টাকার বিনিময়ে পদ বিক্রি করেছে। যে টাকা দিয়ে পদ কিনবে সে রাজনীতিতে আসবে কেন। তাই অতি দ্রুত জেলা কমিটি নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে। যাতে অতি দ্রুতই যুবদলকে একটি শক্তিশালী সংগঠনে পরিনত করা যায়। মাঠের রাজনীতির যারা কমিটেড তাদের নিয়েই আমি দোহার-নবাবগঞ্জের যুবদলকে আমি নতুন করে সাজাবো।

নিউজ৩৯: আপনি এক সময় যুবদলের বুলু-আলাল কমিটির জয়েন্ট সেক্রেটারি ছিলেন,আপনি ঢাকা জেলা যুবদলের সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমান কেন্দ্রীয় যুবদল কমিটির সভাপতি হওয়ার কথা ছিল আপনার, বর্তমান  ঢাকা জেলা যুবদলের সভাপতি ভিপি নাজিম যুবদলের সব কাজে আপনাকে অবাঞ্চিত ঘোষনা করেছিল। আপনার সাবেক সংগঠনের সভাপতির কাছ থেকে এই ধরনের ঘোষণা আপনি কি দৃষ্টিতে দেখেন?

খন্দকার আবু আশফাকঃ আসলে বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির দায়িত্ব আমার হাতে চলে এসেছিল প্রায়, এরকম সময় ম্যাডাম খালেদা জিয়া আমাকে ডেকে বললেন, যুবদল না তুমি ঢাকা জেলা বিএনপির দায়িত্ব তুলে নেও। ফলে আমি ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব বুঝে পাই।

আর ঢাকা জেলা যুবদলের কে আমার নামে কি বললো সেটা আমি জানি না। ঢাকা জেলা যুবদলের, বিভিন্ন উপজেলা যুবদলের কি হাল করেছে তা আজ চোখের সামনে স্পস্ট। ঢাকা জেলা যুবদল এখন কি অবস্থায় আছে সেটা আপনারা ভাল জানেন। গত কয়েক বছরে ঢাকা জেলা যুবদল ঢাকার উপজেলা গুলোতে যুবদলের সাংগঠনিক কাঠামোতে ব্যাপক ক্ষতি করেছে। যুবদলের এই কমিটির উপর অভিযোগ আছে এই কমিটি টাকা নিয়ে দোহার-নবাবগঞ্জসহ বিভিন্ন কমিটি ঘোষণা করেছে। যেটা একজন রাজনীতিবিদ হিসাবে ও জাতীয়তাবাদী সৈনিক হিসাবে, আমি লজ্জাবোধ করেছি এই অভিযোগ শুনে। যেটা মোটেও কাম্য নয়। এই কমিটি আমার দলের কমিটি বলবো না, এটাকে আমি বলবো কারো পকেটের কমিটি।

যদি টাকা দিয়ে কেউ পদ বাগিয়ে নিয়ে যায় তাহলে সেই কমিটি ঘোষণাকারী ঐ নেতার যোগ্যতা কি? রাজনীতি তো ব্যবসার মাঠ না যে টাকা দিয়ে পদ বাগিয়ে নিবে। মাঠের রাজনীতি করে নেতৃত্বে আসতে হবে। এই ঢাকা জেলা যুবদলের কমিটি গত কয়েক বছরে একটি সুন্দর কমিটি ঘোষনা করতে পারে নি কোন উপজেলায়। যেটা একই সাথে দুঃখজনক ও লজ্জা জনক।

তবে অতি শীঘ্রই এই অচল অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে বলে আমি আশা করি। অতি দ্রুত এই কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে মাঠের রাজনৈতিক কর্মীদের নিয়ে কমিটি ঘোষনা করে এই অচল অবস্থা দূর করা হবে।

নিউজ৩৯: ২০০৯ সালের নির্বাচনের পর জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মকাণ্ড যেন অনেকটা স্থবির হয়ে গেছে, যেটা একসময় ঢাকা জেলা ও দোহার-নবাবগঞ্জে খুবই চাঙ্গা ছিল। বর্তমানে স্বেচ্ছাসেবকদলের এই অবস্থা কিভাবে দেখছেন?

