কুসুমহাটি ও রায়পাড়ায় আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টির সমঝোতার লক্ষণ

1540

যতই ঘনিয়ে আসছে স্থানীয় সরকার নির্বাচন ততই উত্তপ্ত হচ্ছে দোহারের নির্বাচনী মাঠ। আসন্ন ইউনিয়ন কাউন্সিল নির্বাচন দলীয় প্রতীকে সরকার নির্বাচনে উদ্যোগ নেয়ায় হিসাব নিকাশ পাল্টে গেছে এই অঞ্চলের ইউনিয়ন ভিত্তিক রাজনীতির। ২০১৪ এর নির্বাচনে বিজয়ী জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যর কারণে বদলে গেছে এই অঞ্চলের ইউনিয়ন ভিত্তিক রাজনীতির মঞ্চও। খাতা কলমে শুধু অস্ত্বিত্ব থাকা জাতীয় পার্টিও অংশ নিতে চায় এই নির্বাচনে। শুধু তাই নয় তাদেরকে দুইটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসন ছেড়ে দেওয়ার দাবিও নাকি জানিয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কাছে।  কুসুমহাটি ও রায়পাড়া ইউনিয়ন নির্বাচনে জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সমর্থন পাচ্ছে এমন জোড় সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা। ফলে মার্চে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই নির্বাচনে কুসুমহাটি ও রায়পাড়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রার্থীরা হতাশ হতেই পারে।

অনেকটা বিএনপি অধ্যুষিত দোহারের কুসুমহাটি ও রায়পাড়া ইউনিয়ন। কুসুমহাটি ও রায়পাড়া ইউনিয়নে স্বাধীনতা উত্তর কখনোই আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয় পায় নি। উল্টো দোহার পৌরসভার সাথে সীমানা সংক্রান্ত সমস্যার কারনে বিগত ১০ বছর ধরে রায়পাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসাবে বসে আছেন দোহার উপজেলা বিএনপি নেতা শওকত আলী হীরন। ফলে এই ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই আওয়ামী লীগের একটু নজর কম। এর ফায়দা নিতে চাচ্ছে বর্তমান মহাজোটের অন্যতম শরীক জাতীয় পার্টি। ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছে দোহার উপজেলা ও রায়পাড়া ইউনিয়ন জাতীয় পার্টি।

অন্য খবর  আবু সায়েদকে আহ্বায়ক করে কুসুমহাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটি ঘোষণা

পরপর ৪ বার আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী আব্দুর রশিদ (মোচন) নির্বাচনে অংশ নিয়েও হতে পারেন নি রায়পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। উল্টো তার বিরুদ্ধে নির্বাচন করে অনেক তরুন বিএনপি প্রার্থীও নির্বাচিত হয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। ইতোমধ্যে স্থানীয় জাতীয় পার্টির নেতা কর্মীরা খোঁজ শুরু করেছে তাদের প্রার্থীর। স্থানীয় রাজনীতিতে কোন ভিত্তি না থাকা জাতীয় পার্টি তাই ঝুঁকছে বিএনপি আওয়ামী লীগ এর দলছুট নেতাদের দিকে। আওয়ামী লীগ থেকে  মনোনয়ন প্রত্যাশী অনেক প্রার্থী হতাশ হতে পারে। ইতোমধ্যে রায়পাড়া থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী বেশ কিছু প্রার্থী দলীয় সমর্থনের জন্য তোড়জোড় শুরু করলেও জোট মহাজোটের রাজনীতির মারপ্যাঁচে তাদের শিকে ছিড়বে নাকি তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা। দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করার জন্য রায়পাড়া ইউনিয়নের মনোনয়ন জন্য ব্যানার-পোস্টারে ছেয়ে গেছে রায়পাড়া ইউনিয়নের অলি গলি। নিজেদের মনোনয়নের ব্যাপারে তারা প্রায় নিশ্চিৎ।

অপর দিকে স্বাধীনতার পর কখনোই আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয় না পাওয়া কুসুমহাটি ইউনিয়নে গত ২ বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আব্দুল ওয়াহাব। ভদ্র, সজ্জন ও ধর্ম ভীরু হিসাবে কুসুমহাটির মহিলা ভোটারদের উপর আব্দুল ওয়াহাব দোহারির রয়েছে ব্যাপক প্রভাব। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন কোন সময় দলগত ভাবে না হওয়ায় সবাই নিজের মতো করে নির্বাচন করেন প্রতিবার। গতবার বিএনপির দুই জন প্রার্থী করেছিলেন ইউনিয়ন কাউন্সিল চেয়ারম্যান। এর মাঝে কার্ত্তিকপুরের পান্নু চেয়ারম্যান ও পুস্পখালির জয়নাল চেয়ারম্যান। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কাদের ও ইমামনগরের আমজাদ হোসেন আজাদও নির্বাচনে অংশ গ্রহন করলেও এরা তিন জনের কেউ সেরা তিনে আসতে পারেন নি। ফলে এবার মহাজোটের অন্যতম শরীক জাতীয় পার্টিকে এই ইউনিয়ন পরিষদটা ছেড়ে দিতে চাচ্ছে আওয়ামী লীগ; সেক্ষেত্রে জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থী হিসাবে জাতীয় ছাত্র সমাজের সহ সভাপতি মশিউর রহমান মহাজোটের হয়ে নির্বাচন করছেন বলে আলোচনা হচ্ছে। ফলে সেই বাস্তবতা মেনেও নিয়েছেন অনেক আওয়ামী লীগ নেতা। ফলে বিএনপি অধুষ্যিত এই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে মশিউর রহমানকে পড়তে হবে শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখে। রাজনীতির মাঠে তরুণ হিসেবে এই ছাত্রনেতা নির্বাচনে কতটুকু সাফল্য  লাভ করবেন তা সময়ই বলে দেবে।

আপনার মতামত দিন