খন্দকার আবু আশফাকঃ আসলে আমরা সব অঙ্গসংগঠন নিয়েই কাজ করবো। অতি দ্রুত এই স্থবিরতা দূর হবে। নির্বাচনের আগেই এই কমিটিগুলোকে আমরা একটা সাংগঠনিক ফরমেটে নিয়ে আসবো।

নিউজ৩৯: যদি আগাম নির্বাচন হয় – কতোটা প্রস্তুত আপনি?

খন্দকার আবু আশফাকঃ আসলে আগাম নির্বাচন হবে কি হবে না সেটা আমরা কেউ বলতে পারি না। কারন বর্তমান সরকার তো অবৈধ সরকার। যদি আগাম নির্বাচনও হয়, তাহলেও আমি প্রস্তুত। আর যদি সিডিউল অনুযায়ী নির্বাচন হয় তাহলে নির্বাচনের আগেই আমরা এই অঙ্গসংগঠনগুলোকে ঢেলে সাজাবো।

নিউজ৩৯: একসময় দোহার-নবাবগঞ্জ ঢাকা জেলার একজন প্রভাশালী রাজনীতিবিদ হিসাবে ছিলেন ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। তিনি বিএনপি থেকে চলে যাওয়ার পর দোহারে বিএনপির একটা নেতৃত্ব সংকট ছিল যেটা অনেকদিন পূরন হয় নি। পরবর্তীতে আপনি দোহারের বিএনপির সেই নেতৃত্বে কতটা প্রভাব রাখতে পেরেছেন?

খন্দকার আবু আশফাকঃ এখানে একটা ব্যাপার আপনাদের মনে রাখতে হবে, আমি কিন্তু শুরু থেকেই ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার অনুগত ছিলাম, তাকে আমি পছন্দ করতাম এবং উনি আমাকে প্রচন্ড আদর করতেন। উনাকে কিন্তু আমি এখনও পছন্দ করি। কিন্তু দলের কথা যখন আসে তখন এই পছন্দটা আর থাকে না। উনি দলের জন্য যেমন অনেক করেছেন, দলও উনার জন্য অনেক কিছুই করেছেন। কিন্তু দল তাকে দূরে সরিয়ে দেয় নি, তিনি নিজেই দূরে সরে গেছেন।

আমি নিজে তাকে দলে ফিরিয়ে আনার জন্য ১০ হাজার নেতা কর্মী নিয়ে ম্যাডামের কার্যালয়ে অবস্থান নিয়েছিলাম। ম্যাডামকে অনুরোধ করে আমি তাকে দলে ফিরিয়েও এনেছিলাম। কিন্তু দ্বিতীয়বার যখন উনি নিজে থেকেই চলে যায় তখন আর আমার কিছু করার ছিল না। দল উনাকে ছাড়ে নাই, উনি দল ছেড়ে চলে গেছেন। তবে উনার প্রতি আমার ব্যক্তিগত শ্রদ্ধা এখনো আছে, সব সময় থাকবে। তবে উনি যখন দল ছেড়ে চলে যান তখন দোহারের বিএনপির মূল দল, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতারা তাকে প্রশ্ন করেছিল আপনি তো বিএনপি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন কিন্তু আমরা তো বিএনপিতেই থাকবো। তাহলে আমরা কার সাথে থাকবো?  তখন তিনি একটা কথাই বলেছিলেন, তোমরা আশফাকের সাথে থেকো। ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা বিএনপি’তে আমাকে তার উত্তরসূরি আগেও মনে করতেন এখনও মনে করেন।

নিউজ৩৯: নবাবগঞ্জের বিএনপির রাজনীতিতে যদি আসি, তাহলে নবাবগঞ্জে আপনার রাজনীতি শুরুই হয়েছে একজন প্রভাবশালী আমলা আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে। ফলে আপনাদের মাঝে একটা প্রতিযোগীতা ছিল এবং আছে, এখন আপনি যদি মনোনয়ন পান, তখন মান্নন পন্থী নেতাদের আপনি কতটুকু আপন করে নিতে পারবেন বা আপনার পাশে থাকা নেতা কর্মীরা সেই নেতাদের কতটুকু আপন করে নিতে পারবে বলে আপনি মনে করেন? কারণ এমপি মনোনয়ন নিয়ে এখনও দ্বিধা বিভক্ত দোহার-নবাবগঞ্জ উপজেলা বিএনপি। এই যে মান্নানপন্থীরা মনে করে আপনি মনোনয়ন পেলে তাদের অবস্থানটা কি হবে, আবার আপনার অনুগতরা মনে করে আব্দুল মান্নান মনোনয়ন পেলে আপনার অনুগত নেতা কর্মীদের কি হবে এই যে একটা চোরাস্রোত বইছে বিএনপিতে, নির্বাচনে সেটা কতটুকু প্রভাব ফেলবে বলে আপনি মনে করেন? এবং এদের সবাইকে নিয়ে এক প্লাটফর্ম কিভাবে দলকে সংগঠিত করবেন?

খন্দকার আবু আশফাকঃ আপনি একটা জিনিস হয়তো লক্ষ্য করেছেন প্রথমবার যখন আমি উপজেলা নির্বাচন করি তখন আব্দুল মান্নানের অনুসারীরা আমার বিপক্ষে কাজ করেছেন কিন্তু তারপরও আমার বিজয় কিন্তু তারা ঠেকিয়ে রাখতে পারে নি। আমার নিকটতম প্রার্থীর চেয়েও আমি দ্বিগুনের বেশি ভোট পেয়েছিলাম। আর ২০১৪ সালের নির্বাচনেও সকল প্রতিকূলতা দূর করে আমি জনগণের ভালোবাসায় আবার নির্বাচিত হই।

আব্দুল মান্নান সাহেবের রাজনীতি শুরু ১৯৯১ সালে। ১৯৯১ সালে মনোনয়ন নিয়ে এমপি নির্বাচিত হয়ে উনি উনার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন কিন্তু আমার রাজনৈতিক জীবন শুরু কিন্তু ১৯৮১ সালে। রাজনীতির দিক থেকে কিন্তু আমি উনার চেয়ে প্রবীন। আমি রাজনীতিতে উনার চেয়ে ১০ বছরেরে সিনিয়র।

এখন মুষ্টিমেয় সুবিধাভোগী কিছু লোক উনার সাথে আছে আর দল যাকে মনোনয়ন দিবে আমরা তার পক্ষেই কাজ করবো। আমরা তো ব্যক্তির পক্ষে কাজ করবো না, আমরা তো দলের পক্ষে কাজ করবো।

আর এখন আমার যে বয়স, দেশের জন্য এই বয়সে কাজ করতে না পারলে আবার কবে কাজ করবো? আর আমার সাথে যারা কাজ করেছে বা আমার আন্ডারে কাজ করেছে এমন অনেকেই কিন্তু এখন দুই-তিনবার এমপি হয়ে গেছে। আর বেশি বয়স হলে তো কাজ করার স্পীড থাকবে না।

নিউজ৩৯: ঢাকা-১ আসন থেকে একাদশ নির্বাচনে বিএনপি’র অনেক মনোনয়ন প্রার্থীর নামই শোনা যাচ্ছে, এর মাঝে আছেন আপনি নিজে, সাবেক মন্ত্রী আব্দুল মান্নান, আব্দুল মান্নানের মেয়ে মেহজাবিন মান্নানের কথাও শোনা যাচ্ছে, আবার হঠাত করে সাবেক সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি ফাহিমা হোসাইন জুবলীর কথা শোনা যাচ্ছে, ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা সাহেব তৃণমূল বিএনপি নিজে করলেও তার মেয়ে অন্তরা হুদা বিএনপির কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন দোহারে। শোনা যাচ্ছে তিনিও মনোনয়ন চাইবেন বিএনপি থেকে। এরা রাজনীতিতে সবাই আপনার জুনিয়র। এই ব্যাপারটা কিভাবে দেখছেন?

খন্দকার আবু আশফাকঃ বর্তমান অবৈধ সরকার তো গনতন্ত্রকে  ধ্বংস করে দিয়েছে। যদি গণতান্ত্রীক প্রক্রিয়া ফিরে আসে তবে দল থেকে মনোনয়ন যে কেউ চাইতে পারে, আমি সবাইকেই অভিনন্দন জানাবো। কিন্তু দল কাকে দিবে সেটা দলের সিদ্ধান্ত। এবং গণতান্ত্রীক প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক রাখতে সবাইকেই দলের সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।

আর যদি সরাসরিই বলি, দল অলরেডি সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছে এবং আমাকে এলাকায় কাজ করার জন্য নির্দেশ দিয়েও দিয়েছে। এবং কেন্দ্র থেকে আব্দুল মান্নান সাহেবকে কোন রাজনৈতিক মুভমেন্ট করার জন্য নিষেধও করে দিয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপারসন ম্যাডাম খালেদা জিয়া বিএনপির ভাইস প্রেসিডেন্ট শাহজাহান সাহেবকে ডেকে বলেছেন, “ঢাকা-১ থেকে আশফাকই নির্বাচন করবে, এবং শাহজাহান সাহেবের মাধ্যমে আব্দুল মান্নান সাহেবকে জানিয়েও দিয়েছে দোহার-নবাবগঞ্জে তার নির্বাচনী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে। উনাকে ধানমন্ডি এলাকায় চলাফেরা করতে বলো, যদি উনি শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকে তাহলে উনার ব্যাপারটা আমি ভেবে দেখবো।”

নিউজ৩৯:বিএনপি’র  তৃণমূলে এই ম্যাসেজটা কি সঠিক ভাবে পৌছাচ্ছে ?

খন্দকার আবু আশফাকঃ তৃণমূলে সবাই ম্যাসেজটা জানে, কিন্তু উনার যে লোকগুলো, সেই লোকগুলোর মনোবল টিকিয়ে রাখার জন্য তারা এটা স্বীকার করছে না। কিন্তু আবার উনার বলয়ের যে লোকগুলো আছে তারাও কিন্তু ভিতর ভিতর আমার সাথে যোগাযোগ রাখছে।

নিউজ৩৯: যদি নির্বাচনে অংশ নেনে, তাহলে আপনার প্রতিপক্ষ হিসাবে আসতে পারেন সালমান এফ রহমান বা আব্দুল মান্নান খান। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমানের নামও আছে সে তালিকায়। আর জোট ছাড়া নির্বাচন হলে আপনার সাথে প্রতিদ্ধন্দিতায় আরও যোগ হতে পারে এডভোকেট সালমা ইসলাম বা যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাবুল। প্রতিপক্ষ হিসাবে এদের কতটুকু শক্তিশালী মনে করেন?

অন্য খবর  জঙ্গিদের নীল নকশা জাতিকে ভয়ঙ্কর বিপদে ফেলছে : সিপিবি

খন্দকার আবু আশফাকঃ আমি যেহেতু শহীদ জিয়ার আদর্শের একজন সৈনিক। শহীদ জিয়ার আদর্শের একজন সৈনিক হিসাবে আমি এদেরকে কোন শক্তিশালী প্রার্থীই মনে করি না। কারন দোহার-নবাবগঞ্জের মানুষ শহিদ জিয়ার আদর্শে এতই উজ্জীবিত যে এরা যদি একবার ব্যালট পায় তাহলে টু-থার্ড ভোট পেয়ে এই আসন থেকে বিএনপি প্রার্থী জয়লাভ করবে।

নিউজ৩৯: দোহারের রাজনীতিতে ব্যক্তি নাজমুল হুদা একটা ফ্যাক্ট। বিগত উপজেলা নির্বাচনে তার ভাই কামরুল হুদা ব্যক্তি ইমেজের উপর ভর করেই নির্বাচিত হয়েছিলেন। একটা গুজব আছে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা মামলা-হামলার জন্য দল থেকে দূরে আছেন। তিনি কিছুদিন আগে আওয়ামী লীগের একটি জনসভায় বলে গেছেন তিনি দোহার থেকে নির্বাচন করবেন না, গুলশান থেকে করবেন। যদি দোহার থেকে তিনিও নির্বাচন করেন, আপনিও বিএনপি থেকে নির্বাচন করেন তাহলে ব্যাঃ হুদার ব্যাক্তির ইমেজে বিএনপির ভোট ভাগ হওয়ার কোন সম্ভাবনা আছে কি’না?

খন্দকার আবু আশফাকঃ বিএনপির ভোট ভাগ হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই নগন্য। আর ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা ব্যক্তি নাজমুল হুদা হয়েছেন বিএনপির দ্বারাই। বিএনপির নেতা কর্মীদের দ্বারাই। তাই ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার ব্যক্তি প্রভাব নির্বাচনে খুব একটা পড়বে না।

নিউজ৩৯: ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের কাকে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ মনে করেন?

খন্দকার আবু আশফাকঃ মানুষ যদি ভোট দিতে পারে তাহলে আমি কাউকেই শক্ত প্রতিপক্ষ মনে করি না। সেটা যদি আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাও হন। নির্বাচন হলে জনগণ ভোট দিতে পারলে, আমি আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকেও পরাজিত করতে সক্ষম ইনশাল্লাহ।

নিউজ৩৯: ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত হাওয়া ভবনের ঘনিষ্ট যে ৫২ থেকে ৫৫ জনের নাম শোনা যায়, তার মাঝে আপনার নামও শোনা যায়। বলা হয় আপনি তারেক জিয়ার ঘনিষ্ট জন; বিএনপি’র পররাষ্ট্র বিষয়ক লবী’র সাথে আপনি যুক্ত? আসলে তার সাথে আপনার সম্পর্ক কেমন?

খন্দকার আবু আশফাকঃ আমার মনোনয়নের জন্য তো বাড়তি কোন সুবিধার দরকার নেই। আমি এলাকার তৃনমূলের সাথে মিশে আছি। এটাই আমার মনোনয়ন পাওয়ার জন্য যথেষ্ঠ। পরপর ২ বার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি আওয়ামীলীগের আমলে; আমার জনপ্রিয়তা পরিমাপে তাই ই কি যথেষ্ট নয়?  আর তারেক জিয়ার সাথে আমার সম্পর্ক, দলের রাজনীতিতে আমার অবদান সবই তিনি জানেন, নিয়মিত যোগাযোগ হয়, কথা হয়।

নিউজ৩৯: আপনি মনোনয়ন পেলে, জনগণ আপনাকে কেন ভোট দিবে?

খন্দকার আবু আশফাকঃ বিগত যে কারনে আমাকে বারবার নির্বাচিত করে আসছে। কারণ জনগন জানে আমার দ্বারা কোন দুর্নীতি হতে পারে না। আমার সততা, আমার নিষ্ঠা, জনগনের প্রতি আমার দায়বদ্ধতা এগুলোই আমাকে জনগনের ভোটে নির্বাচিত হতে সাহায্য করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আমি প্রতিকূলতার মাঝেও জনগণের সাথে ছিলাম, আছি। আমি সকল জনগণের প্রতিনিধি।

নিউজ৩৯: আগাম নির্বাচনের একটা কথা শোনা যায়, যদি আগাম নির্বাচন হয় তাহলে তার জন্য আপনি কতটুকু প্রস্তুত আছেন?

খন্দকার আবু আশফাকঃ নির্বাচন যদি আগামী কালও হয়, তার জন্যও আমি প্রস্তুত আছি। তবে এটা নিশ্চিত করতে হবে জনগন যেন ভোট দিতে পারে।

নিউজ৩৯: আপনি কি মনে করেন, জনগন ভোটাধিকার বিষয়ে?

খন্দকার আবু আশফাকঃ জনগনকে যদি ভোট দানের পরিবেশ তৈরি করে দেয়া হয় তাহলে জনগন ভোট দিতে পারবে। আওয়ামী লীগের এখন আর সেই ক্ষমতা নাই যে ২য় বারের মতো ভোট ডাকাতি করে নির্বাচন করবে বা এরকম নির্বাচন হওয়ার কথা হলেই বিএনপি নির্বাচনে যাবে। বর্তমান আওয়ামী সরকার একটি ভোটবিহীন অবৈধ সরকার।

নিউজ৩৯: সকল কিছু মেনেই বিএনপি আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচনে গেল, তখন?

খন্দকার আবু আশফাকঃ আমি তো বিএনপিরই একটা ক্ষুদ্র অংশ। দল নির্বাচনে গেলে আমিও যাব। আর আমি আগেও বলেছি যেকোন সময়ের নির্বাচনের জন্যই আমি প্রস্তুত আছি।

নিউজ৩৯: আপনার নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে যদি কিছু বলেন?

খন্দকার আবু আশফাকঃ দোহার-নবাবগঞ্জে ডিজিটাল টেলিফোনের যে প্রচলন সেটা কিন্তু আমি এনেছি। এখন দোহার-নবাবগঞ্জের কলিং কোড যে ৭৭ ব্যবহার করা হয় সেটা কিন্তু আমার হাত ধরেই এসেছে। আর দোহারের সবচেয়ে বড় চাহিদা যেটা সেটা হচ্ছে গ্যাস। ঢাকার অদূরে সাভার কালিয়াকোরে যে বড় বড় ইন্ডাস্ট্রিজ গড়ে উঠেছে তার অন্যতম কারন হচ্ছে গ্যাস। দোহার-নবাবগঞ্জে গ্যাসের সুবিধা নেই বলেই, এতো বড় বড় ইন্ডাস্ট্রিয়ালিজের বাড়ি দোহার-নবাবগঞ্জে হলেও গ্যাসের কোন সুবিধা না থাকার কারনে কোন শিল্পকারখানা গড়ে উঠে নি। আমি দোহার-নবাবগঞ্জে গ্যাস আনার জন্য কাজ করে যাব।

নিউজ৩৯: দোহার-নবাবগঞ্জের তরুণদের প্রতি আপনার কি প্রতিশ্রুতি থাকবে?

খন্দকার আবু আশফাকঃ দোহার-নবাবগঞ্জে, আমি তরুন-তরুনী ও যুবক-যুবতীদের জন্য কয়েকটা ট্রেনিং ইন্সটিটিউট তৈরি করবো যাতে তারা এখানে প্রশিক্ষন নিয়ে নিজেরা উপার্জন করতে পারে। আমি শিল্প কলকারখানা ও আত্ম-কর্মসংস্থানে নজর দিবো।

নিউজ৩৯: দোহার-নবাবগঞ্জে প্রায় ১লক্ষ সংখ্যালঘু তথা হিন্দু ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ভোট আছে, এই ভোট ব্যাংকের ব্যাপারে আপনার মত কি?

খন্দকার আবু আশফাকঃ আমি শুধু আপনাকে একটা উদাহরন দেই, আমাদের কলাকোপা ইউনিয়নে গত দুই বার নির্বাচনে সাড়ে ৯ হাজার ভোট কাস্ট হয়েছে, এর মাঝে দুইবারই আমি সাড়ে আট হাজার ভোট পেয়েছি, এখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের ভোট আছে মিনিমাম ২০%।  হিন্দু হলেই যে কেউ বিএনপি বা আমাকে ভোট দিবে না এটা আমি বিশ্বাস করি না।  ৫০% খ্রিস্টানও আমাকে ভোট দেয়, এমনকি ২০% আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরাও আমাকে ভোট দেয়।আমার সাথে প্রত্যকের সুসম্পর্ক বিদ্যমান, যে কোন কাজে সহজেই আমার কাছে আসতে পারে, আমাকে পাশে পায়। আমাকে তারা তাদের কাছের মানুষ ভাবে, ভাবে তাদের স্বজন।

নিউজ৩৯: দীর্ঘদিন কাশিয়াখালী বাঁধ নিয়ে আন্দোলন হচ্ছে, পদ্মা বাঁধের কাজ চলছে। আপনি নির্বাচিত হলে কাশিয়াখালি বাঁধের ব্যাপারে কি উদ্যোগ নিবেন?

খন্দকার আবু আশফাকঃ কাশিয়াখালি বাঁধ এই অঞ্চলের জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ বাঁধ। আমি এই বাঁধের আরও সংস্কার করে আরও শক্তিশালী করে তুলবো । একই সাথে কাশিয়াখালি বাঁধের ব্যাপারে আমি যে উদ্যোগটা প্রথমে নিব সেটা হলো আমি কাশিয়াখালি বাঁধে আরো কয়েকটা স্লুইচ গেটের উদ্যোগ নিবে। যাতে পলির অভাবে মৃতপ্রায় নবাবগঞ্জ অঞ্চলের কৃষি যেন নতুন করে প্রাণ ফিরে প্রায় এবং একই সাথে মৃত প্রায় ইছামতী নদীকে আমি আবার প্রান সঞ্চারের চেষ্টা করবো। যেন পদ্মার পানির একটা পরিমিত পরিমান ইছামতীতে ঢুকে।

নিউজ৩৯: দোহার-নবাবগঞ্জের অন্যতম প্রধান একটি সমস্যা হচ্ছে মাদক সমস্যা। আপনি যখন উপজেলা নির্বাচনে করেছেন তখন মাদক নির্মূলের প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। সেই প্রতিশ্রুতি কতটুকু পুরন করতে পেরেছেন?

খন্দকার আবু আশফাকঃ আসলে সেই প্রতিশ্রুতি সব পুরণ করতে পেরেছি এটা ভূল হবে। কারণ দোহার-নবাবগঞ্জে মাদকটি মূলত নিয়ন্ত্রন করে এই অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারের নেতা কর্মীরা এবং তাদের সহযোগী পেটোয়া পুলিশ বাহিনী। তাই চাইলেও আমি এই সেক্টরে যতটুকু কাজ করতে চেয়েছি সেটা করতে পারি নি।

নিউজ৩৯: দোহার-নবাবগঞ্জকে কি আপনি সমান চোখে দেখবেন?

খন্দকার আবু আশফাকঃ যেহেতু দোহার-নবাবগঞ্জ আমার নির্বাচনী এলাকা তাই এখানে আলাদা করে দেখার কোন সুযোগই নেই। এবং সকল জনগনের যেমন আমার উপর দাবি থাকবে, তেমনি সকল জনগনের উপর আমারও দাবি থাকবে।

নিউজ৩৯: যদি নির্বাচনী আসন ভাগ হয়, দোহার-নবাবগঞ্জ আলাদা হয়ে যায়, তখন দোহারের জন্য আপনি কাকে যোগ্য প্রার্থী বলে মনে করেন? যেহেতু ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক, আপনার একটা প্রভাব তো সেখানে থাকবে।

খন্দকার আবু আশফাকঃ এখন যারা দোহারে রাজনীতি করেন, মাঠে তাদের অংশ গ্রহন নেই বললেই চলে। যদি আলাদা হয় তখন দেখতে হবে এদের মধ্যে কারা কারা যোগ্য, কাকে দিয়ে এই সিটটা উদ্ধার করা যাবে। সেই অনুসারে তখন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

নিউজ৩৯: আপনি ছাত্ররাজনীতি করে আজকে এই অবস্থায় এসেছেন। নির্বাচন করে ফজলুল হক হলের ভিপি নির্বাচিত হয়েছেন, কিন্তু আজকে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সারা দেশেই ছাত্র সংসদ নির্বাচন হচ্ছে না। আপনার নির্বাচনী আসনে ডিএন কলেজ বা জয়পাড়া কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচন নেই। আপনি ছাত্রসংসদ নির্বাচন শুরু করতে কতটুকু অবদান রাখতে পারবেন বা এর কোন সুযোগ আপনার আছে কিনা?

খন্দকার আবু আশফাকঃ ১২ বছর ধরেই সারা দেশের কোথাও ছাত্রসংসদ নির্বাচন হচ্ছে না। ১৯৯১ সালের পর ডাকসু নির্বাচনও হচ্ছে না। আমরা ছিলাম ডাকসু নির্বাচন করা শেষ ছাত্রনেতা। আমরা যদি নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারি তাহলে আমরা অতি দ্রুতই এই ছাত্র সংসদ নির্বাচন গুলো অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করবো। কারন ছাত্ররাজনীতি থেকে নতুন কোন নেতৃত্ব উঠে আসছে না। আর নতুন নতুন নেতা তৈরি হচ্ছে না বলেই আজ ছাত্ররাজনীতির এই করুন দশা।

নিউজ৩৯: ১৯৯০ এ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের শীর্ষ ১০ জন নেতার যদি তালিকা করা হয় তাহলে আপনি তাদের মধ্যে একজন, আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি করেছেন, এখন দোহার নবাবগঞ্জের অনেক ছাত্র ঢাকা-জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে, তারা যদি রাজনীতিতে যুক্ত না হয় তাহলে দেশ তো ভবিষ্যৎ এ নেতৃত্ব সংকটে পড়বে। তাদের রাজনীতিতে কেন আসা উচিৎ, তারা কি স্বপ্ন নিয়ে রাজনীতিতে আসবে, বলে মনে করেন?

খন্দকার আবু আশফাকঃ আসলে যারা রাজনীতি করতে চায়, দেশকে ভালবাসে দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে চায় তাদের অবশ্যই রাজনীতির সাথে যুক্ত  হওয়া উচিৎ, কারন রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া ছাড়া জনমানুষের কাছাকাছি পৌছানো সম্ভব না। সেই সাথে এই প্রতিজ্ঞাও থাকতে হবে যে আমি দেশের জন্য কিছু করতে চাই, দেশের জনগনের জন্য কিছু করতে চাই। তাই তাদের একটা ব্যানারের নিচে অবস্থান নিয়ে ছাত্ররাজনীতিতে যুক্ত হওয়া উচিৎ, কারন একা তো বেশি পথ পাড়ি দেয়া সম্ভব না। কেউ যদি শহীদ জিয়ার আদর্শে উজ্জীবিত হয় সে ছাত্রদল করবে, কেউ শেখ মুজিবের আদর্শে আস্থা পেলে ছাত্রলীগ করবে। কিন্তু ছাত্ররাজনীতিতে সংযুক্ত হতেই হবে যদি দেশের জনমানুষের প্রতিনিধিত্ব করতে চায়।

নিউজ৩৯: বিএনপির একক প্রার্থী হিসাবে এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে কি বলবেন?

খন্দকার আবু আশফাকঃ আসলে ম্যাডাম তো আমাকে বিএনপির প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা দিয়েই দিয়েছে। ম্যাডাম যেহেতু বলে দিয়েছেন আমার আর নতুন করে কিছু বলার নাই। তারপরও দোহার-নবাবগঞ্জের সকল মানুষের সাথে আমি চলাফেরা করি, তাদের আমার উপর বিশ্বাস আছে, আমারও তাদের উপর বিশ্বাস আছে। ইনশায়াল্লাহ তারাই আমাকে ভোট দিয়ে এই সংসদীয় আসনে আমাকে এমপি নির্বাচিত করবে।

নিউজ৩৯: দোহার-নবাবগঞ্জে আপনার রাজনৈতিক উত্তরসূরি কে হবে বলে মনে করেন?

খন্দকার আবু আশফাকঃ সেটা সময় বলে দিবে। কে নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তুলবে।

নিউজ৩৯: নিউজ৩৯’র উদ্দেশ্যে কিছু বলতে চান?

খন্দকার আবু আশফাকঃ নিউজ৩৯ ধীরে ধীরে একটা বড় প্রতিষ্ঠানে পরিনত হয়েছে। আজ সংবাদপত্র জগতে তারা একটি শক্তিশালী অবস্থান করে নিয়েছে। আমি আশা করি, নিউজ৩৯ দোহার-নবাবগঞ্জের জনমানুষের জন্য কাজ করে যাবে।

নিউজ৩৯: আপনাকে ধন্যবাদ, আমাদেরকে আপনার মূল্যবান সময় দেয়ার জন্য।

খন্দকার আবু আশফাকঃ আপনাদেরও ধন্যবাদ। আমার কথা জনগণের কাছে পৌছে দেয়ায় নিউজ৩৯ এর সকল সাংবাদিক, কর্মকর্তা ও শুভাকাংখীদেরকে ধন্যবাদ, একই সাথে আমি ধন্যবাদ জানাইতে চাই দোহার-নবাবগঞ্জের সকল মানুষকে-জনসাধারণকে। আসসালামু আলাইকুম।

আপনার মতামত দিন